মন মিলান্তি

দু’জনেই তো দুর্গাপুজোয় কলকাতায় ছিলেন না। কোথায় গিয়েছিলেন?
গৌরব: এ বারের পুজোটা কলকাতায় কাটানো হল না। বন্ধুরা মিলে গোয়ায় গিয়েছিলাম।

বন্ধুরা? অনিন্দিতা, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রাশিস রায় তো কলকাতায় ছিলেন? মানে শুধু আপনারা দু’জন গিয়েছিলেন?
ঋধিমা: হ্যাঁ, ওদের কাজ পড়ে যাওয়ায় লাস্ট মোমেন্টে যাওয়া ক্যানসেল করে।
গৌরব: বেশ ঝগড়াও হয়েছে তাই নিয়ে ওদের সঙ্গে। আরও বন্ধুরা ছিল। শুধু আমি আর ঋধিমা যাইনি।

আচ্ছা, এ বার সরাসরি প্রশ্নটা করি, বিয়েটা কবে করছেন?
গৌরব: এই রে, এটা কোথা থেকে এল!

এত রাখঢাকের কী আছে? আপনাদের সম্পর্কের কথা এখন তো আর ‘ওপেন সিক্রেট’ও নয়, পুরোপুরি ওপেন। সবাই জানে। একসঙ্গে ছাড়া কোথাও দেখা যায় না আপনাদের দু’জনকে...
গৌরব: না, না, না। বিয়েটিয়ের কথা এখন একদম ভাবছি না। আসলে বিয়ে করার মতো ম্যাচিওরিটিই হয়নি আমাদের।
আর ‘একসঙ্গে দেখা’র কথা যেটা বললেন, সেটা নিশ্চয়ই ফিল্ম পার্টির কথা। ওখানে যাওয়াটা কিন্তু বন্ধু হিসেবে। একজন বন্ধুর অন্য জনকে সাহায্য করা। ঋধিমার ফিল্ম হলে যাই। সাহেব (ভট্টাচার্য)-য়ের সিনেমা হলে, সেখানেও যাই। ইন্দ্রাশিস (রায়)-য়ের ছবি হলেও তাই। আমাদের গ্রুপের কারও সিনেমা রিলিজ করলে সেখানে সাপোর্ট করতে যাবই।

কিন্তু সেই গ্রুপ থেকে তো একজন সরে গেলেন।
গৌরব: কার কথা বলছেন?

মিমি চক্রবর্তী। ‘গানের ওপারে’র সময় তো উনিও আপনাদের গ্রুপে ছিলেন...
গৌরব: এ নিয়ে আমি কোনও কমেন্ট করব না।
ঋধিমা: আমি জানি না, এই খবরটা কোথা থেকে এল যে, আমার সঙ্গে মিমি-র ঝামেলা। আমি শুনেছি কথাটা। বাট ইট’স ভেরি স্টুপিড। এটা ঠিক যে, আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নেই। কিন্তু আমি এত ছোট হতে পারব না যে, সে কথা বলে পাবলিসিটি নেব।
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
অনেকের ধারণা, মিমি-র বিগ লিগে ঢুকে পড়াই তার কারণ...
ঋধিমা: কীসের বিগ লিগ! আমি লিগ-টিগ বুঝি না। আমি ইন্ট্রোভার্ট নই। কিন্তু দেখা হলেই গায়ে পড়ে হাই-হ্যালো করতে পারি না। ক্লোজ বন্ধুদের সঙ্গে হইচই করি, আড্ডা মারি। সেটা শ্যুটিং ফ্লোর হোক কি পার্টি।
গৌরব: একদম তাই। আর আমার মনেও হয় না, আমাদের জেনারেশনের কেউ বিগ লিগে আছে। আমি যে ধরনের ছবি করি, তাতে তো বিগ লিগ বলতে আমার পরমব্রতদা, আবিরদা’দের মনে হয়।

আবির চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করলেন তো ‘আসব আরেক দিন’য়ে।
গৌরব: হ্যাঁ, ২৫ অক্টোবরে রিলিজ করবে ছবিটা। খুব মজা করেছি শ্যুটিংয়ে। আসলে শ্যুটটা কিন্তু দু’বছর আগে হয়েছিল। আমার প্রথম সিনেমা ‘রং মিলান্তি’তে প্রথম ঋধিমার সঙ্গে কাজ করি। ঋধিমা তখন ভেটারেন...
ঋধিমা: কী!
গৌরব: চার-পাঁচটা ছবি তো হয়ে গিয়েছিল তখন।
ঋধিমা: ওকে...
গৌরব: যেটা বলছিলাম, তার পর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ল্যাপটপ’-য়ে একসঙ্গে কাজ করি। তাতে ঋধিমার বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অরিন্দম শীল, যিনি ‘আসব আরেক দিন’য়ের কো-প্রোডিউসর। আমাদের ‘পেয়ার’টা নিশ্চয়ই ওঁর ভাল লেগেছিল। আর এই ছবিতে আবিরদা, স্বস্তিকাদি-র সঙ্গে অভিনয় করা তো একটা এক্সপিরিয়েন্স। দেখুন, আমরা তো এখনও অভিনয় শিখছি। সেখানে এদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি। সব থেকে বড় কথা ওরা কখনও বুঝতে দেয়নি, আমরা সবে নভিস। তাই ‘লিগ’ নিয়ে ভাবছি না। আসল স্টারদের শো অফ করতে হয় না।
ঋধিমা: (হাসি) সেটাই। স্বস্তিকাদি তো আমার সঙ্গে মেকআপ ভ্যান পর্যন্ত শেয়ার করেছে। রূপা (গঙ্গোপাধ্যায়)দি ইজ লাইক মম অন দ্য সেট।

আচ্ছা, দু’জনেরই তো বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল ইন্ডাস্ট্রিতে। নিজেদের কাজ নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট আপনারা?
ঋধিমা: (একটু ভেবে) একদম সন্তুষ্ট নই। নট হ্যাপি, অ্যাট অল। অনেক ছবি করতে চেয়েছি, করা হয়নি। যেগুলো করেছি, সেগুলোতেও যে নিজের কাজে সন্তুষ্ট তা নয়। আমার ইন্সপিরেশন রণবীর কপূর। (হাসি) কাজের ক্ষেত্রে আমি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কাজ করতে পছন্দ করি। স্ক্রিপ্টটা হয়তো আগে পড়ে নিলাম। ভাল করে পড়ে নিলাম। কিন্তু অভিনয়ের ব্যাপারে আমি পুরোটাই সহ-অভিনেতাদের ওপর নির্ভর করি। আমি নিজে চরিত্রটা নিয়ে খুব ভাবলাম। কিন্তু বিপরীতে যে আছে, সে কিছু চিন্তাই করল না। সেটা তো হতে পারে না। আলটিমেটলি সিনেমা ইজ আ কোলাবরেটিভ ওয়ার্ক। সবাই মিলে ঠিকঠাক করলে তবেই ক্লিক করবে। না হলে নয়। এই ক’বছরে অনেক অভিজ্ঞতাই তো হয়েছে। অনেক সময় কো-অ্যাক্টর চেষ্টা করেছে ইচ্ছা করে ওভারশ্যাডো করতে...

সেটা কেমন?
ঋধিমা: প্লিজ, আমি নাম করতে পারব না। তবে অনেক বার হয়েছে। সে সব কোপ-আপ করতে শিখেছি। সামক দাভরের ক্লাস করেছি। আগেই ওড়িশি শিখেছিলাম। স্টেজে পারফর্ম্যান্স করে পাওয়া আত্মবিশ্বাসটা অভিনয়ে কাজে লাগাই।

গৌরব, আপনি?
গৌরব: সন্তুষ্ট আমিও নই। একটা ছবিতে যদি ছ’টা সিন থাকে, হয়তো তার দু’টো আমার ভাল লাগল, তার বেশি না। আমি এফটিআইআই-এ এডিটিংয়ের কোর্স করেছিলাম। বাবা (সব্যসাচী চক্রবর্তী) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষায় একদম একমত নন। বলেন, অভিনয় কেউ শেখাতে পারে না, অভিনয় শিখতে হয়। আমারও তাই মনে হয়, ক্লাসে যা শিখেছি, তার থেকে হাজারগুণ বেশি শিখেছি নাটকে। ‘চার্বাক’য়ে।

আরও সুবিধা বাড়িতে যদি সব্যসাচী-মিঠু চক্রবর্তীর মতো অভিনেতা থাকেন...
গৌরব: অবশ্যই সুবিধার। অনেকে বলে অভিনেতার ছেলে-মেয়ে হওয়া অসুবিধা। সব সময় বাড়তি চাপ থাকে। বাবার সঙ্গে তুলনা... এই সব। আমি সেটা পুরোপুরি মানি না। আরে ওটা তো একটা প্রিভিলেজ। হ্যাঁ, প্রিভিলেজ উইথ আ পিন্চ অব প্রেশার। কিন্তু সুবিধা তো বটেই।
ঋধিমা: (হেসে) আমার তো সে প্রিভিলেজ ছিল না...

কিন্তু আপনাদের দু’জনেরই প্রিভিলেজ ছিল, প্রথম অডিশনেই গাড়ি করে যাওয়ার স্বাচ্ছন্দ্য।
ঋধিমা: (হেসে) কিন্তু ওয়েল টু ডু পরিবার থেকে আসাটা অভিনয়ে কেন প্রিভিলেজ হবে। জানেন, কত বার ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছি আমি! আমি ঠিক করেছিলাম অভিনয়ই করব। কিন্তু প্রথম প্রথম যখন কোনও সুযোগ আসত না, মাসের পর মাস বসে থাকতাম সুযোগের অপেক্ষায়। কখনও কখনও মনে হত আমার দ্বারা আর হবে না। বাট অল’স ওয়েল দ্যট এন্ডস্ ওয়েল। এত বছর তো সারভাইভ করে গেলাম। আমি তো ছেড়ে চলে যাইনি। আপনি শুরুতে বলছিলেন না ‘বিগ লিগ’য়ের কথা। আমার সত্যি তাতে কিছু এসে যায় না। স্টার হওয়ার বদলে আমি ভাল অভিনেত্রী হতে চাই।
গৌরব: আমার অবশ্য রেকগনিশন পেতে খারাপ লাগে না। রাস্তায় বেরোলাম আর লোকে চিনল। ডেকে বলল, সে আমার ফ্যান। ভালই লাগে।
ঋধিমা: বলি ওই কথাটা?
গৌরব: ধুর্, বাজে কথা।
ঋধিমা: বাজে কথা! জানেন, ‘আসব আরেক দিন’য়ের শু্যট চলছিল সেন্ট জেভিয়ার্সে। আমি ওয়াশরুম থেকে বেরোতেই গোটা কয়েক মেয়ে এসে আমাকে ভার্বালি অ্যাবিউজ করে গেল। কারণ আমি গৌরবের সঙ্গে অভিনয় করি।

গৌরবকেও নিশ্চয়ই ছেলেদের কাছে একই কথা শুনতে হয়?
গৌরব: হয়ই তো। আমি তো শুনি ঋধিমা আর আমাকে একেবারে মানায় না। ঋধিমা অসাধারণ সুন্দরী আর আমি ‘সো সো’। রাস্তাঘাটে শুনছি। ফেসবুক-ইন্সটাগ্রামে কমেন্ট দেখছি। অসহ্য!

সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড হলে এ তো সহ্য করতেই হবে?
ঋধিমা: প্লিজ, আবার ইন্টারভিউয়ের ফার্স্ট বেসে ফিরবেন না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.