আমানতকারীদের বিক্ষোভের জেরে রবিবার বন্ধ হয়ে গেল বর্ধমান সনমার্গ নামে একটি লগ্নি সংস্থার এজেন্টদের সন্মেলন। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেলে।
বর্ধমান সনমার্গ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বর্ধমানের গুডস্শেড রোডের লায়ন্স ক্লাবে ওই অথলগ্নি সংস্থার এজেন্টেদের সম্মেলন হচ্ছিল। আলোচনার বিষয় ছিল আমানতকারীদের টাকা ফেরত ও এজেন্টদের ভবিষ্যত। সম্মেলনের খবর পেয়েই বর্ধমানের নানা এলাকা থেকে ওই লগ্নি সংস্থার প্রচুর আমানতকারী চলে আসেন। তাঁরা এজেন্টদের ঘেরাও করে টাকা ফেরতের দাবি জানাতে থাকেন। এজেন্টরা আমানতকারীদের বলেন, সংস্থার অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যরূপ ভৌমিক তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখছেন না। ফোনও ধরছেন না। আমানতকারীরা জানান, তাঁদের টাকাও এই সংস্থায় পড়ে রয়েছে। এরপর গোলমাল বাড়তেই এজেন্টরা পালিয়ে যান। |
এজেন্টদের ঘিরে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র। |
মশাগ্রামের বাসিন্দা আমানতকারী সঞ্জয় হাজরা বলেন, “এই লগ্নি সংস্থায় আমার লাখখানেক টাকা জমা রয়েছে। টানা পাঁচ মাস ধরে সেই টাকা ফেরতের ব্যাপারে কিছুই জানতে পারছি না। কখনও শুনছি মশাগ্রামে শিবির খুলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আবার কখনও শুনেছি গলসিতে। তাই বর্ধমানে এজেন্টদের সন্মেলন হচ্ছে জানতে পেরে ছুটে আসি। কিন্তু ওঁরা টাকা ফেরতের ব্যাপারে কোনও উত্তর না দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন।”
আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ক্রমাগত চাপে এজেন্টরাও সমস্যায়। ওই লগ্নি সংস্থার এজেন্ট রিন্টু মন্ডল জানান, তিনি প্রায় ৭০ জন আমানতকারীর সাত লক্ষ টাকা সংস্থায় জমা দিয়েছেন। সবগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেই টাকা কবে, কীভাবে ফেরত দেওয়া সম্ভব সেই নিয়েই আজকের আলোচনা ছিল। আর এক এজেন্ট অপর্ণা দত্ত বলেন, “আমানতকারীরা বাড়িতে এসে টাকা ফেরতের চাপ দিচ্ছেন। নিজের গয়না বিক্রি করে কিছু টাকা ফেরত দিয়েছি। এই ভাবে আর কতদিন চলবে, সেই প্রশ্ন নিয়েই আজ এসেছিলাম।”
উল্লেখ্য, লগ্নি সংস্থা সারদা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে গত এপ্রিল মাস থেকে এই লগ্নি সংস্থার কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমানতকারীদের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বর্ধমানের ঢলদিঘির কাছে অবস্থিত টক অব দি টাউনে থাকা এই লগ্নি সংস্থার মুখ্য কার্যালয় সিল করে দিয়েছে। তার আগেই অবশ্য সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যরূপ ভৌমিক গা-ঢাকা দিয়েছিলেন বলে এজেন্টদের অভিযোগ। |