লক্ষ্মীপুজো পেরোনোর পরেও সব্জির দাম আকাশছোঁয়া। রবিবার দুর্গাপুরের নানা বাজারে ঘুরে অন্তত এমনটাই দেখা গেল।
কলকাতার বিভিন্ন বাজারে এনফোর্সমেন্ট বিভাগের অভিযান চলার পরে ক্রেতাদের অনেকেই ভেবেছিলেন জেলার বাজারেও এর কিছুটা প্রভাব পড়বে। দুর্গাপুরে এখনও অভিযান না হলেও জেলার নানা বাজারে সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান শুরুও হয়েছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, পকেট ভর্তি টাকাতেও বাজারে সব্জির থলি ভর্তি করা যাচ্ছে না। ক্রেতারা জানান, দুর্গাপুজোর আগের দিন বেগুনের দাম কেজি প্রতি একশো ছুঁয়েছিল। লক্ষ্মীপুজোর আগে তা ছিল ৭০ টাকা। রবিবারও সেই এক দামই রইল। |
রবিবার সকালে সেন মাকের্টের পাইকারি বাজারে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
দুর্গাপুরের খুচরো সব্জি বাজারগুলির অন্যতম ইস্পাত নগরীর চণ্ডীদাস বাজার। রবিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বেগুনের দর কেজি প্রতি ৭০ টাকা। ছোট ফুলকপির দাম ২০ টাকা। বড় কপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। সিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। বাঁধাকপি ৩০ টাকা কেজি। পটল ৪০ টাকা কেজি। সিটি সেন্টারের ডেলি মার্কেটে টম্যাটো বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। লাউয়ের দাম প্রতি কেজি ৩০ টাকা। লঙ্কা ৬০ টাকা কেজি। বাজার সেরে বেরোনোর পথে নন কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা শ্যামসুন্দর চট্টোপাধ্যায় বললেন, “বাজার আগুন। নিভবে কি করে কেউ জানে না!” তখনই থলি হাতে বাজারে ঢুকছিলেন অম্বুজা এলাকার রীতেশ বসুঠাকুর। তিনি বললেন, “মনে হচ্ছে বাজারের উপর প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রন নেই।” আর এক ক্রেতার অনুমান, “আসলে বৃষ্টির চোটে ফসল নষ্ট হয়েছে। তারই প্রভাব পড়েছে বাজারে।”
কিন্তু পাইকারি বাজারে সব্জির যথেষ্ট জোগান থাকা সত্বেও খুচরো বাজারে এত দাম কেন? পরিস্থিতি জানতে দুর্গাপুরের প্রধান পাইকারি বাজার স্টেশন লাগোয়া সেন মার্কেটে গিয়েও দেখা গেল, সব্জির জোগান খুব একটা কমেছে এমনটা নয়। তবে পুজোর সময়ে বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব তো পড়েইছে। চাকদহ থেকে লঙ্কা নিয়ে সেন মার্কেটে রোজকার মতো এসেছিলেন শঙ্কর রায়। তিনি বললেন, “বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়নি তা নয়। তবে খুব বেশি নয়।” দুর্গাপুর ছাড়াও সংলগ্ন এলাকার পাইকারি বিক্রেতা রমেশ সাউ বললেন, “স্বাভাবিকের থেকে জোগান সামান্য কমেছে।” খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, পাইকারি হারে কিনলে অধিকাংশ সব্জিতেই কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা দাম কম পড়ছে। কিন্তু খুচরো বাজারের সঙ্গে দামের এত তারতম্য কেন? সেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানালেন, পাইকারি বাজার থেকে খুচরো বাজারে যাওয়ার পথে হাতবদল হয়। তখন কিছুটা দাম বাড়ে। এরপর খুচরো ব্যবসায়ীরা লাভ রাখেন। সবমিলিয়ে দামের পার্থক্য হয়ে যায়। |