শিশু চুরির অভিযোগে মহিলা ধৃত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যান্ডেল |
উদভ্রান্ত চেহারার তরুণীর কোলে ধোপদুরস্ত বছর খানেকের শিশুকন্যাটিকে দেখে সন্দেহ হয়েছিল ট্রেনের সহযাত্রীদের। হিন্দিভাষী তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সদুত্তর না পেয়ে রেল পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই তরুণী ও শিশুকে হাওড়াগামী ডাউন কাটোয়া লোকাল থেকে নামানো হয় হুগলির ত্রিবেণী স্টেশনে। তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিশুটিকে আপাতত রাখা হয়েছে ত্রিবেণী থানার এক অফিসারের বাড়িতে। পরে তাকে পাঠানো হবে উত্তরপাড়ার একটি হোমে। |
রেল পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, ধৃত মহিলা হিন্দিভাষী। তিনি নিজের নাম বলছেন ফুলন দেবী। তবে কথাবার্তায় যথেষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে। বাড়ি কোথায়, তা সঠিক বলছেন না। বিভিন্ন সময় নানা জায়গার নাম বলছেন। কখনও বলছেন নাগপুর, কখনও কাটিহার, কখনও আবার পটনা। ফুলন তাঁর আসল নাম কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আজ, বুধবার ধৃত মহিলাকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
ট্রেনের যাত্রীরা জানিয়েছেন, এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ডাউন কাটোয়া লোকালে বছর খানেকের শিশুটিকে নিয়ে বসে ছিলেন ওই মহিলা। তাঁর আচরণ দেখে অন্য যাত্রীদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে ত্রিবেণী স্টেশনে তাঁকে নামানো হয়। ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি চায়ের স্টলে বসিয়ে ফের একপ্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সনৎ এবং নন্দিতা দাস নামে প্রত্যক্ষদর্শী এক দম্পতির হাতে বাচ্চাটিকে তুলে দেওয়া হয়। তাঁরাই রেল পুলিশে খবর দেন। ব্যান্ডেল জিআরপি থানার ওসি অমলেন্দু বিশ্বাস ঘটনাস্থলে আসেন। ওই দম্পতির অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় মহিলাকে। শিশুটিকে জিআরপি থানায় পৌঁছে দেন নন্দিতাদেবী। তিনি বলেন, “মহিলা ঠিক করে কিছু বলছিলেন না। এক এক বার এক এক রকম বলছিলেন। একরত্তি বাচ্চাটাকে দেখে মায়ায় পরে যাই।” |
উত্তরপাড়ার হোমে উদ্ধার হওয়া শিশু। |
রেল পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটিকে আপাতত ব্যান্ডেল জিআরপি-র এক অফিসারের বাড়িতে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপাড়ার একটি হোমে যোগাযোগ করা হয়েছে। শিশুটিকে ওই হোম কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে। জিআরপি থানায় বসে ধৃত মহিলা অবশ্য শিশু চুরির অভিযোগ মানেননি। তবে শিশুটি যে তাঁর নয়, তা স্বীকার করেছেন।
তাঁর দাবি, “আমি হাওড়ায় যাচ্ছিলাম। ট্রেনে এক মহিলা বাচ্চাটাকে আমার কোলে দিয়ে নেমে যায়।” কিন্তু শিশুটিকে নিয়ে তিনি কোথায় যাচ্ছিলেন, সে ব্যাপারে কিছু বলেলনি ধৃত মহিলা। রেল পুলিশের এক অফিসার বলেন, “মহিলা শিশুটিকে ঠিক কোথা থেকে পেলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” |