হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষুব্ধ গৌতম
বৃদ্ধাবাসে নিগৃহীত দম্পতিকে হাসপাতালে অস্বাস্থ্যকর পরিবশে রাখার দৃশ্য দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ওই দম্পতিকে দেখতে যান মন্ত্রী। মহিলা মেডিসিন বিভাগে ভর্তি নিগৃহীতা মমতা নাগকে যেখানে রাখা হয়েছে সেই ঘর ঝুল-কালিতে ভরা। অবিলম্বে তা পরিষ্কার করতে ভারপ্রাপ্ত সুপারকে নির্দেশ দেন গৌতমবাবু। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগায়ো একটি বৃদ্ধাবাসের আবাসিক সমরেশ নাগ এবং তাঁর স্ত্রী মমতাদেবীকে তাঁদের ঘরে ঢুকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। তাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এড ফোরামের সদস্য এবং পরিচিত এক ব্যক্তি গিয়ে তাঁকে বৃদ্ধাবাস থেকে উদ্ধার করে গত সোমবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। মেডিসিন বিভাগে পুরুষ এবং মহিলাদের ওয়ার্ডে তাঁদের রাখা হয়েছে।
দম্পতির সঙ্গে কথা বলা সেরে ওয়ার্ড থেকে বার হওয়ার মুখে তাঁর কাছে যান রোগীর আত্মীয়দের কয়েকজন। মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে পরে কথা বলবেন জানালে তাঁরা মানতে চাননি। তাঁদের কথা শুনেই মন্ত্রীকে যেতে হবে বলে দাবি করেন। এর পর মন্ত্রী তাঁদের কথা শুনতে চাইলে গুলুমনি বিবি জানান, তাঁর ভাইঝি মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। কিন্তু ওয়ার্ডের শৌচাগারের আবর্জনার স্তূপ জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ওয়ার্ডময় আবর্জনা।
মন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন রোগীর পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্গন্ধে ওয়ার্ডে রোগীরা খেতে পারেন না। অভিযোগ শুনে মন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ভারপ্রাপ্ত সুপার শেখররঞ্জন বসু জানান, ওয়ার্ড পরিষ্কার রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বৃদ্ধাবাসে কী ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে তা তুলে ধরেন ওই দম্পতি। তাঁদের সঙ্গে কথা সেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সেখানে আসা বৃদ্ধাবাসের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসকের প্রতিনিধি হিসাবে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত জেলাশাসকও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, “মহকুমাশাসক একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত করিয়েছেন। জেলাশাসকের নির্দেশে ইতিমধ্যেই সমাজ কল্যাণ দফতর তদন্ত করেছে। পুলিশেও এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশের তরফেও আলাদা করে যাতে তদন্ত করা হয় সে জন্য পুলিশ কমিশনারকে বলব। অতিরিক্ত জেলাশাসকের তরফেও আলাদা করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বৃদ্ধ দম্পতির চিকিৎসা ব্যবস্থায় যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। বৃদ্ধাবাসে আরও আবাসিক রয়েছেন। তাই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সুষ্ঠুভাবে কী ভাবে বৃদ্ধাবাস চালানোর যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
মন্ত্রীকে নিগৃহীত দম্পতি এ দিন জানিয়ে দেন, কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়েই তিনি একটি ফোন ব্যবহার করতেন। বৃদ্ধাবাসে অন্যায়, আপত্তিকর কিছু দেখলে কর্মকর্তাদের একাংশ তাঁকে জানাতে বলেছিলেন। সম্প্রতি এক মহিলা কর্মীর সঙ্গে কর্মকর্তাদের একজন এবং কর্মীদের একাংশের সম্পর্ক নিয়ে তিনি ফোনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তার জেরে লাঠিসোটা-সহ লোকজন নিয়ে ওই দম্পতির ঘরে এক কর্মকর্তা চড়াও হন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, গালিগালাজ করা, ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় এমনকী বৃদ্ধাবাস ছেড়ে চলে যেতে বলে হুমকি দেওয়া হয়। বৃদ্ধাবাসের সদস্য জয় সিংহ কুণ্ডলিয়া জানান, বৃদ্ধাবাসে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার অনুমতি নেই। কারও প্রয়োজন থাকলে বৃদ্ধাবাসের ফোন থেকে তাঁরা কথা বলতে পারেন। তা ছাড়া ওই দম্পতির ব্যবহারও ঠিক নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.