|
|
|
|
মেদিনীপুরে পুর-নির্বাচন |
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পুরপ্রধান পদপ্রার্থী কে? ধোঁয়াশা রেখেই রবিবার পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল। এক পাশে বিদায়ী পুরপ্রধান প্রণব বসু, অন্য পাশে দলের শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যাকে বসিয়ে এ দিন প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি। তিনিই বলেন, “কে পুরপ্রধান হবেন, তা ভোটের ফলপ্রকাশের পর ঠিক হবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্য নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন।” একই বক্তব্য সুকুমারবাবুর।
মেদিনীপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন নয়। মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের বিভেদের কথা প্রায় সকলেরই জানা। তবে শাসক দলের নেতৃত্ব কখনই এই বিভাজনের কথা মানতে চান না। তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রার্থী নিয়ে ঝাড়াই- বাছাই শুরু হতেই বেশ কিছু ওয়ার্ডে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসে। কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলতে থাকে। দুর্গাপুজোর আগে পুরভোটের রণকৌশল ঠিক করতে মেদিনীপুরে এসে বৈঠক করেন দুই সাংসদ মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। মেদিনীপুরের জন্য পৃথক কমিটি গড়া হয়। সিদ্ধান্ত হয় এই কমিটিই পুরসভা নির্বাচনের কাজকর্ম দেখভাল করবে। সেই মতো গত শুক্রবার বৈঠকে বসে ৬ সদস্যের কমিটি। ছিলেন বিধায়ক মৃগেন মাইতি, প্রণব বসু, সুকুমার পড়্যা, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, দুই কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ এবং নির্মল ঘোষ। দীর্ঘ আলোচনার পরে রাজ্যে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব গৃহীত হয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই প্রস্তাবে সম্মতি দেননি বিদায়ী পুরপ্রধান প্রণববাবু। প্রস্তাবপত্রে সইও করেননি। ৫ জনের সই সম্বলিত প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হয়। জানা গিয়েছে, ৬টি ওয়ার্ড নিয়ে বিদায়ী পুরপ্রধানের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। রবিবার প্রণববাবু বলেন, “সব ক্ষেত্রে একমত ছিলাম না। তাই সই করিনি।” এই পরিস্থিতিতে কয়েকটি ওয়ার্ডে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোক প্রার্থী হতে পারেন বলে জল্পনা।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টিতে প্রার্থী নিয়ে মোটের উপর সহমতে পৌঁছনো গিয়েছিল। কিন্তু, বাকি ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে চাপানউতোর চলে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা ঘোষণাও করতে পারেনি তৃণমূল। ২৩ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। নতুন ১৫ এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম পরে ঘোষণা করা। ২২ নম্বর ওয়ার্ডটি গতবার তৃণমূলের দখলেই ছিল। এখান থেকে জেতেন রাধারানি বেরা। একমাত্র রাধারানিদেবী বাদে দলের বিদায়ী সব কাউন্সিলরের নামই প্রার্থী তালিকায় রয়েছে। সঙ্গে বেশ কিছু নতুন মুখ রয়েছে। যাঁরা পুরভোটে এরই প্রথম।
দু’টি ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা গেল না? মেদিনীপুরের বিধায়কের জবাব, “কোনও কোন্দল নেই। রাতের মধ্যেই দু’টি নাম মুকুল রায় আমাকে জানিয়ে দেবেন। এখনও আলোচনা চলছে। তাই এ দিন ঘোষণা করা গেল না। সোমবার ওই দু’টি ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।”
মেদিনীপুর পুরসভা কংগ্রেস- তৃণমূল জোটের দখলে ছিল। এ বার একক ভাবে ক্ষমতা দখলে মরিয়া তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা সবকটি ওয়ার্ডে জেতার ব্যাপারেই আশাবাদী। কারণ, উন্নয়নকে সামনে রেখে আমরা ভোটে যাচ্ছি। খুব কম হলে ১৯-২০টা ওয়ার্ডে জিতবই।” অন্য দিকে, তৃণমূলের শহর সভাপতির বক্তব্য, “মানুষের উপর আমাদের আস্থা আছে। মানুষই আমাদের জেতাবেন।” |
|
|
|
|
|