মুসলিম সম্পত্তি। দাদুর জমি। বর্তমানে রেকর্ড রয়েছে বাবাদের চার ভাইয়ের নামে। রেজিস্ট্রি করে তাঁরা জমিটির কোনও ভাগ-বাটোয়ারা করেননি। নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে চার ভাগে ভাগ করে নিয়েছিলেন। তিন ভাই নিজের নিজের দখলীকৃত অংশ বিক্রিও করে দেন। যদিও রেকর্ড অনুযায়ী এখনও ৪ জনের নামই বর্তমান। এবং বিক্রির সময়ে কোনও ভাই কোনও প্রকার ‘সম্মতিপত্র’ বা ‘দাবি না-থাকা’ সংক্রান্ত সই নেননি। বর্তমানে চার ভাইয়ের কেউই বেঁচে নেই।
একমাত্র আমার বাবার দখল করা অংশটিই এখনও বিক্রি করা হয়নি। এখন ওই জমি বেচতে চাই আমরা।
১) জমিটি বিক্রি করতে গেলে কাকাদের সব ওয়ারিশনের সই দরকার হবে কি?
২) তাঁদের কেউ কি বিক্রির পথে বাধা হতে পারে?
৩) ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা দেখা দিতে পারে?
৪) যদি সকলের সই না- পাওয়া যায়, তা হলে কী ভাবে সেটি বিক্রি করব?
মহম্মদ সৈফুদ্দিন
‘মুসলিম সম্পত্তি’ কথাটি লিখেই আপনি প্রশ্নটিকে জটিল করে দিলেন। মনে রাখবেন আইনি প্রশ্নগুলির ক্ষেত্রে প্রতিটি শব্দ আলাদা আলাদা অর্থ তৈরি করে দেয়। কাজেই প্রশ্ন করার আগে প্রতিটি শব্দ সম্পর্কে সতর্ক হবেন। আপনি হয়তো আলগোছে অসতর্ক ভাবে একটা শব্দ ব্যবহার করলেন, আমার উত্তর কিন্তু ওই শব্দের উপরে নির্ভর করে হয়তো সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী হয়ে যাবে।
বোঝা যাচ্ছে যে, রেকর্ড অনুযায়ী জমিটি আপনার দাদুর নামেই ছিল। তার পর আপনার বাবা ও কাকাদের নামে রেকর্ড হয়েছে। অর্থাৎ বাবা ও তিন কাকার নামে, অর্থাৎ মোট চার জনের নামে ওই জমি নথিবদ্ধ হয়েছে।
যাই হোক, উত্তরে বলব আপনার বাবা-কাকারা স্রেফ দখলদারির ভিত্তিতে বা মৌখিক ভাগাভাগির ভিত্তিতে চার জন, চারটে অংশে বাস করছিলেন। নিজেদের মধ্যে কোনও রকম ‘পার্টিশন’ বা আইনগত ভাগাভাগি হয়নি। আমার মতে, অন্তত আপনাদের কথা, মানে পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভেবে তাঁদের কিন্তু আইনগত ভাবে পার্টিশন করা উচিত ছিল। তা হলে আপনাদের আজকে এই সমস্যায় পড়তে হত না।
আবার আপনার কাকারা নিজেদের দখলীকৃত অংশ অন্য ভাইদের স্বাক্ষর না নিয়েই বিক্রি করে দিয়েছেন। অর্থাৎ আইনি পরিভাষায় ‘আনডিভাইডেড, আনডিমার্কেটেড’ অংশ স্রেফ দখলদারির ভিত্তিতে। যে-যেখানে ছিলেন সেই অংশগুলি নিজেরাই বিক্রি করে দিয়েছেন! কী করে পারলেন? আর যাঁরা কিনেছেন, তাঁরাই বা কিনলেন কী করে?
মনে রাখতে হবে, আইনত ওই প্রতিটি খণ্ড জমি (মোট চার ভাইয়ের চার খণ্ড)-র মালিক কিন্তু ছিলেন চার ভাইয়ের প্রত্যেকে। অর্থাৎ প্রত্যেকটি খণ্ডের মধ্যে অন্য তিন জনের অংশও লুকিয়ে আছে। যার মানে দাঁড়ায়, প্রত্যেক ভাই প্রতিটি খণ্ডের ১/৪ করে অংশের মালিক। বিক্রি করার সময়েও প্রত্যেকেরই বিক্রেতার জায়গায় স্বাক্ষর করা উচিত ছিল। অথবা যিনি বিক্রি করতে চলেছেন, তাঁর উচিত ছিল অন্য তিন জনের কাছ থেকে বিক্রির অধিকার সম্বলিত ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ নেওয়া। অথবা অন্য তিন জন দানপত্র করে তাঁদের অংশ দান করে দিলে, চতুর্থ জন সম্পূর্ণ অংশের মালিকানা পেয়ে যেতেন। এবং তার পর বিক্রি করলে আর কোনও অসুবিধাই হত না।
এই পরিস্থিতিতে—
১) একই ভাবে আপনার বাবার দখলীকৃত ওই অংশেও আপনার অন্য তিন কাকা বা তাঁর ওয়ারিশনদের সমান অধিকার আছে। অর্থাৎ আপনি জমি বিক্রি করতে চাইলে কাকাদের উত্তরাধিকারীদের সই প্রয়োজন।
২) হ্যাঁ, অবশ্যই বাধা হতে পারেন তাঁরা। তবে সবচেয়ে বড় বাধা হল ‘আইন’। ‘আইন’ই তাঁদের স্বাক্ষর বা সম্মতি ছাড়া জমি বিক্রির পথে আপনার সামনে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
৩) ভবিষ্যতেও অবশ্যই সমস্যা হতে পারে। প্রথম কথা, জমিটি আইনি উপায়ে ‘বিক্রি’ হবে না। মানে অন্যদের স্বাক্ষর ছাড়া আপনি আইনি উপায়ে বিক্রি করতে পারবেন না। আর যদি পারেনও, তাহলেও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আপনি কিন্তু রেখে যাচ্ছেন একরাশ সমস্যা।
৪) কাকাদের উত্তরাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলুন, জমি বিক্রিতে তাঁদের স্বাক্ষর যে প্রয়োজন, তা বুঝিয়ে বলুন। সেটা আপনার লাগবেই। না-হলে জমি বিক্রি করতে পারবেন না। |
পরামর্শদাতা জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় |
২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে পেনশন, সুদ ইত্যাদি মিলিয়ে আমার মোট আয় ছিল ৪,৬৪,৮৪০ টাকা। এখন আমার প্রশ্ন হল ১) এ বার বাজেটে ১ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে যে- ২,০০০ টাকা ট্যাক্স ক্রেডিট দেওয়া হবে, তা কি আমি পাব? পেলে, সেটা কত ধারা অনুযায়ী? ২) ৮৯(এ) ধারা মাফিক প্রাপ্য রিলিফ আইটিআর-এর কোন স্তম্ভে দেখাব?
অরুণ সেনগুপ্ত, চুঁচুঁড়া |