ডায়েরিয়ার এক গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনার পর নড়েচড়ে বসল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বালুরঘাট ব্লকের গোপালবাটি অঞ্চলের ঘটনা। শনিবার থেকে ওই অঞ্চলের গোপালবাটি, মুনইল হরিগ্রাম এলাকায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। বাসিন্দারা জানান, আক্রান্তেরা হাতুড়েকে দেখান বলেও অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সোমবার পর্যন্ত ৪০ আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২৭ জন বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি। বাকিরা গ্রামেই আছেন। এ দিন হাসপাতালে ভর্তি কয়েকজনকে ছুটিও দেওয়া হয়েছে। তবে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সোমবার হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে মালদহে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পথে বুনিয়াদপুরে মৃত্যু হয় এক যুবকের। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃতের নাম চৈতন্য মুর্মু (৩২)। ছুটিতে থাকা হাসপাতালের সুপার অসিত দেওয়ান তড়িঘড়ি বালুরঘাটে এসে কাজে যোগ দেন। মঙ্গলবার সকালে বালুরঘাট থেকে ৫ সদস্যের এক চিকিৎসক দলকে গোপালবাটিতে পাঠানো হয়। এলাকার পানীয় জলের নলকূপের জল শোধনের জন্য যান জনস্বাস্থ্য কারিগরির বাস্তুকারেরা। খবর পেয়ে ওই গ্রামে যান বালুরঘাট ব্লকের বিডিও শুভ্রজিত গুপ্ত এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর রায়। |
বালুরঘাট হাসপাতালে অমিত মোহান্তের তোলা ছবি। |
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কাজল মণ্ডল বলেন, “একটি মৃত্যুর খবর মিলেছে। বালুরঘাট হাসপাতালে ২৭ রোগী চিকিৎসাধীন। দূষিত জল ব্যবহারে রোগ ছড়ায়। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” বিডিও বলেন, “এলাকার নলকূপগুলি শোধন করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বালুরঘাট পুরসভা থেকে ট্যাঙ্কারে করে ওই এলাকায় পানীয় জলের সরবরাহ করা হচ্ছে।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর রায় বলেন, “দ্রুত রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
গোপালবাটির আদিবাসী পাড়ায় মূলত ডায়েরিয়ার প্রকোপ বেশি। ঘরে ঘরে অসুস্থ রোগী। গ্রামে অধিকাংশ নলকূপের তলার অংশ বাঁধানো নেই। এলাকার একটি পুকুরের জলেই চলে পশুকে স্নান করানো থেকে বাসন ধোয়া, কাপড় কাঁচা। অধিকাংশের বাড়িতে শৌচাগার নেই। হাতুড়ে গণেশ মাহাত বলেন, “ওষুধের যা দাম সেই টাকা নিই। সাধ্যমতো চিকিৎসা করি।” বিকালে স্বাস্থ্য দফতর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স করে আক্রান্ত ১০ জনকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। |