তৃণমূলের দ্বন্দ্বে পুরপ্রধান নিয়ে অশান্ত বর্ধমানও
গুসকরার পরে বর্ধমান পুরসভাতেও রাজ্য নেতৃত্বের পছন্দের পুরপ্রধানকে শপথ নেওয়াতে গিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ এড়াতে পারল না তৃণমূল। যদিও শেষ পর্যন্ত শপথগ্রহণ বানচাল হয়নি। দীর্ঘদিনের বামদুর্গ বর্ধমান পুরসভা ৩৫-০ ফলে জিতে নেওয়ার পরে কে পুরপ্রধান হবেন, তৃণমূলের অন্দরে সেটাই ছিল বড় জল্পনার বিষয়। বহু কর্মীই ভেবেছিলেন, টানা আট বার জিতে আসা প্রবীণ নেতা সমীর রায়ের কপালে শিকে ছিঁড়তে পারে। আবার গত বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের নিরুপম সেনের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে-হতেও ফস্কেছিলেন যিনি, সেই শিশু চিকিৎসক স্বরূপ দত্তের নামও শোনা যাচ্ছিল। বুধবার দলের রাজ্য নেতৃত্বের পাঠানো খাম খুলে দেখা যায়, স্বরূপ দত্তের নাম রয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হতেই সমীর রায়ের অনুগামীরা, তার মধ্যে একটা বড় অংশ মহিলা, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পুরসভায় ঢোকার চেষ্টা করতে থাকেন। তাঁদের দাবি, সমীরবাবুকে চেয়ারম্যান না করলে তাঁরা উপস্থিত কাউন্সিলার ও তিন মন্ত্রীকে বেরোতে দেবেন না। পুলিশের সঙ্গে ধস্তধস্তি বেধে যায়। সন্ধ্যায় স্বরূপবাবুর বাড়ির সামনেও পুলিশ পিকেট বসেছে।
বর্ধমানের তিন মন্ত্রী মলয় ঘটক, রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন দেবনাথের পুরসভার উল্টো দিকে স্পন্দন মাঠে ৩৫ জন কাউন্সিলরের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। দুপুর ১টার আগে থেকেই মঞ্চে ৩৩ জন থাকলেও সমীর রায় ও রত্না রায় প্রথমে আসেননি। দুপুর ২টো নাগাদ সমীরবাবু রত্নাদেবীকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছতেই তাঁর অনুগামীরা চিৎকার শুরু করেন। পুলিশের কর্ডন ভেঙ্গে অনেকে ছুটে যান মঞ্চের দিকে। অনুষ্ঠানটি শেষ করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। সমীরবাবু মাইকে কর্মীদের শান্ত হতে বললেও কাজ হয়নি। পরিস্থিতি দেখে বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসক স্বপন কুণ্ডু অনুষ্ঠান শুরু করে দেন। তা মিটতেই পুলিশি প্রহরায় তিন মন্ত্রী ও সব কাউন্সিলরদের পুরভবনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তিনতলার একটি ঘরে পুরপ্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। খানিক বাদেই পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। তার জেরে যানজটে স্তব্ধ হয়ে যায় জি টি রোড।
কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে স্বরূপ দত্ত পুরপ্রধান হয়েছেন।” সমীর-পন্থীদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেটা কারও-কারও দাবি হতে পারে। আমরা দলের নির্দেশ মেনেছি।” সমীর রায়ের প্রতিক্রিয়া, “যা দেখার সবই তো আপনারা দেখসেন। আমি আর কী বলবো!” অন্য কোনও নেতা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি।
মঙ্গলবার দলীয় কোন্দলের জেরে গুসকরায় রাজ্য নেতৃত্বের বাছাই করা পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান শপথ নিতে পারেননি। অশান্তির জেরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বানচাল হয়ে
যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, নির্বাচিত ১১ জন কাউন্সিলরকে কলকাতায় তৃণমূল ভবনে ডেকে দুই পদাধিকারীর নাম জানিয়ে দেওয়া হবে।
বর্ধমানে দলের অন্যতম পর্যবেক্ষক অলোক দাস বলেন, “২৮ অক্টোবর মুকুল রায় ওঁদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন। যে ভাবে দলের নির্দেশ অমান্য করে কয়েক জন কাউন্সিলর শপথগ্রহণ ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তা ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না। দলবিরোধী কাজ হয়েছে কি না তা পর্যালোচনা করে ওঁদের সতর্ক করেও দেওয়া হতে পারে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.