ব্যাটসম্যানের হেলমেটের উপর চকচক করছে ছোট্ট বস্তুটা। দেখছে বোলারকে। জোরে বল করলে বোলারের হাত কতটা ওঠা-নামা করছে। স্পিনের সময় কতটা মোচড় দিচ্ছে কবজি। সব রেকর্ড হয়ে চলছে অবিরাম।
বস্তুর নাম ‘হেডক্যাম’।
ভারত অধিনায়কের ঘরের মাঠে ধোনি-বাহিনীর মহড়া নিতে নামার আগে এই হেডক্যামই অস্ট্রেলীয় শিবিরের নতুন চমক, নতুন অস্ত্র।
সাত ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজের মাঝামাঝি এসে দু’দলেরই প্রধান চিন্তা তাদের বোলিং। জয়পুরের পরে মোহালিতেও দু’ইনিংসেই উঠেছে তিনশোর উপর রান। যার জন্য চতুর্থ ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে রাঁচির ঝাড়খণ্ড স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ভারত আর অস্ট্রেলিয়া দুটো দলই পড়ে থাকল বোলারদের নিয়ে। |
অস্ট্রেলীয় শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বোলারদের খেলায় উন্নতি করতেই প্র্যাকটিসে এই হেডক্যামের আমদানি। যা এ বার থেকে ওয়াটসনরা নিয়মিত ব্যবহার করবেন। এবং যার ফলে প্র্যাকটিস-শেষে বোলাররা নিজেরাই হেডক্যামের ফুটেজে দেখে নিতে পারবেন নিজেদের ভুল-ত্রুটি। এ দিন যেমন শেন ওয়াটসন হেলমেটের উপর হেডক্যাম বসিয়ে ব্যাট করে গেলেন।
অস্ট্রেলীয় শিবির যদি দলগত প্রতিজ্ঞার প্রতীক হয়, তা হলে উল্টো দিকে ভারতীয় শিবিরে ছিল একা যোদ্ধার ব্যক্তিগত যুদ্ধ জেতার লড়াই। যোদ্ধার নাম ইশান্ত শর্মা। ঐচ্ছিক অনুশীলনে মাঠে আসেননি টিমের কেউ। একা ইশান্ত বাদে। এবং বোলিং কোচ জো ডস-কে নিয়ে তিনি প্রায় দু’ঘণ্টা বল করে গেলেন।
রাঁচি শহরের চিন্তায় অবশ্য ইশান্ত নন, রয়েছেন ঘরের ছেলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ভারত অধিনায়ক এখানে শেষ ওয়ান ডে খেলেছিলেন গত জানুয়ারিতে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। চলতি সিরিজের শেষ ম্যাচে তাঁর ব্যাটে সেঞ্চুরি এসেছে। এবং রাঁচির ক্রিকেটপ্রেমীদের আশা, ঘরের মাঠে আরও বড় রান পাবেন ধোনি। কম দামের টিকিট ইতিমধ্যেই ‘সোল্ড আউট’। বেশি দামের টিকিট বিক্রি নিয়েও চিন্তিত দেখাল না রাজ্য সংস্থার কর্তাদের। |
চিন্তিত নন অস্ট্রেলীয় বোলাররাও। পর পর দু’ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা তিনশোর উপর রান তুললেও তাঁদের স্ট্র্যাটেজিতে কোনও বদল আনতে চান না অস্ট্রেলীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বলে গেলেন, “আমার মনে হয় ভারতীয়দের বিরুদ্ধে শর্ট বল স্ট্র্যাটেজিটাই আমাদের হাতে সব চেয়ে ভাল অস্ত্র। এই স্ট্র্যাটেজির কোনও বদল হবে বলে আমার মনে হয় না। শেষ ম্যাচটাতেও আমরা ভালই বল করেছিলাম। শুধু শেষ দিকে ধোনি এসে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে গেল।”
ধোনির বিরুদ্ধেও যে গেমপ্ল্যান তৈরি, সে কথা বলছিলেন ম্যাক্সওয়েল। “শেষ ম্যাচটাতেও ধোনির বিরুদ্ধে আমাদের প্ল্যানটা ঠিকই ছিল। কয়েকটা জিনিস আমাদের বিরুদ্ধে চলে যায়। একটা ক্যাচ ফস্কেছিলাম। একটা বল মিড অফের মাথার উপর দিয়ে অল্পের জন্য চলে যায়। সুযোগগুলো নিতে পারলে আমাদের ২৬০-২৭০ রান তাড়া করতে হত। ম্যাচটাও অনেক আগে শেষ হয়ে যেত।”
|