প্লাস্টিক-বিরোধিতা বাসিন্দাদের, প্রচারে পুরসভাও
ব্যবসায়ীদের একাংশ লুকিয়ে-চুরিয়ে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ফেরানোর চেষ্টা করলেও এবার প্রতিবাদে সরব হলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দারাও। শনিবার বিধান মার্কেটে দেখা গেল এমনই দৃশ্য। আমজনতার চাপে শিলিগুড়ি পুরসভাও ফের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ চালু রুখতে অভিযানে নেমেছে। শুরু হয়েছে প্রচারও। এ দিন দিনভর বিধান মার্কেটের সব্জি, মাছ বাজার এলাকায় পুরকর্মীরা প্রচার চালান। ডি আই ফান্ড মার্কেটেও পুরকর্মীরা অভিযানে যান। সর্বত্রই বাসিন্দারা লাগাতার অভিযান চালানোর পক্ষে সায় দিয়েছেন। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “শিলিগুড়ির শুভবুদ্ধি সম্পন্ন বাসিন্দাদের সহযোগিতায় শহর প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ মুক্ত আগেই হয়েছে। এখন একটা চক্রান্ত চলছে। তা রুখতে লাগাতার অভিযান চলবে। শহরের পরিবেশ দূষিত হতে দেওয়া যাবে না।”
বিধান মার্কেটের অভিযানের পর অনেকটাই সচেতন হয়েছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁরা নিজেরা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে। তবে এখনও কিছু ব্যবসায়ী রয়েছেন যাঁরা লুকিয়ে ব্যবহার করে চলেছেন প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ। এ দিনও বিধান মার্কেটের কয়েকজন বিক্রেতার থেকে প্রায় ৬ কেজি প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করেন পুরকর্মীরা। এ দিন কাউকে জরিমানা করা হয়নি পুরসভার তরফে। শুধুমাত্র ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিলিগুড়ি শহরের নানা জায়গায় এখনও চলছে প্লাস্টিক ব্যবহার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
সোমবার থেকে বিধান মার্কেট-সহ অন্য বাজার গুলিতেও অভিযান করা হবে বলে জানান মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক। তিনি বলেন, “শনিবার আমাদের কর্মীরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করেছে। তবে এখনও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করে চলেছেন, তা আমরা মেনে নেব না। শহরে কোন ভাবেই আমরা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলবে না। এটা বেআইনি। রাজ্য সরকার শিলিগুড়িতে সব ধরনের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছে।” পাশাপাশি, তিনি জানান, শহরের বড় শপিং মলে কিন্তু বাসিন্দারা কাগজ ও কাপড়ের ব্যাগেই জিনিসপত্র নিচ্ছেন। তা হলে কেন পাড়ার দোকান, অন্যান্য বাজারে একই ভাবে কাপড়, কাগজের ব্যাগ ব্যবহার হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
শহরে ফের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ চালুর চেষ্টার কড়া সমালোচনা করেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলামও। তাঁর অভিযোগ, একদিকে নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত, তেমনই শহর জুড়ে বেড়ে গিয়েছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার। তাঁর অভিযোগ, “পুরসভায় ক্ষমতা দখলের জন্য কংগ্রেস-তৃণমূলের লড়াই দেখছেন শহরবাসী। এটাও বুঝতে পারছেন, ওই লড়াইয়ের জেরে পরিষেবা লাটে উঠতে চলেছে।” বিরোধী দলনেতার মতে, “প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ করার অভিযান নিয়মিত করা দরকার।”
বামেদের হটিয়ে পুরবোর্ডে দখল কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের হাতে যায়। কিন্তু, প্রথমে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস বোর্ড গঠন করে। সেই সময়ে পুরসভার লাগাতার অভিযানে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধের সরকারি নির্দেশিকা কার্যকর হয়। তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের বোর্ড তৈরি হওয়ার পরে পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করতে তিনিও উদ্যোগী হন। পরে সেই অভিযানও অবশ্য থমকে যায়।
এর পরে পুরবোর্ডে নানা টানাপোড়েনের সুযোগে শহরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ চালু করতে ব্যবসায়ী একটি অংশ আসরে নেমে পড়েন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল, রঞ্জন শীলশর্মারা পুরসভার ভূমিকার সমালোচনায় সরব হন। নানা মহলের চাপের মুখে পনে ফের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে পুরসভা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.