শব্দবাজির গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনার জেরে কালীপুজোর মুখে নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার রুখতে আসরে নেমেছে কালিয়াগঞ্জ পুলিশ ও পুরসভা। সম্প্রতি, পুলিশ কালিয়াগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে দেওয়ালি উৎসবকে কেন্দ্র করে যাতে ব্যবসায়ীরা নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার না করেন, সেই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। পুরসভার তরফেও আলাদা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে শব্দবাজির কারবার বন্ধে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করা হয়েছে। তার পরে কালিয়াগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে শহরের খুচরো ব্যবসায়ীদের নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শব্দবাজির গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনার পর তদন্তে জানা গিয়েছে শহরে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবসায়ীদের একাংশ নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার করছেন। কালীপুজো ও বিয়ের মরশুমে ওই কারবার বেড়ে যায়। এবার ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পুলিশও অভিযান চালাবে। কেউ ধরা পড়লে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” একইভাবে কালিয়াগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণচন্দ্র দে সরকার জানান, পুরসভার তরফে ব্যবসায়ীদের নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। শহরের কোনও গুদামে বেআইনিভাবে নিষিদ্ধ শব্দবাজি মজুত করা হয়েছে কী না তা পুরসভার কাউন্সিলর ও কর্মীরা খতিয়ে দেখছেন। কেউ ধরা পড়লে তাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে।
গত ২৭ জুন কালিয়াগঞ্জের মাড়োয়াড়িপট্টি এলাকায় একটি বেআইনি শব্দবাজির গুদামে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এক ভুট্টা ব্যবসায়ী-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। জখম হন ১০ জন। মৃত ও জখমরা শব্দবাজির গুদামের পাশের একটি ঘরে ট্রাক থেকে ভুট্টা নামানোর কাজ করছিলেন। ঘটনায় পুলিশ স্থানীয় তিন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন, নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার ও মজুত করার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে ধরে।
পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে কালিয়াগঞ্জের মহেন্দ্রগঞ্জ ও স্টেশন বাজার-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তার ধারে মুদিখানা ও দশকর্মার ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে শব্দবাজি বিক্রি হয়। দেওয়ালি ও বিয়ের মরশুমে কলকাতা ও বিহারের বিভিন্ন এলাকা ওই বাজি আনা হয়। কালিয়াগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুনীল সাহা বলেন, “নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার রুখতে পুলিশ ও পুরসভাকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।”
|