প্রাকৃতিক দুর্যোগে চাষ নষ্ট হওয়ায় বর্ধমানের গলসিতে এক ভাগচাষি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ করল তাঁর পরিবার।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মৃতের নাম শম্ভু রুইদাস (৪৬)। বাড়ি গলসি থানার ঘোষকামালপুর গ্রামে। তাঁর পরিবারের দাবি, কয়েক দিন আগে ঝড়-বৃষ্টিতে দু’বিঘা জমির আমন ধান নষ্ট হওয়ার পর থেকেই তিনি মনমরা হয়ে থাকতেন। শুক্রবার দুপুরে বাড়িতেই কীটনাশক খান। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও সেখানেই রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই আত্মহত্যা। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “কোনও চাষি আত্মহত্যা করলেই সেটা ফসল নষ্টের জেরে ঘটেছে, এমন মনে করার অর্থ নেই। আমাদের আমলে চাষিরা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্টের পরে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। পুলিশকে ঘটনার তদন্ত করে এই আত্মহত্যার সঠিক কারণ জানাতে বলা হয়েছে।”
মৃতের ছেলে পরেশ রুইদাস জানান, তাঁদের নিজেদের দু’বিঘা জমি রয়েছে। এ ছাড়া ভাগে আরও দু’বিঘা নিয়ে মোট চার বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করতেন শম্ভুবাবু। কিন্তু কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ফসলের বেশির ভাগটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় এক মহাজনের কাছে তাঁর প্রায় দশ হাজার টাকার দেনা ছিল। দুই মেয়ের বিয়ে না হওয়া নিয়েও বাড়িতে অশান্তি চলছিল।
পরেশের দাবি, সব মিলিয়ে অবসাদে ভুগছিলেন তাঁর বাবা। শুক্রবার বাড়িতে যখন কেউ ছিল না, তখনই তিনি কীটনাশক খান।
শনিবার বর্ধমানের পুলিশ মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। বর্ধমান থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলাও দায়ের হয়েছে। সিপিএম প্রভাবিত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলের দাবি, “ওই চাষির ভাইপো আমাদের সংগঠনের সদস্য। আমরা জেনেছি, শম্ভুবাবুর ধান কাটা হয়ে গেলেও তা মাঠেই ছিল। দুর্যোগে তা নষ্ট হয়ে যায়। সেটাই আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ।”
শম্ভুবাবু তাঁদের দলেরই সমর্থক ছিলেন দাবি করে গলসি-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাসুদেব চৌধুরী আবার বলেন, “আমরা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ওঁর পরিবারকে সাহায্যের চেষ্টা করছি। তবে ফসল নষ্টের জন্য এই ঘটনা ঘটেনি বলেই শুনেছি।” |