সারদা-কাণ্ডে কেন সিবিআই তদন্ত হবে না, তার জবাব দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে ফের সুযোগ দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে এটাই যে শেষ সুযোগ, সোমবার তা-ও জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। রাজ্য সরকারের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি টি এস ঠাকুর বলেছেন, আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে এ নিয়ে জবাব দিতে হবে।
সুব্রত চট্টরাজ, প্রতিম সিংহ রায় ও আবু আব্বাসুদ্দিন নামে তিন ব্যক্তি সারদা-কাণ্ডের পরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন, আমানতকারীদের সুবিচার দিতে ঘটনার সিবিআই তদন্ত করা হোক। আবেদনকারীদের আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক এ দিন জানান, এই মামলার প্রথম শুনানি ছিল ১৮ জুলাই। ওই দিনই সর্বোচ্চ আদালত রাজ্য সরকারকে বলেছিল, কেন এই কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্ত হবে না, তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে। শুভাশিসের বক্তব্য, ১৮ জুলাইয়ের পরে তিন মাস কেটে গেলেও রাজ্য তার জবাব দেয়নি।
কেন রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে জবাব দিচ্ছে না, এ দিন কল্যাণবাবুর কাছে তা জানতে চান বিচারপতি। পরে তিনি সরকারি আইনজীবীকে বলেন, রাজ্যকে শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আবেদনকারীর আইনজীবীকেও তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের জবাবের পরে তাঁদের কোনও বক্তব্য থাকলে তা তাঁরা ওই জবাবের চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে পারবেন।
সারদা-কাণ্ড নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গড়িমসির যে অভিযোগ উঠেছে, তাকেই এ দিন নিশানা করেছে বিরোধী বামেরা। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “আগে এঁরা সব বিষয়ে সিবিআই তদন্ত চাইতেন! এখন সিবিআই চাইছেন না! সময় নিচ্ছেন। অনেক কিছু আড়াল করার আছে! তাই ভয় পাচ্ছেন!”
সূর্যবাবুর ব্যাখ্যা, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের তাঁরা আগেও বিরোধী ছিলেন, এখনও বিরোধী। এই প্রতারণার জাল একাধিক রাজ্যে বিস্তৃত। আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তই উপযুক্ত হবে। সিবিআই সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, সারদা-কাণ্ডের তদন্তে তারা প্রস্তুত। প্রয়োজনে সারদায় অর্থ সঞ্চয়কারীদের তালিকা তৈরি হতে পারে। আবেদনকারীরা সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি এ রকম অর্থলগ্নি সংস্থা কতগুলি রয়েছে, তারা কেমন কারবার করছে, তার তথ্য জানার ব্যবস্থা করতে বলেন। আদালত তা নিয়েও রাজ্যকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলেছে।
|