|
|
|
|
|
যে বোলারকে স্লগ ওভারে গ্রিপ
শেখাতে হয়, তার এই হালই হবে
অশোক মলহোত্র |
|
দৃশ্যটা দেখে বেশ অবাক হয়ে গেলাম। টেস্ট, ওয়ান ডে মিলিয়ে যে ছেলেটার প্রায় ১২০-র উপর আন্তর্জাতিক ম্যাচে বল করার অভিজ্ঞতা আছে, তাকে বলের গ্রিপ ধরা শেখাচ্ছে ধোনি। এর পরেও আর ইশান্ত শর্মার দলে থাকার মানেটা কী?
আগের ম্যাচে সেই অসাধারণ জয় দেখার পর শনিবারও দিল্লিতে বসে যখন ভারতের আর একটা জয় দেখার কথা ভাবছিলাম, তখনও মনে অবশ্য একটা শঙ্কা ছিল। আমাদের বোলাররা আবার ডোবাবে না তো? আশঙ্কাটাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হল। কোহলির ওই একটা ওভারেই ১৮ রান নিয়েই উঠে দাঁড়ানোর অক্সিজেন নিয়ে নিল অস্ট্রেলিয়া। যখন অস্ট্রেলিয়ার ১৮ বলে ৪৪ দরকার, তখন ইশান্তের হাতে বল তুলে দিয়ে ধোনি যে ভুলটা করল, তারই খেসারত দিতে হল ম্যাচ শেষে। বিরাট কোহলির ওভারটা যদি অস্ট্রেলিয়ার জয়ের ট্রেলার হয়, তা হলে ইশান্তের সেই ওভারে ফকনারের চারটে ওভার বাউন্ডারি ও একটা বাউন্ডারিই ছিল পুরো ফিল্মটা। |
ধোনির ইনিংস কাজে লাগল না। |
যার ছ’বছরেরও বেশি হয়ে গেল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, তাকে স্লগ ওভারে এখন বল করা শেখাতে হবে! ওই সময়ে কোথায় বল রাখতে হয়, কী ভাবে বল করতে হয়, তা যদি এখন ইশান্তকে শেখাতে হয়, তা হলে বরং ওকে কিছু দিন বিশ্রাম দেওয়াই ভাল। যদিও ইশান্তের এ রকম ওভার দেখে আমি খুব একটা বিস্মিত নই। এমনটাই হওয়ার ছিল। ডেথ ওভারে ইশান্ত আগেও ডুবিয়েছে। ধোনি কেন ওকে এত দিন ধরে এত প্রশ্রয় দিয়ে আসছে, জানি না। তবে আমার বিশ্বাস, এর পর ইশান্তের কপালে দুঃখ আছে।
থাকবে না কেন বলুন তো? মহম্মদ সামি, জয়দেব উনাদকট মোহিত শর্মা, ঈশ্বর পাণ্ডে, অশোক দিন্দারা যেখানে বসে রয়েছে, সেখানে এমন ফর্মের বারোটা বেজে যাওয়া একজন পেসারকে দিনের পর দিন খেলিয়ে যাওয়া হবে, ভারতীয় ক্রিকেটের অবস্থা এতটা শোচনীয় নয় বোধ হয়। সত্যি বলতে, ভারতীয় বোলিং লাইন-আপের তিন প্রধান বোলারই এখন অফ ফর্মে। অশ্বিনেরও একই অবস্থা। ওকে বিশ্রাম দিয়েও তো অমিত মিশ্র, পরভেজ রসুলদের কাউকে খেলানো যেতে পারে। সব সময় উইনিং কম্বিনেশনই যে খেলাতে হবে, তার কোনও মানে আছে? এই ব্যাপারে ধোনির ধারণাটা ঠিক কী, আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। |
|
দুঃস্বপ্নের ছ’বল
(ইনিংসের ৪৮তম) |
ফুল লেংথ ওয়াইড ৪ শর্ট ৬ লেংথ ৬ শর্ট ২ শর্ট ৬ শর্ট ৬ |
লজ্জার তিন
• ভারতীয় বোলারদের মধ্যে এক ওভারে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়া (৩০, যুবরাজের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে)
• ওয়ান ডে কেরিয়ারে ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে ইশান্ত ওভার পিছু ৫.৩৩ রান দেন, শেষ ১০ ওভারে সেটা গিয়ে দাঁড়ায় ৭.৩৮ রানে।
• আইপিএলে একটা ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ড। ৪ ওভারে ৬৬। |
ইশান্তের শেষ ৬
• ১৯ অক্টোবর ২০১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া (মোহালি) ৮-৬৩-১, ইকনমি- ৭.৮৭
• ১৬ অক্টোবর ২০১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া (জয়পুর) ৯-৭০-০ ইকনমি- ৭.৭৭
• ১৩ অক্টোবর ২০১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া (পুণে) ৭-৫৬-১, ইকনমি- ৮.০০
• ১১ জুলাই ২০১৩ বনাম শ্রীলঙ্কা (পোর্ট অব স্পেন) ৮-৪৫-২, ইকনমি- ৫.৬২
• ৯ জুলাই ২০১৩ বনাম শ্রীলঙ্কা (পোর্ট অব স্পেন) ৪-১৭-২, ইকনমি- ৪.২৫
• ৫ জুলাই ২০১৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (পোর্ট অব স্পেন) ৭-৩০-২, ইকনমি- ৪.২৮ |
টু
ই
টা
র
স
র
গ
র
ম |
• ইশান্ত চুল বাড়িয়ে যাচ্ছে, আর গোটা দেশ মাথার চুল ছিঁড়ছে।
• অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য আগামী বছর অ্যালান বর্ডার পদক পাচ্ছে ইশান্ত।
• অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়রা তাদের ছেলেদের নাম দিক ইশান্ত। তা হলে ওদের কেউ মারবে না।
• মনে হচ্ছে ইশান্তের যত লাইন আর লেংথ সবই ওর মাথার চুলে!
• ইবে-তে ইশান্তকে নিলামে তুলুক ধোনি- “৬.৪ ফুটের বোলিং মেশিন যার মাথায় ঝাঁকড়া চুল।”
• তিনটে সম্ভাবনা আছে। পরের ম্যাচে ইশান্তকে ছেঁটে ফেলা হবে। সিরিজ থেকে ছেঁটে ফেলা হবে। হোটেলের ছাদ থেকে ছুড়ে ফেলা হবে। |
|
পুরনো খবর: ফুরফুরে থেকেও আজ ক্ষুধার্ত ভারত
|
ডেথ ওভারে বোলিং খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে: ধোনি
নিজস্ব প্রতিবেদন |
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ইশান্ত শর্মার হাতে ডেথ ওভারে বল তুলে এসেছিল জয়। পর পর দু’উইকেট তুলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন দিল্লির বোলার। কিন্তু চার মাস পর দেশের মাঠে ক্যাপ্টেনের ভরসা রাখতে পারলেন না দীর্ঘকায় ফাস্ট বোলার।
ইঙ্গিতটা অবশ্য জয়পুরেই দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ম্যাচের শেষে। “বোলিংয়ে উন্নতি করতে হবে। সমস্যা না মেটাতে পারলে পরে ভুগতে হবে।” কিন্তু কে জানত টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেনের আশঙ্কা পরের ম্যাচেই এ ভাবে সত্যি হয়ে উঠবে। জল ঢেলে দেবে তাঁর মারকাটারি সেঞ্চুরিতেও। যার জন্য ম্যাচ শেষে ধোনি বলেও ফেললেন, “শেষ কয়েকটা ওভারই ডুবিয়ে দিল। ডেথ ওভারে আমাদের বোলিং খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে। এটা ঠিক মাঠে শিশিরের ব্যাপারটাও ছিল। কিন্তু গত ম্যাচের মতো নয়। আন্তর্জাতিক ম্যাচে তো বোলারদের চামচ করে খাইয়ে দেওয়ার মতো সব বুঝিয়ে দেওয়া যায় না। নিজেকেই এগিয়ে আসতে হবে। কোন জায়গায় নিজের শক্তিটা সেটা বুঝতে হবে।” ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই দলের পারফরম্যান্সে তিনি কতটা হতাশ। তবে কিছুক্ষণ পরেই যা বললেন তাতে মনের ভাব বুঝতে সমস্যা হল না। “ব্যাটিংও আরও ভাল হতে পারত। এ রকম একটা পিচে আমরা ভাগ্যবান ৩০০-র বেশি তুলতে পেরেছি। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল ২৫০-৬০ হবে। শুরুটা মন্দ হয়নি। মাঝের ওভারগুলোয় জাডেজা দারুণ বল করেছে। তবে পার্ট টাইম বোলারদের আরও ভাল পারফর্ম করতে হবে,” বলেন ধোনি।
ম্যাচের সেরা জেমস ফকনার আবার বলেন, “শুরুটা খুব ধীর গতিতে করেছিলাম। তাই পরে মনে হয়েছিল জিততে গেলে কিছু একটা করতে হবে। ইশান্তের ওভারে এক বার মারা শুরু করার পর আর কিছু ভাবিনি।”
|
ভারত |
রোহিত ক ফিঞ্চ বো ওয়াটসন ১১
ধবন ক হাডিন বো ম্যাককে ৮
কোহলি ক হাডিন, বো ম্যাক্সওয়েল ৬৮
রায়না ক ওয়াটসন, বো জনসন ১৭
যুবরাজ ক হাডিন বো জনসন ০
ধোনি ন. আ. ১৩৯
জাডেজা ক হাডিন বো জনসন ২
অশ্বিন ক হাডিন বো জনসন ২৮
ভুবনেশ্বর ক বেইলি বো ফকনার ১০
বিনয় রান আউট ০
ইশান্ত ন.আ. ০
অতিরিক্ত: ২০
মোট: ৫০ ওভারে ৩০৩-৯
পতন: ১৪, ৩৭, ৭৬, ৭৬, ১৪৮, ১৫৪, ২৩০, ২৬৭, ২৯৯
বোলিং: জনসন ১০-১-৪৬-৪, ম্যাককে ১০-০-৪৯-১,
ওয়াটসন ৮-০-৭৪-১
ফকনার ১০-০-৬৫-১,
ডোহার্টি ১০-০-৪৫-০,
ভোজেস ১-০-৩-০, ম্যাক্সওয়েল ১-০-৮-১
|
অস্ট্রেলিয়া |
হিউজ ক ধোনি বো বিনয় ২২
ফিঞ্চ এলবিডব্লিউ ইশান্ত ৩৮
ওয়াটসন এলবিডব্লিউ জাডেজা ১১
বেইলি এলবিডব্লিউ বিনয় ৪৩
ভোজেস ন. আ. ৭৬
ম্যাক্সওয়েল রান আউট ৩
হাডিন ক জাডেজা বো ভুবনেশ্বর ২৪
ফকনার ন. আ. ৬৪
অতিরিক্ত: ২৩
মোট: ৪৯.৩ ওভারে ৩০৪-৬
পতন: ৬৮, ৮২, ৮৮, ১৭১, ১৭৪, ২১৩
বোলিং: ভুবনেশ্বর ১০-১-৫০-১, বিনয় ৮.৩-০-৫০-২,
ইশান্ত ৮-১-৬৩-১
জাডেজা ১০-০-৩১-১, যুবরাজ ৩-০-২০-০,
অশ্বিন ৯-০-৫৮-০, কোহলি ১-০-১৮-০ |
|
|
|
|
|
|
|