নিখোঁজ কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ মিলল গ্রামের পিছনে একটি নির্জন পাম্প-ঘরে। রবিবার সকালে বসিরহাটের বড় জিরাফপুরের দাসপাড়ার ঘটনা। শনিবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। কিশোরীর কাকা পুলিশের কাছে তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় মৃতার এক আত্মীয়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। দেহটি বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের এক তদন্তরকারী অফিসার জানান, পাম্প ঘরে মেয়েটির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের সময় তার গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো ছিল। একটি বাঁশের সঙ্গে ঝুলছিল সেটি। কিশোরীর পরনে ছিল রাতপোশাক। এক পায়ে হাঁটুর নীচে গভীর ক্ষত ছিল। আর এক পায়ের আঙুল কাটা ছিল। সেখান থেকে রক্ত ঝরছিল। পায়ের নীচেই একটি মাটির কলসি উপুড় করে রাখা ছিল। পাশে ছিল একজোড়া মেয়েদের চটি। কিশোরীর কাকা বলেন, “ওর দুই পা-ই মাটিতে লেগেছিল। পায়ের পাশে থাকা মাটির কলসিটিও অক্ষত ছিল। আমাদের ধারণা, কেউ ওকে ওই ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে কোনও ঘটনা চাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ধর্ষণ করে খুন করেছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জিরাফপুরের দাসপাড়ার বাসিন্দা ওই পরিবারের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে এই কিশোরী ছোট। বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। স্ত্রী রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজ করেন। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট মেয়ে মায়ের কাছে থাকত। সপ্তমীর দিন তাকে বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে রেখে কাজে গিয়েছিলেন মা। শনিবার রাতে ওই বাড়ি থেকেই নিখোঁজ হয় সে। রবিবার সকালে বাড়ির অদূরে একটি জল কাদা ভরা মাঠের পাম্প-ঘরে তার ঝুলন্ত দেহ প্রথমে দেখতে পান তার দিদি। ঘটনা জানাজানি হতে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। মাকেও খবর দেওয়া হয়। মৃতেরা দিদি পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর দেওরের সঙ্গে তাঁর বোনের সম্পর্ক ছিল। দিন তিনেক আগে তাঁর জায়ের কাছে তিনি জানতে পারেন, ওদের দু’জনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি চলছিল। দিদির কথায়, “আমার বোনের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলেই আমার বিশ্বাস।” মৃতার মায়েরও দাবি, কেউ তাঁর মেয়েকে ওখানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করেছে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এলাকার কেউ জলকাদা পেরিয়ে ওই নির্জন ঘরটিতে যায় না। এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ দাস, অভিজিৎ দাসেরা বলেন, “এলাকার কেউ জলকাদা পেরিয়ে ওই নির্জন ঘরটিতে যায় না। তাই ওখানে গিয়ে কেউ আত্মহত্যা করবে এমনটা ভাবা যায় না। আমরা চাই, পুলিশ ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করে দোষীদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দিক।” |