রাজকুমারের মতো নগ্ন হতে পারব না

‘দ্য লাঞ্চবক্স’য়ের নিমরত কউর, ‘ডি-ডে’র শ্রীস্বরা, তার পর ‘শাহিদ’য়ে আপনি। ডিগ্ল্যাম চরিত্রে অনেক নতুন নতুন মুখ উঠে আসছে বলিউডে...

হ্যাঁ, তা ঠিক। আমি যখন পঞ্জাবি সিনেমা করতে শুরু করি ২০০৫-এ, তখন কেউ কেউ বলতেন আমার অভিনয় তাঁদের স্মিতা পাতিলের সিনেমার কথা মনে করিয়ে দিত। তাই বলে আমি কখনওই নিজেকে স্মিতা পাতিলের সঙ্গে তুলনা করছি না। তবে তখন মনে হত যে যদি আমি স্মিতাজির জমানাতে সিনেমা করতাম। আজ সে আক্ষেপ নেই। ‘দ্য লাঞ্চবক্স’, ‘ডি-ডে’, ‘শাহিদ’— এই ধরনের সিনেমাতে আমাদের মতো অভিনেত্রীদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। এটা দারুণ খবর।

‘শিপ অব থিসিয়াস’য়ের পরিচালক আনন্দ গাঁধী আগে সাস-বহু সিরিয়াল লিখতেন। আপনি এর আগে সিরিয়াল করেছেন— ‘মোহে রং দে’ আর ‘আপকি অন্তরা’। সিরিয়াল থেকে এই ধরনের সিনেমার জার্নিটায় আনন্দের সঙ্গে কোনও মিল খুঁজে পান?
আমি কিন্তু কোনও দিন টিপিক্যাল সাস-বহু সিরিয়াল করিনি। ‘মোহে রং দে’তে আমি এক ক্রান্তিকারীর ভূমিকাতে। ‘আপকি অন্তরা’র মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল অটিজম সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। তবে এটা ঠিক, সিরিয়ালের দুনিয়া থেকে ‘শাহিদ’য়ের মতো একটা সিনেমার ফারাকটা প্রচুর।

শুনেছি আপনি ‘শাহিদ’য়ের ঝগড়ার দৃশ্যগুলোতে বাস্তব জীবনে নিজের ইমেজের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন?
(হাসি) আরে আমি তো পঞ্জাবি মেয়ে। পঞ্জাবিরা এমনিতেই বেশ লাউড। আমার মা যখন ‘শাহিদ’ দেখেন, তখন প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল: ‘বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুই মারিয়মের চরিত্রটা করেছিস’। শাহিদ আজমির স্ত্রীর ভূমিকাতে উনি প্রথমে আমাকে ঠিক চিনতেই পারেননি। তার পর অবশ্য বলেন যে ঝগড়ার দৃশ্যগুলোতে আমার সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছিলেন! বাড়িতে ও ভাবেই ঝগড়া করি। তবে শ্যুটিংয়ের সময় ক্যামেরার সামনে একটা টেক-এ ওই রকম ঝগড়া করাটা সহজ নয়।
প্রভলীন সাঁধু
বাস্তবে আপনি কি খুব প্রাণোচ্ছল?
হ্যাঁ। আমি খুব পজিটিভ। সব সময় অপটিমিস্টিক। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে যে চরিত্রগুলো আমাকে দেওয়া হয়েছে (তা সে সিরিয়াল হোক কী সিনেমা) সেখানে আমি বেশ সিরিয়াস।

শুনেছি আপনাকে প্রথমে প্রযোজক সুনীল ভোরা নিতে চাননি?
সুনীল খুব স্পষ্টবাদী। আমার আগের কাজ দেখে ওঁর মনে হয়েছিল যে আমি হয়তো ওই রোলটা করতে পারব না।

খারাপ লাগেনি?
একটু দুঃখ পেয়েছিলাম। তবে আমি জানি যে ‘শাহিদ’ সিনেমাটা বানাতে গিয়ে বেশ ঝুঁকি নিতে হয়েছিল। এই রকম একটা বিতর্কিত সিনেমা তো এ দেশে বানানো চাট্টিখানি কথা নয়। তার পর আবার আমাকে কাস্ট করা। চুলবুলি এক চরিত্রে আমি অভিনয় করেছিলাম রামগোপাল বর্মার ‘নট আ লাভ স্টোরি’তে।

তা শেষমেশ শিকে ছিঁড়ল কী করে?
আমি টরেন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছিলাম ২০১১তে। আমার পরিচিত একজনের একটা হিন্দি সিনেমা নিয়ে। ফেস্টিভ্যাল সার্কিটটা আমার জানা ছিল। তখন থেকেই পরিচালক হনসল মেহতাকে বলেছিলাম যে ‘শাহিদ’য়ের মতো ছবির কদর চলচ্চিত্র উৎসবে হবেই হবে। তবে তখনও আমি কিন্তু এই ছবিটার অংশ ছিলাম না। হঠাৎ একদিন হনসলজির ফোন। বললেন সঙ্গে সঙ্গে অডিশন দিতে আসতে।

আর সে দিন নাকি মাথায় প্রচুর তেল দেওয়া ছিল! আর কোনও মেক আপই ছিল না?
আপনি তো গল্পটা শুনেছেন তা হলে...

পুরোটা জানি না...
তত দিনে ‘শাহিদ’য়ের ফার্স্ট শিডিউলটা হয়ে গিয়েছে। রাজকুমারের সঙ্গে অডিশন দিতে বলা হয়েছে। আমি তো জানতাম রাজকুমার তুখড় অভিনেতা। বুঝলাম কেস খেয়েছি। খুব নার্ভাস লাগছিল।

ক’গ্লাস জল খেলেন অডিশনের আগে?
না না, ওই সব নয়। আমি নার্ভাস হলে কথা বলা বন্ধ করে দিই। আমাকে ওই দাঙ্গার দৃশ্যগুলো দেখানো হয়েছিল। রাজকুমারের ওই অভিনয় দেখে ভেবেছিলাম ওঁর সঙ্গে কাজ করাটা সত্যি সত্যিই আমার দ্বারা হবে না। তবু ভাবলাম একটা চেষ্টা করি। বলা হয়েছিল প্রস্তাব দেওয়ার পর দৃশ্যটা করে দেখাতে। ইম্প্রোভাইজ করতে হবে। এক ডিভোর্সি মহিলার রোল। সে আবার সিঙ্গল মাদার। তাঁর আইনজীবী তাঁকে প্রোপোজ করছেন। ভেতরে ভেতরে সে মহিলা খুশি। কিন্তু সেটা তাঁর আচরণে বোঝা যাবে না। এটাই করে দেখাতে হবে।

‘শাহিদ’য়ে রাজকুমার-প্রভলীন
রাজকুমার তো ছবির প্রয়োজনে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে জেলের কিছু দৃশ্য শ্যুট করেছেন। প্রয়োজন পড়লে আপনিও কি ‘ব্যান্ডিট কুইন’য়ের সীমা বিশ্বাসের মতো ন্যুড হয়ে অভিনয় করবেন?
রাজকুমার খুব বড় মাপের অভিনেতা। ও ভাবে নগ্ন হয়ে শ্যুট করার আইডিয়াটা ওঁরই ছিল। তবে এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে আমি ঠিক ওই রকম একটা দৃশ্যে নিজেকে ভাবতে পারি না। স্কিন শো-তে আমি কমফর্টেবল নই।

বাস্তবের মারিয়মকে দেখেছেন?
না, যে ভাবে মারিয়মকে দেখানো হয়েছে সেটা সম্পূর্ণটাই হনসলজির কল্পনাপ্রসূত। দেখা না হয়ে ভালই হয়েছে। পরিষ্কার একটা স্লেট নিয়ে শুরু করেছিলাম। তবে এটুকু বলতে পারি যে দেখা হলে হয়তো আমি ওকে পুরোপুরি নকল করতাম না।

বাস্তবে মারিয়ম তো শাহিদকে ছেড়ে চলে যায়। একজন নারী হয়ে ওঁর ও ভাবে চলে যাওয়াটাকে কী ভাবে দেখেন আপনি?
মারিয়ম কিন্তু এক সাধারণ মহিলা নন। উনি বিয়ে করেছিলেন এক পাবলিক ফিগারকে ঠিকই। পাবলিক ফিগারের অনেক ব্যাগেজ থাকে। একটা সামাজিক দায়িত্বের কথা তাঁদের ভাবতে হয়। মারিয়মের দিক দিয়ে একবার ভেবে দেখুন। ডিভোর্সি মহিলা। সিঙ্গল মাদার। তার পর বিয়ে। সব সময় যদি মেরে ফেলার হুমকি আসে, তখন তো তিনি এ ভাবে রিঅ্যাক্ট করবেনই।

মারিয়মের চলে যাওয়াটা কি তাঁর কাপুরুষতার পরিচয়?
না। মারিয়ম ইজ নট আ কাওয়ার্ড।

নতুন কোনও সিনেমা সই করলেন? বাবলি চরিত্র করতে চান? নাকি মারিয়মের মতো সিরিয়াস রোল?
ভাল ছবি করতে চাই। তাতে আমাকে যা করতে হবে, আমি তাতেই রাজি।

আর সিরিয়াল? করবেন?
যদি অনিল কপূরের ‘২৪’-এর মতো সিরিয়াল হয়, তা হলে আমি রাজি।

‘আপকি অন্তরা’তে আপনার চরিত্রের নাম ছিল বিদ্যা। বিদ্যা বালন নিজেও ‘হম পাঁচ’য়ের মতো সিরিয়াল থেকেই বলিউডে এসেছেন। কখনও মনে হয় ওঁর পথে চলতে পারলে বেশ হয়?
বিদ্যার জার্নির সঙ্গে আমার সিরিয়াল থেকে সিনেমার যাত্রার তুলনা করাটাই বড় ব্যাপার। বিদ্যা আজকাল নিজের রোল চুজ করে নেন। একজন অভিনেত্রীর পক্ষে সেটা বিশাল পাওনা। আমিও চাইব যে একদিন আমার জন্যও চরিত্র লেখা হোক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.