ডেঙ্গি নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষার কিট অপ্রতুল থাকায় আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়রা। ডুয়ার্সের বিভিন্ন বনবস্তি ও চা বাগান লাগোয়া এলাকা থেকে জ্বর নিয়ে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেকেই। অথচ হাসপাতালে ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষার কিট সরবরাহ না থাকায় বেশি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে তাদের ওই পরীক্ষা করাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ অক্টোবর থেকে কিট নেই হাসপাতালে। তাতে হাসপাতালে ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। মাঝে গত শুক্রবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে মাত্র ৫০টি কিট ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা জন্য দেওয়া হয়। যে সমস্ত রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছিল তা করতেই ওই কিট শেষ হয়ে যায় শনিবারই। আলিপুরদুয়ার মহকুমার সহকারি মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক তথা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দীনেশ বিশ্বাস বলেন, “গত এক মাসে মহকুমায় ২২ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবানু পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে ৩ জন মহিলা ও ২ জন পুরুষের রক্তে ডেঙ্গির জীবানু মিলেছে। হাসপাতালে আরও প্রায় ৭ জন ভর্তি রয়েছেন। যাদের ডেঙ্গির হয়েছে কি না পরীক্ষা করা দরকার। কিট না থাকায় অনেকেই বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন। বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্তাদের জানিয়ে কিট আনানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হাসিমারা, কুমারগ্রাম এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গি রুখতে সচেতনতামূলক প্রচার এবং মশা মারতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। কুমারগ্রামের ময়না বাড়ির বাসিন্দা বদ্রী প্রসাদ শর্মা জানান, দুদিন আগে তাঁর মা রেনুকুমারী শর্মা ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার সকালে তাঁর কাকিমা নারায়ণী শর্মা-ও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অথচ কিট না থাকায় তারা সমস্যায় পড়েন। বাইরের একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি থেকে বাধ্য হয়ে তাদের রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়েছে। দু জনের রক্ত পরীক্ষা করাতে তাদের ১৭০০ টাকা লেগেছে। অথচ হাসপাতালে কিট থাকলে বাইরে থেকে টাকা খরচ করে পরীক্ষা করাতে হত না। বিশেষ করে গরিব পরিবারের বাসিন্দাদের অনেকেই বাইরে থেকে ওই টাকা খরচ করে রক্ত পরীক্ষা করাতে সমস্যায় পড়েছেন। তা ছাড়া পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলির একাংশ এ ভাবে মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায় করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কেন দেখা হচ্ছে না তা নিয়েও বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন। |