মাঠেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় কোচের সঙ্গে
মোগার ফিটনেসের সঙ্গে প্রশ্ন উঠে গেল আচরণ নিয়েও
লাল-হলুদ সমর্থকদের কোল থেকে সটান মাটিতে! লাগল মোটে আঠাশ দিন!
চব্বিশ সেপ্টেম্বর অ্যাওয়ে ম্যাচে সেমেন পাদাংয়ের বিরুদ্ধে গোল করে যে মোগা ইস্টবেঙ্গলকে এএফসি কাপের সেমিফাইনালে তুলেছিলেন, মঙ্গলবারের ম্যাচের পর যুবভারতী ফেরত সত্তর হাজার ইস্টবেঙ্গল জনতার চোখে তিনিই ভিলেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফালোপা তাঁকে তুলে নেওয়ায় কোচকে অপমান তো করলেনই, উল্টে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে ঝামেলায় জড়ালেন সমর্থকদের সঙ্গে। পুলিশ এবং জনা চারেক ক্লাবকর্মী ছুটে এসে মোগাকে তাড়াতাড়ি গাড়িতে তুলে না দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারত বলে মনে করছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা। মোগা যদিও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ইস্টবেঙ্গল কোচ ফালোপাও ম্যাচের পর মোগা নিয়ে বিতর্ক বাড়াননি। বলে যান, “মোগার ব্যাপারটা বুঝি। ও পুরো সময় মাঠে থাকতে চাইছিল। তাই হয়তো সাময়িক ভাবে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। ফুটবলে এ রকম হয়ই।”
কিন্তু ঘটনা তা নয়। এ দিন কুয়েত এসসি-র বিরুদ্ধে ফালোপা অ্যাটাকে চিডির সামনে মোগাকে রাখলেও দু’জনকেই বলা হয়েছিল পালা করে নীচে নামতে। রোজারিওদের পাল্টা আক্রমণের সময় চিডি নিচে নামলেও মোগা নামছিলেন না। ফালোপা টেকনিক্যাল এরিয়া থেকেই বারবার মোগাকে ইশারায় নামতে বলছিলেন চিডি উপরে থাকলে। কিন্তু চলতি মরসুমে পাঁচ ম্যাচে তিন গোল করা দক্ষিণ সুদানের স্ট্রাইকার কোচের নির্দেশ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে যাওয়ায় বিরক্ত হন প্রবীণ ব্রাজিলীয়। উল্টে প্রথমার্ধে একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে মোগা ওপেন সিটার মিস করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করেন। শুধু তাই নয়, মোগার দুর্বল রিসিভিং, বল কন্ট্রোল, স্ক্রিনিং এবং টার্নিংয়ের জন্য গ্যালারি থেকেও আওয়াজ ওঠে মোগাকে বসিয়ে বলজিৎকে নামানোর জন্য। এ দিন খেলা দেখতে আসা প্রাক্তন ফুটবলারদের কারও কারও ধারণা মোগা এখনও ম্যাচফিট নন।

মাঠ ছাড়ছেন উত্তেজিত মোগা। ছবি: উৎপল সরকার।
বিরতিতে ড্রেসিংরুমে কোচ প্রতিটি ফুটবলারকেই কী ভুল হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করা সত্ত্বেও মোগা দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেও সেই একই ভুল করতে থাকেন। এর পরেই ফালোপা তাঁকে তুলে বলজিৎকে নামাতেই নাটকের সূত্রপাত। মাঠ থেকে বেরিয়ে রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে যাওয়ার সময়ই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন মোগা। কোচের দিকে আঙুল তুলে বলেন, “তুমি কোনও কোচ নও।” ফালোপা প্রথমে ব্যাপারটায় আমল না দিলেও একটু পরেই ছুটে আসেন মোগার দিকে। বলেন, “এখানে আমার কথাই চূড়ান্ত। রিজার্ভ বেঞ্চে চুপ করে বসো।” কোচ এবং ফুটবলারের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় দেখছিলেন পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কর্মী এবং স্ট্রেচার বাহকেরা। সতীর্থরা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে বুঝতে পেরে মোগাকে শান্ত করতে নেমে পড়েন। ম্যাচের পর কোচকে মোগার কাঁধে হাত রেখে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করতে দেখা যায় প্রেসবক্স থেকেও।
নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কের সূত্রপাত মোগা স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরোনোর মুখে। এক সমর্থক মোগার ব্যাগ ধরে টানলে তাঁকে কনুই চালান তিনি। যা গিয়ে লাগে এক সাংবাদিকের ঘাড়ে। এর পর মারমুখী মোগা তাড়া করেন ওই সমর্থককে। পুলিশ এবং ক্লাব কর্তারা এই সময় মোগাকে আটকান।
লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারও বলছেন, “কোনও ফুটবলারকে তুলে নিলে অনেক সময় অভিমানে সে উত্তেজিত আচরণ করে থাকে। এটা গোটা পৃথিবীতেই হয়। কোচ মোগার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করেননি। তিনি বললেই আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবব।”
কোচ, কর্তারা বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা না করতে চাইলেও মোগার আচরণ এবং ফিটনেস নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠে গিয়েছে মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.