উপকরণের দাম দ্বিগুণ, লোকসানের আশঙ্কায় রায়গঞ্জের মৃৎশিল্পীরা
চড়া দরে কদর কমেছে মাটির প্রদীপের
ত এক বছরে প্রদীপ তৈরির উপকরণের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় পাইকার ব্যববাসীরা প্রদীপের দাম দিতে রাজি না হওয়ায় বিপাকে রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সুভাষগঞ্জ উত্তর পালপাড়া এলাকার মৃৎশিল্পীরা। দেওয়ালির প্রদীপ তৈরির বরাত দেওয়ার জন্য প্রতিদিনই রায়গঞ্জ ব্লকের পাইকার ব্যবসায়ীরা মৃৎশিল্পীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। তবে মৃৎশিল্পীরা উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে প্রদীপের দাম দ্বিগুণ চেয়ে সাড়া পাচ্ছেন না। ফলে, প্রদীপ তৈরির বরাত মিলছে না।
দেওয়ালির দু’সপ্তাহ বাকি নেই। তাই লোকসানের আশঙ্কা করছেন মৃৎশিল্পীরা। এখনও পর্যন্ত প্রদীপ তৈরির কাজ শুরু করেননি। মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো থেকে কালী পুজো, ফি বছর মাটির উপকরণ বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না। লোকসানের জন্য ২০ শতাংশ শিল্পী এই পেশা ছেড়ে গিয়েছেন। আবার অনেকেই ভিন রাজ্যে চলে গিয়ে দিন মজুরি ও ফেরিওয়ালার কাজ করছেন। প্রবীণ মৃৎশিল্পী শ্যামল পাল, অর্চনা পাল ও প্রদীপ পাল জানান, এ বছর মাটি ও রঙের দাম প্রায় দ্বিগুণ হলেও পাইকাররা প্রদীপের দাম বাড়াতে চাইছেন না।
পালপাড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
তাঁরা গতবারের দামেই প্রদীপ কিনতে চাইছেন। তাঁরা বলেন, “এ বছর এখনও আমরা প্রদীপ তৈরির কাজ শুরু করিনি। প্রতিদিনই অনেক মৃৎশিল্পী দিনমজুরি ও ফেরিওয়ালার কাজ করতে ভিনরাজ্যে যাচ্ছেন।”
মৃৎশিল্পীদের আক্ষেপ, গত এক দশক ধরে তাঁরা ব্লক প্রশাসনের কাছে সরকারি ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বহু আবেদন জানিয়ে সে ভাবে সাড়া পাননি। এর পাশাপাশি, মাটির তৈরি নানা সামগ্রী বিক্রি করার জন্য এক বিপণন কেন্দ্র চালু করার আর্জি জানানো হলেও এ যাবৎ কোনও লাভ হয়নি। সরাসরি খোলা বাজারে বিক্রির সুযোগ না পেয়ে পাইকারদের কাছে কম দামে প্রদীপ, প্রতিমা সহ নানা সামগ্রী তাঁরা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে শিল্পীদের অভিযোগ।
মৃৎশিল্পী বিমল পাল ও ভৈরব পাল বলেছেন, “এখন যা পরিস্থিতি তাতে শীঘ্রই সমস্ত মৃৎশিল্পীই এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হবেন। সরকারি গাফিলতি ও উদাসীনতাই মৃৎশিল্পকে অচিরেই ধ্বংস করবে।” সুভাষগঞ্জ উত্তর পালপাড়ায় বছর তিনেক আগেও এক হাজার মৃৎশিল্পীর বসবাস থাকলেও বর্তমানে তা কমে এসে ৮০০ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন, গত বছর এক ট্রাক্টর মাটির দাম ১৮০০ টাকা ছিল। এ বছর তা বেড়ে তিন হাজার টাকা হয়েছে। কেজি প্রতি রঙের দাম ১২০০ টাকা থেকে বেড়ে হাজার দুয়েক টাকা হয়েছে। পঙ্কজ পাল ও অনুপ পাল বলেন, “আমরা প্রতিমা, প্রদীপ সহ বিভিন্ন মাটির সামগ্রী তৈরি করে গত তিন বছর ধরেই কমবেশি লোকসানের শিকার হচ্ছি। সেই কারণেই বর্তমানে আমরা নাগপুরে ফেরিওয়ালার কাজ করি। পুজোর জন্য গ্রামে এসেছিলাম।” স্থানীয় কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য রিতু রক্ষিতের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্লক প্রশাসনকে এই সব সমস্যার কথা জানালেও স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি সুবিধা পাননি। রায়গঞ্জের বিডিও অমূল্যচন্দ্র সরকার বলেন, “মৃৎশিল্পীরা সরাসরি আমার সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানালে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.