পর্যটনের প্রভাবে বদলাচ্ছে চিলাপাতা
য়েক বছর আগেও পযর্টন কেন্দ্র বলতে চিলাপাতার জঙ্গলের সম্বল ছিল একটিমাত্র বনবাংলো। যার কারণে জলদাপাড়ার সান্নিধ্য থাকলেও পর্যটক টানতে চিলাপাতা কয়েক যোজন পিছিয়েই ছিল। যদিও গত কয়েক বছরে চিলাপাতার সেই ছবি বদলে গিয়েছে। ছ’বছর আগে দুটি বেসরকারি কটেজ তৈরি হয়। ঘটনাচক্রে, ওই বছরেই পর্যটকদের জঙ্গলে সাফারির অনুমতি মেলে চিলাপাতায়। তারপরেই বদল শুরু চিলাপাতার।
বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের টানে চিলাপাতায় পর্যটক বেড়েই চলেছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানেই জানা গিয়েছে। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজ্য সরকারের তরফেও সাম্প্রতিক কালে একাধিক রিসর্ট তৈরি করা হয়েছে চিলাপাতায়। পর্যটকদের জঙ্গল-সাফারি করানোর জন্য স্থায়ী বেকার যুবকদের গাইডের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “রাজ্য সরকার পর্যটকদের কাছে ডুয়ার্সকে আকৃষ্ট করতে উদ্যোগী হয়েছে।”
—নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চিলাপাতায় ১৭ কিমি রাস্তা ও বুড়িবাসরা নদীর উপর পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আন্দু, কুরমাই, উত্তর মেন্দাবাড়ি, বানিয়া বস্তি, মন্থরাম, কোদাল বস্তি, উত্তর চকোয়াখেতি, বং বস্তির মতো ৮টি এলাকায় ৪০টি কটেজ তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। বছর চারেক আগে বানিয়া জঙ্গলে গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’ ছবির শুটিং হয়। সেখানেও একটি কটেজ বানানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। পাশাপাশি বানিয়া নদীতে হাউস বোট তৈরি করে পর্যটকদের রাখার ব্যবস্থা-সহ এলাকার বাসিন্দাদের জন্য কমিউনিটি হল তৈরি হবে বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।
চিলাপাতা জঙ্গলে পর্যটকদের সাফারির জন্য বন দফতর দশটি জিপসির ব্যবস্থা করেছে। বাইসন, গন্ডার, হাতি, হরিণ, চিতাবাঘের সঙ্গে পর্যটকদের প্রায়ই সাক্ষাৎ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক নলরাজার গড় দেখার সুযোগও মেলে। জঙ্গরে ঘুরতে আসা সঙ্গীত শিল্পী মৈনাক মহলানবিশ বলেন, “কলকাতাতে থাকলেও আমি আদতে আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা। ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত এলাকা চিলাপাতা পর্যটনের মানচিত্রে যে ভাবে এগোচ্ছে। তা প্রশংসনীয়।”
কলকাতার বাসিন্দা বিশ্বনাথ রায়ের কথায়, “হাসিমারা থেকে চিলাপাতা আসার রাস্তা কিছুটা খারাপ। তবে এলাকার পরিবেশে খুব সুন্দর।” ট্যুর অপারেটরা জানিয়েছেন, পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী তোর্সা নদী থেকে পাথরচাটা ও বোরলি মাছ, কালো নুনিয়া চালের ভাতও মেনুতে রাখা হয়। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী গণেশ শাহ বলেন, “আগে রুজির জন্য কাঠের কেনা-বেচা করতে হতো। সেই সময় এলাকায় পর্যটক আসতে চাইত না। এখন কটেজ তৈরি করেছি। পর্যটকরা আসছে, রুজিও মিলছে।”
চিলাপাতা লাগোয়া কোদাল বস্তি এলাকায় বন দফতর হাতি সাফারি চালু করেছে। বর্তমানে এলাকার প্রায় ১০০টি পরিবার পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। বিনিয়োগ এসেছে বাইরে থেকেও। কলকাতার ব্যবসায়ী কৃষ্ণেন্দু দাস বলেন, “কটেজ তৈরি করেছি। কিছুদিনের মধ্যেই তা চালু হবে।” টুরিস্ট গাইড নীরেন কার্জি বা গাড়ি চালক স্বপন অধিকারীরা বলেন, “পর্যটন ব্যবসা বাড়ায় প্রায় সারা বছরই কাজ পাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.