পাকিস্তান
পোলিও বাড়ছে তালিবান
বিরোধিতার জেরে
পোলিও মুক্ত দুনিয়ার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। প্রথম দিকে কিছু বাধা পেলেও পরে নিজের ছেলে-মেয়েকে টিকা খাওয়াতে নিয়ে আসতেন বহু বাবা, মা-ই। কিন্তু বিপদ ঘনাল একেবারে অন্য দিক দিয়ে। কাউকে পোলিওর টিকা খাওয়ানো যাবে না, এমনই ফতোয়া জারি করেছে তালিবান। ফলে তালিবান অধ্যুষিত পাকিস্তানে হু হু করে বাড়ছে পোলিওয় পঙ্গু শিশুর সংখ্যা।
আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তর ওয়াজিরিস্তান প্রদেশ। তালিবান জঙ্গিদের রক্তচক্ষু এখানে এড়াতে পারে না কেউই। গত বছর জুনে তালিবান স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কোনও রকম টিকাকরণ চলবে না তাদের রাজত্বে। তার পর থেকেই দেশের নানা প্রান্তে স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর আক্রমণের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে এক লাফে। আর এই ফাঁক গলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যাও। বয়স দু’বছরও উতরোয়নি অথচ হাত-পা বেঁকে গিয়েছে এই ভয়াল রোগে, গত ছ’মাসে ওয়াজিরিস্তানে এই ছবিটা আর খুব অচেনা নয়।
বিভিন্ন দেশের কয়েকটি বড় শহরে কিছু দিন আগে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ফল নিঃসন্দেহে আশঙ্কার পারদ চড়িয়ে দিয়েছে, মেনে নিলেন আন্তর্জাতিক পোলিও দূরীকরণ সংস্থার কর্তা ইলিয়াস ডুরি। শুধু উপজাতি এলাকাতেই আর সীমাবদ্ধ নেই, ঘনবসতিপূর্ণ শহরেও নতুন করে মাথাচাড়া দিতে পারে এই রোগ। ডুরির কথায়, “খাবার বা জলের মাধ্যমে যত দিন এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে এবং আক্রান্ত এলাকায় আমাদের কর্মীরা ঢুকতে পারছে না তত দিন ভয়টা কিন্তু থেকেই যায়। এত দিন যতটা পথ হেঁটেছি, তার পুরোটাই ভেস্তে দিতে পারে এই তালিবানি ফতোয়া।”
২০১১ সালে মার্কিন সেনাদের গোপন অভিযানে নিহত হন আল-কায়দা সুপ্রিমো ওসামা বিন লাদেন। জঙ্গিদের সন্দেহ, টিকাকরণের নামে চর পাঠিয়েই ওসামার হদিস পায় আমেরিকা। তার পর থেকে এই ধরনের টিকাকরণ প্রকল্পকে পশ্চিমী দেশগুলোর চক্রান্ত হিসেবেই দেখে আসছে তালিবান। এ দিকে নিজেদের নতুন নতুন গবেষণার পরীক্ষাগার হিসাবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে বেছে নেওয়ার ভুরি ভুরি অভিযোগও রয়েছে পশ্চিমী দুনিয়ার বিরুদ্ধে। ফলে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের সরু সুতোয় ঝুলছে শত শত শিশুর ভবিষ্যৎ।
ইলিয়াস ডুরি জানিয়েছেন, পোলিওর মতো রোগের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালিয়ে এত দিন সাফল্য এসেছিল ভালই। ১৯৮৫ সালে গোটা বিশ্বে পোলিওয় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লক্ষ। গত বছর তা কমে দাঁড়ায় ২২৩। এ বছর অবশ্য ফের তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৬। এর মধ্যে শুধু পাকিস্তানেই খোঁজ মিলেছে তেতাল্লিশ জনের। তবে ছবিটা যে শিগগির বদলাবে, তেমন আশার কথা শোনাতে পারেননি পাকিস্তানের চিকিৎসক মহলও। শিশু-বিশেষজ্ঞ তারিক ভুট্টো জানিয়েছেন, “জঙ্গিরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরবে বলে মনে হয় না।” স্বাস্থ্যকর্মীদের ছোট ছোট দল এখনও এই সব উপজাতি এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করছে নিজেদের প্রাণের ভয় নিয়েই। তাদের বাড়িয়ে দেওয়া হাতে বাসিন্দারা বিশ্বাস রাখলেই খুলবে সমাধানের পথ, বিশ্বাস তারিকের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.