বিরোধী বামেদের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসাবে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়কে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন সদস্য মনোনয়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির বৈঠক বসেছিল সোমবার। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র সেখানে নপরাজিতবাবুর নামে আপত্তি পেশ করেন। সদ্য অবসরের পরে যথেষ্ট সময় না-দিয়ে প্রাক্তন পুলিশ-কর্তাকে মানবাধিকার কমিশনে নিয়ে আসাতেই আপত্তি সূর্যবাবুর। কিন্তু বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে পাওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের বিচারে প্রাক্তন ডিজি-র নামে সবুজ সঙ্কেত দিতে রাজ্যপালের কাছে ফাইল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিরোধী দলনেতার বক্তব্য ছিল, মানবাধিকার কমিশনের সদস্য, প্রাক্তন বিচারপতি নারায়ণচন্দ্র শীলের মেয়াদ আগে ফুরোচ্ছে। তাঁর শূন্যস্থান আগে পূরণ করা হোক। তার পরে প্রাক্তন আইএএস সৌরীন রায়ের জায়গায় নতুন সদস্য নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে জানিয়েছেন, সাত বছর জেলা বিচারক বা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে কাজ করেছেন, এমন যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পেতে সময় লাগবে। তাই দ্বিতীয় পদটিতেই আগে সদস্য নেওয়া হচ্ছে।
সেই পদে নপরাজিতবাবুর নামে সূর্যবাবুর মূল আপত্তির কারণ, ওই আইপিএস অফিসার গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিজি পদেই ছিলেন। দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা-সহ পুলিশের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ কমিশনের কাছে এখন বিচার্য, তার অনেকগুলি ঘটনার সময়েই রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তা ছিলেন নপরাজিতবাবু। সূর্যবাবুর বক্তব্য, “যিনি অভিযুক্ত, তিনিই অভিযোগের বিচার করবেনতা বাঞ্ছনীয় নয়! কুলিং-অফ পিরিয়ড চাই।”
পরিষদীয় সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে পাল্টা বলেন, নপরাজিতবাবুকে ডিজি করেছিল বামফ্রন্ট সরকারই! তা ছাড়া, অভিযোগ অনেকের বিরুদ্ধেই থাকে। আপত্তি বহাল রেখেই সূর্যবাবু প্রস্তাব দেন, পরে অন্য কোনও নাম নিয়ে সহমতের চেষ্টা করা যেতে পারে। যে হেতু এই ধরনের পদে সর্বসম্মতির ভিত্তিতে নিয়োগ হওয়াই দস্তুর। কিন্তু সে প্রস্তাবও মানা হয়নি।
পরে বিধানসভার স্পিকার বিমানবাবু বলেন, “মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হতে গেলে এমন এক কাউকে দরকার, যার বিরুদ্ধে তেমন কোনও অভিযোগ বা মামলা নেই, তদন্তও তলছে না। সেই জন্যই মুখ্যমন্ত্রী ওঁর নাম প্রস্তাব করেছেন। মানবাধিকার আইন অনুযায়ী সব গুণই ওঁর রয়েছে। উচ্চশিক্ষিত, দক্ষ প্রশাসক এবং মানবাধিকার সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রয়েছে। তাই আমি নপরাজিতবাবুর নাম সমর্থন করেছি।” |