বিশেষজ্ঞ বহু, কিন্তু ‘ডাক্তারবাবু’ নেই
সুখ হলেই ‘স্পেশ্যালিস্ট’! কমতে কমতে ক্রমশ এখন উধাও হওয়ার জোগাড় ‘জেনারেল প্র্যাকটিশনার’দের অস্তিত্ব। ফলে সাধারণ অসুখবিসুখের চিকিৎসা করতে গিয়েও ‘ফতুর’ হচ্ছেন আমজনতা। অকারণ বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধপত্রে খরচ হচ্ছে তাঁদের সঞ্চয়। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলি ক্রমেই ‘সুপার স্পেশ্যালিটি’র ধারণা থেকে সরে এসে জনস্বাস্থ্যের দিকটিতে গুরুত্ব বাড়ালেও ভারতে তা এখনও যথেষ্ট গুরুত্ব পায়নি। কলকাতায় দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের দু’দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উঠে এল এই আক্ষেপের কথাই।
লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস, কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতাল এবং অ্যাসোসিয়েশনস অফ ফিজিশিয়ানস-এর রাজ্য শাখার উদ্যোগে শনি ও রবি দু’দিনের সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েকশো চিকিৎসক।
‘মেডিকন ২০১৩’ নামে এই সম্মেলনের অধিকর্তা সুজিত কর পুরকায়স্থ বলেন, “রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস ইউরোপের ডাক্তারদের জন্য চার বছরের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। সেই প্রশিক্ষণ শেষ হলে তবেই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জেনারেল প্র্যাকটিশনার হিসেবে গণ্য হন। এ দেশ থেকে বহু চিকিৎসকই এমআরসিপি ডিগ্রির জন্য আবেদন করেন এবং পরীক্ষা দেন। আমরা রয়্যাল কলেজকে প্রস্তাব দিয়েছি যাতে এখানকার কয়েকটি হাসপাতালে ওরা ওই ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে।”
সম্মেলনে হাজির বিশেষজ্ঞরা জানান, ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশেই এখন জেনারেল প্র্যাকটিশনারদের কদর ফিরে আসছে। কিন্তু ভারত এখনও এ ব্যাপারে পিছিয়ে। আয়োজক কমিটির সভাপতি, চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, এ দেশে সাপের কামড় কিংবা ম্যালেরিয়ার মতো রোগে এখনও বহু মানুষ মারা যাচ্ছেন। যথাযথ পরিকাঠামো নেই, প্রয়োজনীয় সচেতনতাও নেই। সরকারি তরফে এ নিয়ে তেমন মাথাব্যথাও নেই। এইচআইভি-র জন্য যত অর্থ ব্যয় হয়, তার ছিটেফোঁটাও এ সব ক্ষেত্রে হয় না। তিনি বলেন, “জনস্বাস্থ্যে গুরুত্ব না বাড়িয়ে যে উপায় নেই, দু’দিনের এই সম্মেলনে বক্তাদের কথায় ফের সেটা প্রমাণ হল। ভারত সুপার স্পেশ্যালিটির দিকে ঝুঁকেছে অনেক দেরিতে, কিন্তু এখন সেই ঝোঁকার দিকে পাল্লা এমনই ভারী যে, অন্য দিকগুলি গুরুত্ব পাচ্ছে না। সাধারণ রোগের চিকিৎসার গুরুত্ব না বাড়ালে কোনও দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভাল হতে পারে না।” চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের মতে, সুপার স্পেশ্যালিটির দিকে পাল্লা ভারী হওয়ায় গুরুত্ব কমছে ইমার্জেন্সি চিকিৎসার।
লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস-এর অধ্যাপক ডেভিড ওয়ারেল ম্যালেরিয়া ও সাপের কামড়ে মৃত্যু প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন। তাঁর কথায়, “ভারতীয় উপমহাদেশে ওই দুই কারণেই মৃত্যুর হার যথেষ্ট উদ্বেগের। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু তা যখন বাজারে আসবে, তার দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই থাকবে। সাপের কামড়েও ভারতে ২০১২ সালে ১৩৫০ জন মারা গিয়েছেন।” ওয়ারেলের আক্ষেপ, “সাপের কামড়ের ইঞ্জেকশন এখনও মজুত থাকে না বহু হাসপাতালে। প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশনের সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.