দুর্নীতির অভিযোগ এ বার ন্যাশনাল জুট ম্যানুফ্যাকচারার্স কর্পোরেশন (এনজেএমসি)-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আর সি তিওয়ারির বিরুদ্ধে। এনজেএমসি-র তরফেই এই অভিযোগ এনে তাঁর কাছে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে।
২০০৫ থেকে ২০১০ অবধি এনজেএমসি-র সিএমডি ছিলেন তিওয়ারি। ২০০৯-এর অক্টোবরে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক এনজেএমসি-র মোট ৬টি বন্ধ কারখানার মধ্যে ৩টি খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এগুলি হল উত্তর ২৪ পরগনার কিন্নিসন ও খড়দহ জুট মিল এবং বিহারে কাটিহারের রায় বাহাদুর হরজ্যোত মিল। অবসর নেওয়ার পর তাঁকে এই তিনটি কারখানার পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি উপদেষ্টার পদ থেকেও অবসর নেন। তার ঠিক আগে ২৩ সেপ্টেম্বর এনজেএমসি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তিওয়ারিকে চিঠিটি পাঠান ওই তিনটি চালু চটকলের চেয়ারম্যান সুব্রত গুপ্ত। প্রসঙ্গত, সুব্রতবাবু বর্তমানে জুট কমিশনারও।
চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, সিএমডি থাকাকালীন তিওয়ারি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। শ্রমিক, ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে সব রকম নিয়মকানুন প্রাক্তন সিএমডি লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মেরও অভিযোগ করা হয় চিঠিতে। তাঁকে জানানো হয়, চিঠির তারিখের পর ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগের জবাব দিতে হবে, নচেৎ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে অভিযুক্ত প্রাক্তন অফিসার তিওয়ারি চিঠি পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কোনও চিঠি পাইনি। তাই জবাব দেওয়ার প্রশ্নও উঠছে না।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে সিবিআইও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তদন্ত চালিয়েছিল। ২০০৮ সালে সিবিআই-এর পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে সেই মামলা থেকে সরে যায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে-কেউ তুলতেই পারেন। তার প্রমাণও তাঁকেই জোগাড় করতে হবে।”
এ দিকে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, এনজেএমসি-র ৬টি চটকলই পাকাপাকি ভাবে কেনার জন্য ১৬টি সংস্থা দরবার করেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়নগুলির প্রবল বাধায় তা সম্ভব হয়নি। এ বার ৩টি চটকল সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ হিসাবে চালানোর প্রস্তাব এলেও, তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য মন্ত্রকের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। পাটশিল্পের বড় ব্যবসায়ীদের একাংশ এ নিয়ে মন্ত্রকের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে প্রায়ই বৈঠক করছেন। সংশ্লিষ্ট শিল্প সূত্রের খবর, পুরোপুরি কেনা সম্ভব না-হলেও এনজেএমসি-র সম্পদ ৩০ বছরের দীর্ঘ মেয়াদি লিজে পাওয়া গেলেও লাভ। |