বাগডোগরা থেকে রাতের দু’টি উড়ানই তুলে নিচ্ছে স্পাইসজেট।
এর ফলে বাগডোগরায় রাতে বিমান ওঠানামা সংক্রান্ত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও ২৭ অক্টোবর থেকে কোনও উড়ান সেখানে রাতে নামা-ওঠা করবে না। বিমানসংস্থার যুক্তি, পর্যাপ্ত যাত্রী না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাদের এই সিদ্ধান্ত।
অন্য দিকে, বাগডোগরার জন্য সুখবর নিয়ে এল ইন্ডিগো। এই প্রথম তারা সেখান থেকে উড়ান শুরু করতে চলেছে। এই খবরকে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনই সান্ধ্য-উড়ানে তিনি বাগডোগরা পৌঁছোন। ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা জানান, বাগডোগরা থেকে একের পর এক উড়ান বাড়ায় তিনি খুশি। বাগডোগরা থেকে বিমান-জ্বালানির উপর থেকে রাজ্য কর তুলে নেওয়াতেই সেখানে উড়ান বাড়ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। স্পাইসজেট এখন সান্ধ্য-উড়ান তুলে নিলেও পরে এই উড়ান চালু হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী মমতা। বাগডোগরায় নেমে এ দিন তিনি বলেন, “সন্ধ্যার উড়ান চালু রাখার জন্য স্পাইসজেটকে অনুরোধ করা হচ্ছে।”
রাজ্য সরকারের অনুরোধ মেনে গত ১ অক্টোবর কলকাতা-বাগডোগরা রুটে একটি রাতের উড়ান চালু করে স্পাইসজেট। সেটি বিকেল পাঁচটায় কলকাতা থেকে ছেড়ে বাগডোগরা ঘুরে আবার সাড়ে সাতটায় ফিরে আসছিল। প্রথম দিনের উড়ানে ৪৮ জন যাত্রী বাগডোগরা যান। আসেন ৪৬ জন। ৭ তারিখ আর একটি সান্ধ্য-উড়ান চালু করে স্পাইস। কিন্তু ষষ্ঠী পর্যন্ত দু’টির মধ্যে কোনও উড়ানেই একশোর বেশি যাত্রী হয়নি।
ষষ্ঠী থেকে শুরু হয় যাত্রী চাপ। নবমীর দিন একটি সান্ধ্য উড়ানে বাগডোগরা যান ২১২ জন। ওই বিমানে সর্বোচ্চ ২১২ জন যাত্রীই ধরে। একাদশীর দিন সর্বোচ্চ ১৮৯ জন যাত্রী ফিরে আসেন কলকাতায়। সমস্যা দেখা দেয় ১৬ অক্টোবর, দ্বাদশী থেকে। ১৬ থেকে ২১ অক্টোবর এই পাঁচ দিনে কলকাতা-বাগডোগরা রুটে সান্ধ্য বিমান দু’টিতে সর্বোচ্চ যাত্রী হয়েছে ৯৪ জন। সর্বনিম্ন ২৫ জন। গড় যাত্রী ৫০ জন। অথচ ওই ক’দিনে বাগডোগরা থেকে নিয়মিত গড়ে ১৮০ জন যাত্রী ফিরছেন। বিমানসংস্থার অফিসারদের কথায়, “সারা দিন বাগডোগরায় কাজ সেরে অনেকেই সন্ধ্যার উড়ানে কলকাতায় ফিরতে আগ্রহী। আবার উল্টো দিকে কলকাতা থেকে যাঁরা পাহাড়ে বেড়াতে যান, তাঁরা সকাল সকাল শিলিগুড়ি পৌঁছে পাহাড়ে উঠে যেতে চান। সন্ধ্যার উড়ানে বাগডোগরা গেলে তাঁদের একটি দিন নষ্ট হয়ে যায়।” সে ক্ষেত্রে শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীরা সারাদিন কলকাতায় কাজ সেরে সন্ধ্যার উড়ান ধরতে আগ্রহী। কিন্তু সংখ্যাটা পর্যাপ্ত নয় বলে বিমানসংস্থা জানিয়েছে।
সংস্থার যুক্তি, যত যাত্রী হচ্ছে, তার জন্য লোকসান হচ্ছে সংস্থার। বাগডোগরা থেকে করমুক্ত জ্বালানি তুলেও লোকসান সামলানো যাচ্ছে না। ২৭ অক্টোবর থেকে চালু হচ্ছে শীতকালীন উড়ানসূচি। সেই সূচিতে বাগডোগরার সান্ধ্য উড়ান নেই। এই সূচি অনুযায়ী এ বার কলকাতা-বাগডোগরা রুটে দুপুরে একটি উড়ানই চালাবে তারা।
এই অবস্থায় বাগডোগরার কাছে একটাই আশার আলো। ইন্ডিগো ২০ নভেম্বর থেকে বাগডোগরায় উড়ান চালু করছে। প্রথমেই তারা দু’টি উড়ান চালু করতে চায়। একটি বিমান সরাসরি কলকাতা-বাগডোগরা রুটে যাতায়াত করবে। বাগডোগরা থেকে এই বিমানে কলকাতা আসা যাত্রীরা সরাসরি টিকিট বুক করতে পারবেন বেঙ্গালুরু পর্যন্ত। কারণ ওই বিমানটিই কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু যাবে। অন্য উড়ানটি মুম্বই থেকে গুয়াহাটি ঘুরে বাগডোগরায় পৌঁছবে। সেটি বাগডোগরা থেকে কলকাতা ঘুরে আবার একই রুটে মুম্বই ফিরে যাবে। কয়েক মাসের মধ্যে বাগডোগরা থেকে দিল্লির সরাসরি উড়ানও চালু করতে আগ্রহী ইন্ডিগো। যেহেতু ২৭ অক্টোবর থেকে সান্ধ্য উড়ান উঠে যাচ্ছে, তাই নভেম্বর মাসে বাগডোগরার যে কোনও একটি উড়ানের সময়সূচি সন্ধ্যায় রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ইন্ডিগোর।
|