ডেভিড মোয়েসের সংসারে ‘আগুন’ কিছুতেই নিভছে না। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কোচের নতুন সমস্যা টিমের এক নম্বর স্ট্রাইকার রবিন ফান পার্সির চোট।
শনিবার সাউদাম্পটন ম্যাচে নামার ২৪ ঘণ্টা আগেও প্রথম একাদশে নিশ্চিত ছিলেন না ফান পার্সি। মোয়েস নিজেই বলেছিলেন, “পায়ের পাতা আর কাফ মাসলে চোটের সমস্যা রয়েছে রবিনের।” কিন্তু ‘রেড ডেভিলস’ তারকা ম্যাচে নামেন। গোলও করেন। ম্যাচটি যদিও জিততে পারেনি মোয়েসের ম্যাঞ্চেস্টার। দেজান লোভরেনের গোলে ম্যাচ ১-১ শেষ হয়।
কিন্তু ম্যাচ শেষে ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমের হেডলাইনে একটাই প্রশ্ন ছিল, তা হলে কি পুরো ফিট না হওয়া সত্ত্বেও ডাচ তারকাকে মাঠে নামানোর ঝুঁকি নিলেন মোয়েস? ঘনিষ্ট মহলে ফান পার্সি কিন্তু বলে দিয়েছেন তিনি পুরোপুরি ফিট নন। এখানেই থামেননি। মোয়েসের ট্রেনিং পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁকে বেশি দৌড় করানো হচ্ছে। তাতেই চোটের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। এমনটাই খবর ব্রিটিশ মিডিয়ার। তাই অনেকেই মনে করছেন গরগরে রাগ নিয়েই ম্যাচে নেমে গোলটা আসলে মোয়েসকে জবাব ফান পার্সির। |
জানুজাজের কোলে ফান পার্সি। শনিবার। ছবি: রয়টার্স।
|
ডাচ তারকার সতীর্থ ওয়েন রুনির কথাতেও কিন্তু মোয়েসের ‘হার্ড’ ট্রেনিংয়ের আভাস স্পষ্ট। “স্টাইল, ভাবনা-চিন্তা, আমাদের কাছে কী চান তিনি— সব দিক থেকে ট্রেনিংটা একেবারে আলাদা। সত্যি কথা বলতে খুব কঠিন ট্রেনিং। আমাদের প্রচুর দৌড়তে হয়,” বলেন রুনি। ডাচ কোচ রেমন্ড ভেরহেইজেন প্রাক মরসুম থেকেই মোয়েসের উপর এই নিয়ে খাপ্পা। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া আর এশিয়ায় যে ভাবে ফান পার্সিকে ট্রেনিং করানো হয়েছে। মোয়েস সিডনিতে বলেছিলেন, “আমরা রবিনের ফিটনেস বাড়ানোর জন্যই কঠিন ট্রেনিং করাচ্ছি।” এর পরই পায়ের পেশিতে চোট পান ফান পার্সি। ক্ষুব্ধ ডাচ কোচ যা দেখে বলেছিলেন, “এই পর্যায়ের ফুটবলেও এ সব প্রাগৈতিহাসিক ট্রেনিং পদ্ধতি কী ভাবে জায়গা পায় ভেবে অবাক হয়ে যাচ্ছি।”
কেরিয়ারের শুরু থেকেই চোট পাওয়ার প্রবণতা থাকলেও গত দু’বছরে অবিশ্বাস্য উত্থান ফান পার্সির। তার পিছনে চোট কাটিয়ে ওঠাটাই প্রধান কারণ। আর্সেনালের পর ও ম্যান ইউয়ে যোগ দিয়েও তাঁর ধারাবাহকতায় চিড় ধরেনি এত দিন। টানা ৯০টি প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে নামার পর ফান পার্সির এই অবিশ্বাস্য দৌড় শেষ হয় ঠিক ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বির আগে। কুঁচকিতে চোট পান তিনি। এই নিয়ে মোয়েসের সঙ্গে তাঁর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়। তাই সাউদাম্পটন ম্যাচের পর সম্পর্কটা আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
মোয়েসকে দেখে অবশ্য এ সব বোঝার কোনও উপায় নেই। ক’দিন আগে উঠতি তারকা আদনান জানুজাজকে ম্যান ইউয়ে ধরে রাখতে পারবে কি না, এ নিয়ে প্রচুর চাপ তৈরি হয়েছিল। এ দিন ম্যাচের আগে জানুজাজের সঙ্গে ম্যান ইউয়ের পাঁচ বছরের চুক্তি সইয়ের অনুষ্ঠানে মোয়েসকে হাসিমুখে পোজ দিতে দেখা যায়। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আঠারো বছর বয়সি উজ্জ্বল প্রতিভাকে মাঠেও নামান মোয়েস। |