তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন করার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-এর পতাকা নিয়ে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ওই আন্দোলন শুরু হয়। প্রায় ৭ ঘন্টা পর বিকাল ৩টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, খবর পেয়ে হাসপাতালে যান দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি অরূপ রতন ঘোষ। তিনি আন্দোলনকারীদের হাত থেকে দলীয় পতাকা কেড়ে নেন। অরূপবাবু বলেন, “এই অস্থায়ী কর্মীরা কেউ আমাদের সংগঠনের সদস্য নন। তাই পতাকা নিয়ে নিয়েছি। এভাবে পরিষেবা বন্ধ করে আন্দোলন আমরা সমর্থন করি না।”
এদিন আন্দোলন শুরু করেন হাসপাতালে সাফাই ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ২২ জন অস্থায়ী কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, “দৈনিক ৬০-৭০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়। অথচ দিনে ১০ ঘন্টা ও রাতে ১৪ ঘন্টা কাজ করতে হয়। পুজোর আগে মজুরি বাড়ানোর কথা বললেও এখনও পর্যন্ত তা হয়নি। বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে।” কাজ বন্ধ থাকায় হাসাপাতাল চত্বর ও ওয়ার্ডের শৌচাগার গুলিতে ময়লা আর্বজনার স্তূপ জমে যায় বলে অভিযোগ। হাসপাতাল চত্বরেও ছিল আবর্জনা। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা।
এর পরে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সঞ্জীব মজুমদার ওই ঠিকাদার সংস্থার প্রতিনিধি সুব্রত বিশ্বাসের কাছে শোকজ নোটিশ পাঠান। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী সুব্রতবাবুও কর্মীদের কাছে জানতে চান কেন তাঁরা নোটিশ ছাড়া কেন কাজ বন্ধ করেছেন। পরে বিকাল ৩টা নাগাদ সুপারের কথায় ওই কর্মীরা অবশ্য কাজে যোগ দেন। ঠিকাদার সংস্থার প্রতিনিধি সুব্রত বিশ্বাস শুধু বলেন, “বিষয়টি দেখছি।”
আন্দোলনকারীদের পক্ষে অশোক বাল্মীকি, দিলীপ বসাকরা বলেন, “গত ৯ অক্টোবর আমরা মজুরি বাড়ানোর জন্য কাজ বন্ধ করেছিলাম। তখন আশ্বাস দিলেও এখনও পর্যন্ত কিছু হয়নি। তাই আমরা আজ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।” পতাকা কেড়ে নেওয়া প্রসঙ্গে তাঁরা জানান, আমরা প্রাক্তন ইনটাক নেতা অলোক চক্রবর্তীর সঙ্গে ছিলাম। উনি তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তাই আমরাও তৃণমূলের পতাকা নিয়ে আন্দোলন করছিলাম। এই প্রসঙ্গে অলোকবাবু বক্তব্য, “আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। ওঁরা তৃণমূলে সরকারিভাবে আসেননি। আর যা বলার সব সংগঠনের জেলা সভাপতি বলবেন।”
এদিন শিলিগুড়ি হাসপাতাল ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব মলয় কুমার দে। তিনি সকালে হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড ও এসএনসিইউ পরিদর্শন করেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের কয়েকটি ওয়ার্ডও ঘুরে দেখেন। |