আমুর বাজপাখি বাঁচাতে দৌড়ে সামিল নাগাল্যান্ডের শিকারিরাই
ন্যপ্রাণী, বিপন্ন পাখি সংরক্ষণের বার্তা ছড়াতে ম্যারাথন দৌড়ে সামিল হলেন শিকার-প্রিয় গ্রামবাসীরা!
এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল নাগাল্যান্ড। ওখা জেলার ছ’টি গ্রামের শ’দেড়েক বাসিন্দা দৌড়লেন বন্যপ্রাণ, বিশেষত ‘আমুর ফ্যালকন’ প্রজাতির বাজপাখিদের বাঁচাতে। এক সময় ওই জেলাতে পাখি-শিকারই ছিল মানুষের অন্যতম বিনোদন। আমুর ফ্যালকনের ‘বধ্যভূমি’ ছিল নাগাল্যান্ড। বাজ প্রজাতির মধ্যে অপেক্ষাকৃত ছোট পতঙ্গভুক পাখি সেটি। ডানায়, দেহের পালকে বুটিদার নকশা আঁকা।
‘বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনাল’-এর ২০১২ সালের সমীক্ষায় জানানো হয়, বিশ্বে বিপন্ন পাখির ‘লাল তালিকা’য় আমুর বাজের নাম জুড়েছে। সাইবেরিয়া, দক্ষিণ চিনে জন্মায় আমুর ফ্যালকন। সেখানে প্রবল শীতের দাপট থেকে বাঁচতে দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার উড়ে যায় তারা। নাগাল্যান্ডের ওখা জেলার দয়াং উপত্যকায় আমুরের দল বিশ্রামের জন্য নামে। তখনই তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। আমুরের দল গাছের ডালে গিয়ে বসে। সেখানে জাল পেতে রাখা হয় আগে থেকেই। সেই ফাঁদে আটকে যায় পাখিগুলি। হিসেব অনুযায়ী, প্রতি বছর লক্ষাধিক ‘আমুর ফ্যালকন’ শিকার হয় রাজ্যে।
সম্প্রতি, ডব্লিউটিআই ও ‘ন্যাচরাল নাগাস’ নামে দু’টি সংস্থা যৌথভাবে আমুর বাঁচানোর অভিযান শুরু করেছে। পশুপ্রেমীদের প্রচারে ওখা জেলার ছ’টি গ্রামের বাসিন্দা ওই সংগঠনগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ওই পাখি শিকার করলে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। সেই ব্যবস্থা নেবে গ্রামসভাগুলিই। একইসঙ্গে সচেতনতামূলক সভাও চলছে গ্রামে-গ্রামে। সেখানে অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, গির্জা কর্তৃপক্ষও। দেখানো হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র।
এ বছর আপাতত প্রায় ১৫ হাজার আমুর ফ্যালকন নাগাল্যান্ডে এসেছে। ‘ন্যাচরাল নাগাস’-এর কর্তা স্টিভ ওদয়ু বলেন, “প্রচারে কাজ হয়েছে। দয়াং এলাকায় এখনও একটিও আমুর শিকারের খবর মেলেনি। নাগাল্যান্ডে এটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। ওখা জেলা প্রশাসন বন্দুক, ছুরি, জাল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।”
আমুরদের কয়েক হাজার কিলোমিটারের ‘ম্যারাথন’ যাত্রাপথকে তুলে ধরতেই ওখায় ওই দৌড়ের আয়োজন করা হয়। এক্ষেত্রে দূরত্ব ছিল সাড়ে ৬ কিলোমিটার। আমুরের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দোয়াং উপত্যকার চারপাশে দৌড়লেন প্রতিযোগীরা। প্রতিযোগীদের তিনটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছিল। পাংতি গ্রাম থেকে দৌড় শুরু হয়। এরপর, আমুরের সবচেয়ে বড় ‘বধ্যভূমি’ হিসেবে চিহ্নিত আশা, সুংগ্রো, ওকোথো, আরি-১ এবং আরি-২ গ্রাম হয়ে দৌড় শেষ হয়। প্রতিযোগীদের গায়ে ছিল পাখি ও পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা লেখা টি-শার্ট।
নাগাল্যান্ডের মুখ্য বনপাল টি লোথা জানান, গ্রামবাসীরা আমুর হত্যা রুখতে এগিয়ে এসেছেন। তার স্বীকৃতি দিতে, কয়েকদিনের মধ্যেই দোয়াং উপত্যকায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাঁদের ধন্যবাদ জানানো হবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.