স্বশাসনে আরও স্বচ্ছতা জরুরি, মত শৌভিকের
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বশাসনের জায়গাটা আরও স্পষ্ট হওয়া উচিত বলে বিদায়বেলায় মত দিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শৌভিক ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতাকেই মান্যতা দেওয়া উচিত। আর বিদায়ী উপাচার্যের এই মন্তব্য এ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্বশাসন খর্ব হওয়া নিয়ে দীর্ঘকালের বিতর্ককে নতুন করে উস্কে দিল।
প্রকাশ্যে না-বললেও তাঁর যাদবপুর ছাড়ার অন্যতম কারণ যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, সেটা ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন শৌভিকবাবু। বুধবার রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন অবশ্য বলেন, “উনি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। তাই সেটা আটকানোর জায়গা নেই। তবে আমার মনে হয়, শিক্ষাক্ষেত্র থেকে যাঁরা চলে যাচ্ছেন, তাঁরা কাজের চাপটা নিতে পারছেন না। সব কাজেই চাপ থাকে। এঁদেরও সেটা নিজের মতো করে সামলাতে হবে।”
কাজের চাপে যাদবপুর ছাড়ছেন, এমন কথা মানতে নারাজ শৌভিকবাবু। তিনি বলেন, “আইআইটি খড়্গপুরে ডিন অব স্টুডেন্টস-এর দায়িত্ব সামলেছি তিন বছর এবং অনেকেই বলেন, ভাল ভাবে সামলেছি। কাজের চাপে তো অব্যাহতি নিচ্ছি না। এমন কিছু চাপ ছিল যা আমার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।”
শৌভিকবাবুর এ দিনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, “রাজ্য সরকার অবাঞ্ছিত ভাবে স্বশাসনে হস্তক্ষেপ করতে চায় না এবং রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্বশাসনের অভাব নেই। রাজ্যের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, আধিকারিকরা মিলিত ভাবে এই অভিযোগ জানালে ভেবে দেখব।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এ দিন জানিয়েছেন, তাঁর উপরে কখনই কোনও রাজনৈতিক চাপ আসেনি। ২০০৮-এ বাম আমলে উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত সুরঞ্জনবাবু এ বছর ফের উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন চার বছরের জন্য। তিনি বলেন, “শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে সিন্ডিকেটে আলোচনা করা হয়। কোনও রকম হস্তক্ষেপের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসন ক্ষুণ্ণ হওয়ার নজির নেই।”
যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য প্রদীপনারায়ণ ঘোষের অভিজ্ঞতা অবশ্য অন্য রকম। বাম আমলে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। তৃণমূল সরকার আসার পরেও বছরখানেক উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বরাবরই থাকে। আমাকেও তার সম্মুখীন হতে হয়েছে।” বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুব্রত পাল বলেন, “বাম আমলই হোক বা তৃণমূল সরকার হস্তক্ষেপ চলছেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও অনেক সময় এতে সামিল হয়ে পড়েন।”
শৌভিকবাবুর ক্ষেত্রে বাইরের চাপ ছিল কি? বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের খবর, স্নাতকোত্তরে ভর্তিতে অভিন্ন প্রবেশিকা চালু, জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকার বাইরে থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ছাত্রভর্তি ইত্যাদি সিদ্ধান্ত মানতে রাজি হয়নি যাদবপুর। এর ফলে সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে মতবিরোধ হয় শৌভিক ভট্টাচার্যের।
এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ডিন বাছাই নিয়েও তিনি তেমন খুশি হতে পারেননি। তার উপরে সম্প্রতি র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের শাস্তি মকুব করা নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) কিছু সদস্যের সঙ্গে মতবিরোধ হয় উপাচার্যের। ইসি-র ওই সদস্যদের মধ্যে আছেন রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান অভিজিৎ চক্রবর্তীও। যিনি আগামী সোমবার থেকে ছ’মাসের জন্য অস্থায়ী ভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন। বুধবার তিনি বিকাশ ভবনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।

 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.