হবে সৌন্দর্যায়ন, মেডিক্যালে কাটা পড়ছে গাছ
সাজানো হবে হাসপাতাল চত্বর। সেই কাজের সুবিধার্থে মেদিনীপুর মেডিক্যাল চত্বরে বেশ কয়েকটি গাছ কাটা হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বরে পুকুরের আশপাশের এই গাছ কেটে কেন সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে, ইতিমধ্যে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এতে দোষের কিছু দেখছেন না। তাঁদের বক্তব্য, গাছ কাটা হচ্ছে না, গাছের ডাল কাটা হচ্ছে। হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “বন দফতরের অনুমতি নিয়েই কয়েকটি গাছের ডাল কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে আরও গাছ লাগানো হবে। ওই পুকুরের আশপাশেও গাছ লাগানো হবে।” জানা গিয়েছে, গাছ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। গাছের কাটা ডালগুলো বিক্রি করে হাসপাতালের আয় হওয়ার কথা ৪৬,৫০০ টাকা। এই দরেই চুক্তি হয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে একটি বড় পুকুর রয়েছে। পুকুরের আশপাশে রয়েছে জরুরি বিভাগ, নতুন ভবন। পুকুরের পাশে বসার ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে, দীর্ঘদিন ধরে পুকুরটি সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। চারদিকে আগাছার ভিড়। জলও নোংরা। আগে মাঝেমধ্যে পুকুরটি সাফাই করা হত। আগাছা পরিষ্কার করা হত। কিন্তু এখন আর নিয়মিত সাফাই হয় না। ফলে, চারপাশের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হন মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি। তাঁর তৎপরতায় পর্ষদের বরাদ্দ অর্থে পুকুরের আশপাশে সৌন্দর্যায়ন শুরু হয়েছে। ঠিক হয়েছে, পুকুরকে ঘিরে পুরো এলাকা সাজানো হবে। পার্কের মতো পরিবেশ তৈরি করা হবে। থাকবে বসার ব্যবস্থা। লাগানো হবে নতুন আলো। রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন এখানে বসতে পারবেন। এ জন্য মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ ১৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই কাজের জন্যই পুকুরের আশপাশে থাকা বেশ কয়েকটি গাছ কাটা হচ্ছে। এমনিতেই এখন সবুজ কমছে। বিভিন্ন এলাকায় সবুজ ধ্বংস করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেন গাছ কেটে সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রোগীর পরিজনদের কয়েকজন মনে করছেন, গাছগুলোকে রেখেও পরিবেশ সাজানোর কাজ হতে পারত। কারণ, সারা বিশ্বেই প্রাকৃতিক ভারসাম্য আজ প্রশ্নের মুখে। সেখানে সবুজ ধ্বংস হলে সমাজের ক্ষতি। সেই ক্ষেত্রে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হবে। তা হচ্ছেও। সকলেরই উচিত, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সবুজকে বাঁচিয়ে রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, পরিস্থিতি দেখে কয়েকটি গাছের কতগুলো ডাল কাটার সিদ্ধান্ত হয়। আসলে, এই ডালগুলো থাকলে কাজ এগোনোর ক্ষেত্রে সমস্যা হত। গত মাসেই মেদিনীপুর মেডিক্যালের স্বাস্থ্য সমিতির সরকার মনোনীত সদস্য হয়েছেন বিধায়ক মৃগেন মাইতি। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের পাশাপাশি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতিও তিনি।
মৃগেনবাবু বলেন, “গাছ কাটা হচ্ছে না। গাছের ডাল কাটা হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বরে পুকুরকে ঘিরে সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। কয়েকটি ডাল না- কাটলে কাজ করতে সমস্যা হত।” তাঁর কথায়, “সবুজ সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য। তাই কোনও গাছ কাটা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে ওই এলাকায় নতুন গাছ লাগানো হবে। সৌন্দর্যায়নের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই মতো কাজ এগোচ্ছে। পরবর্তী সময়ে এই পুকুরে মাছ চাষও হতে পারে।”
নানা মহলে প্রশ্ন
• মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে পুকুরের আশপাশেই গাছ কাটা হচ্ছে।
• কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, গাছ নয়, ডাল কাটা হচ্ছে। আর
তা করা হচ্ছেবন দফতরের অনুমতি নিয়েই।
• এই পুকুর ঘিরে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
• স্থির হয়েছে এখানে মনোরম পার্ক, বসার জায়গা তৈরি হবে।
• এ জন্য ১৯ লক্ষ টাকা দিয়েছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.