অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ইকো পার্ক
শ্যাওলার পুরু স্তর পড়েছে নজর মিনারে। ব্যাঙের ছাতার আদলে তৈরি কংক্রিটের শেডগুলিরও একই হাল। ঝোপে ঢাকা পড়েছে চার দিক। যে জলাশয়ে পরিযায়ী পাখিরা আসতো সেটিও আগাছায় ভরে গিয়েছে। পরিত্যক্ত ডাঙায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে প্যাডেল বোট। ডুয়ার্সের মোরাঘাট জঙ্গল এলাকার গোঁসাইহাট ইকো পার্ক ও পাখি পরিচিতি কেন্দ্রের এ দশা।
তিনটি বনবস্তির অন্তত ৫ হাজার বাসিন্দাকে পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর করার পাশাপাশি জঙ্গলের কাঠ চুরি ঠেকাতে শাল জঙ্গলের গভীরে ৯ হেক্টর আয়তনের জলাশয়কে ঘিরে উদ্যানটি তৈরি করে বনদফতর। নিরাপদ ভ্রমণের জন্য জলাশয়ের আশপাশে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে মিশ্র জঙ্গল তৈরি করা হয়। ২০০৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রকল্পটি চালু হয়। তিনটি বাঁধ দিয়ে বারো মাস জল ধরে রাখার ব্যবস্থা থাকায় সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই বালিহাঁসের ভিড় জমে জলাশয়ে। চার শয্যার সুসজ্জিত ঘরে সেখানে রাত্রিবাস করার সুযোগও ছিল দেশিবিদেশি পর্যটকদের।
গোঁসাইহাট ইকো পার্ক। ছবি: রাজকুমার মোদক।
যদিও, গত তিন মাসে পুরো ছবি পাল্টে গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। চলতি বছর বর্ষার সময়ে একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জলাশয়ে জল ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণও হয় না বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। পর্যটন কেন্দ্রের এই অবস্থায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকার বনবস্তির বাসিন্দাদের মধ্যে। দ্রুত উদ্যান সংস্কার করার দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে রাভা ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “উদ্যানের বাঁধ মেরামত ও জলাশয় খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
রাভা জনজাতি অধ্যুষিত খুকলুং, মেলা ও গোসাইহাট বনবস্তি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরেই এলাকার বাসিন্দারা স্বনির্ভর হয়ে ওঠে। আগামী মরসুমে পর্যটক না এলে এলাকার বাসিন্দাদের আয়-সংকট তৈরি হবে। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল পপ শেরিং ভুটিয়া এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “উদ্যান সংস্কারের জন্য চিন্তা ভাবনা চলছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা রবি রাভা, মুকুন্দ রাভারা অভিযোগ করেন, “বর্ষার জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরে জলাশয় শুকিয়ে মাঠ হয়েছে। একই ভাবে পরিচর্যার অভাবে গোটা উদ্যান পর্যটকহীন সুনসান হয়েছে।” রাভা ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ভবেন্দ্র রাভা বলেন, “বন দফতরে কয়েকবার সমস্যার কথা জানিয়ে লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।” ঝাড় আলতা-২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান জগন্নাথ রাভা বলেন, “উদ্যানের দুর্দশায় কান্না পায়। এ অবহেলা মেনে নেব না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.