কাশ্মীরের ২৫টি জায়গায় গুলি চালালো পাক সেনা
ম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এক সঙ্গে ২৫টি জায়গায় গুলি চালালো পাকিস্তানি সেনারা। গত দশ বছরের মধ্যে যা বৃহত্তম সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন!
শুক্রবার রাতে সাম্বা জেলার নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় সেনাদের ২৫টি চৌকি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে পাক সেনাবাহিনী। ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই ভারতীয় জওয়ান। জবাবে পাল্টা গুলি চালায় বিএসএফ-ও। সেই গুলিতে এক অনুপ্রবেশকারী মারা পড়েছে। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ দু’পক্ষের মধ্যে গুলিযুদ্ধ শুরু হয়। চলে সারারাত। কাঠুয়া, হীরানগর, আরএস পুরা, রঙ্গপুর ও পরগওয়াল সেক্টর থেকে অনবরত গোলাগুলির খবর আসতে থাকে। পরিস্থিতি যাতে না আয়ত্তের বাইরে চলে যায় সকালে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’-এর প্রস্তাব দেয় বিএসএফ। আরএস পুরা সেক্টরের সুচেতগড় এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে এই বৈঠকও হয়। গুলিযুদ্ধে হত অনুপ্রবেশকারীর দেহ পাকিস্তানি সেনার হাতে তুলে দিতে চায় বিএসএফ। তবে সেই দেহ ফিরিয়ে নেয়নি পাক সেনা।
এ দিনই সাম্বার রামগড় সেক্টর থেকে সন্দেহভাজন এক পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেফতার করে বিএসএফ। বেশ কিছু পাকিস্তানি টাকা উদ্ধার হয়েছে তার কাছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ধৃত ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অন্য দিকে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছে খবর পেয়ে হান্দোয়ারার একটি গ্রাম ঘিরে তল্লাশি শুরু করেছে বিএসএফ।
কামানের গোলার ভগ্নাবশেষ হাতে কাশ্মীরের আর এস পুরার গ্রামবাসীরা। শনিবার পিটিআইয়ের ছবি।
শুক্রবারের ঘটনার পর বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেন, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখতে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সরকার। তিনি বলেন, “এটা শুধুমাত্র কূটনীতির বিষয় নয়। এতে জড়িত আছে সামরিক সম্পর্কের প্রশ্নও। আমাদের বাহিনীর ওপরে পুরো আস্থা আছে সরকারের।” একের পর এক সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনার পরেও সংযম না হারিয়ে জওয়ানরা যে ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন, তারও প্রশাংসা করেন খুরশিদ। তিনি জানান, খুব শিগগিরই দু’দেশের সামরিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেলদের বৈঠক ডাকা হচ্ছে। নিউ ইয়র্কে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক আলোচনাতেই এই বৈঠকটি হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ভারতে পাক হাই কমিশনার সলমন বশির এ দিন বলেন, সংঘর্ষবিরতি নিয়ে দু’দেশের চুক্তির প্রতি সম্পূর্ণ দায়বদ্ধ পাকিস্তান। দু’পক্ষের সামরিক বাহিনীর ডিজি-দের আসন্ন বৈঠক নিয়ে তিনি আশাবাদী।
এ ভাবে একের পর এক সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনায় দু’দেশের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তিনি বলেন, “আমি জানি না এ সব ঘটনার পিছনে ঠিক কার হাত রয়েছে। কিছু দিন আগেই নিউ ইয়র্কে ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসেছিলেন। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের সমস্যা মিটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।”
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকায় এই মুহূর্তে জঙ্গিদের প্রায় ৪০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চলছে। অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ৭০০ জঙ্গি। সুতরাং শীতে বরফ পড়ার আগে আরও কিছু সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে পারে। আগামী সপ্তাহেই শ্রীনগর যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে। ২২ অক্টোবর ওমর আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা তাঁর। বিএসএফ-এর এক অফিসার জানিয়েছেন, অনর্গল সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনায় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারীদের দৈনন্দিন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গোলাগুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের বাড়ি-ঘর। শিশুরা ভয় কুঁকড়ে থাকছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.