ইস্টবেঙ্গলে তাঁর প্রথম মরসুমেই ক্লাবের ইতিহাস গড়ার সঙ্গী হওয়ার সুযোগ জেমস মোগা-র সামনে। রবিবার লাল-হলুদের অনুশীলনের পর বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি চালাতে চালাতেই এএফসি কাপের ফিরতি সেমিফাইনাল নিয়ে নিজের চিন্তাভাবনা অকপটে আনন্দবাজার-কে জানালেন সুদানের তারকা স্ট্রাইকার।
প্রশ্ন: ম্যাচের মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে কতটা আত্মবিশ্বাসী আপনি? ইতিহাস গড়তে পারবেন?
মোগা: ইতিহাস-টিতিহাসের কথা আলাদা করে ভাবছি না। ওতে চাপ বাড়ে। তবে এটাও ঠিক, মাঠে নেমে ম্যাচটা আমাদের যে কোনও মূল্যে জিততেই হবে। সবাইকে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। শুধু জিতলেও হবে না। অঙ্কের হিসেব মাথায় রেখে খেলতে হবে। কুয়েত এস সি নিঃসন্দেহে খুব ভাল টিম। আমাদের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। তিন বার এএফসি কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। লড়াইটা খুবই কঠিন হবে। তবে ফুটবল-অভিধানে অসম্ভব বলে কোনও শব্দ নেই।
প্র: যুবভারতীর কৃত্রিম ঘাসের মাঠ কতটা সমস্যায় ফেলতে পারে কুয়েতের টিমকে?
মোগা: ওদের ফুটবলাররা পেশাদার। সব মাঠের সঙ্গেই মানিয়ে নিয়ে খেলার মানসিকতা রয়েছে। এমনি এমনি তো আর তিন বার চ্যাম্পিয়ন হয়নি! কৃত্রিম ঘাসের মাঠে ওরা হয়তো খেলতে অভ্যস্ত নয়। তা বলে ওদের এখানে হালকা ভাবে নিলে চূড়ান্ত ভুল করা হবে। |
কঠোর অনুশীলনে মগ্ন মোগা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
প্র: ঘরের মাঠের সুবিধে তা হলে খুব বেশি কাজে দেবে না বলছেন?
মোগা: না, না, ঘরের মাঠের সুবিধে তো একটা পাবই। আমাদের সমর্থকরা রয়েছেন তো। আমি চাইব ওই দিন প্রচুর সমর্থক মাঠে আসুন। ইস্টবেঙ্গলের সমর্থনে মাঠে এত চিৎকার করুন তাঁরা যে, কুয়েতের দলটার ফোকাসই নষ্ট হয়ে যায় (বলেই হেসে উঠলেন)! আমাদের মনোবল বাড়াতে সমর্থকদের সাহায্য তো লাগবেই। তবে ওঁদের সমর্থকদের কাছে একটাই অনুরোধ, ওঁরা যেন মাঠে পটকা না ফাটান।
প্র: আপনারা তবে কুয়েতকে বেশ ভয়ই পাচ্ছেন!
মোগা: বিপক্ষকে ভয় করতে নেই। সমীহ করতে হয়। আমিও সেটাই করছি। আর ঘরের মাঠের সুবিধে তো বিশ্বের সব দলই নেয়। এতে কোনও অন্যায় নেই।
প্র: আপনার উপর প্রত্যাশা অনেক বেশি। এটা কি বাড়তি চাপ?
মোগা: বাড়তি চাপ বলব না। গোল করার জন্যই তো আমাকে ইস্টবেঙ্গল নিয়েছে। গোল করেই দলকে জেতাতে হবে। এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। তবে আমাদের মাঝমাঠ কোনও কারণে এই মুহূর্তে ঠিক দানা বাঁধতে পারছে না। আমাদের মধ্যেও বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে। তবে ডেম্পো ম্যাচে হারের পর নিজেদের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি, এএফসি কাপ ম্যাচে সেই ভুলগুলো আর করব না।
প্র: এই ম্যাচে আপনাদের স্ট্র্যাটেজি কী হওয়া উচিত বলে মনে করছেন?
মোগা: ঘর গুছিয়ে তবেই আমাদের আক্রমণে যেতে হবে। ওরা পাসিং ফুটবল খেলে। সেই জায়গাটা আমাদের নষ্ট করে দিতে হবে।
প্র: ঐতিহাসিক ম্যাচের জন্য ভারতের দিকপাল সব প্রাক্তন ফুটবল কোচেদের এনে শনিবার আপনাদের জন্য বিশেষ ক্লাসের আয়োজন করেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। টিমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার হওয়া সত্ত্বেও আপনি সেই ক্লাসে আসেননি কেন?
মোগা: ওই সুন্দর ক্লাসটা মিস করার জন্য খুব আফসোস হচ্ছে। কিন্তু কিছু করার ছিল না। আমার একটু ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল। আমি ক্লাবকে পুরো বিষয়টা জানিয়েছিলাম। ক্লাব থেকে অনুমতিও নিয়েছিলাম। |