লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল অব্যাহত রাখল তৃণমূল। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আগামী ২১ অক্টোবর তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির সদস্যরা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কাছে নালিশ জানাতে যাবেন। পাশাপাশি বর্ধিত রেল ভাড়া প্রত্যাহার না করা হলে কালীপুজোর পরে তাঁরা জোরদার আন্দোলন করবেন বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন লোকসভার তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধিত রেল ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে এ দিন সুদীপবাবুর নেতৃত্বে কলেজ স্কোয়ার থেকে শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত মিছিলও হয়। মিছিলে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী-সহ দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ছিলেন।
বর্ধিত রেল ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে পুজোর ঠিক আগে, গত ষষ্ঠীর দিন দুপুরে শিয়ালদহ থেকে পূর্ব রেলের সদর দফতর ফেয়ারলি প্লেস পর্যন্ত মিছিল করেছিলেন সুদীপবাবুরা। লক্ষ্মীপুজোর ঠিক আগে এ দিন মিছিল করে সুদীপবাবুরা দাবি করেন, তাঁদের আন্দোলনের জেরেই রেল মন্ত্রক মেট্রো রেলের বির্ধিত ভাড়ার ব্যাপারে পুর্নবিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিনও শুভেন্দু বলেন, “আন্দোলন করে আমরা বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করাতে কেন্দ্রকে বাধ্য করব।”
মিছিলের পরে শিয়ালদহ স্টেশনে প্রতিবাদ সভায় সুদীপবাবু থেকে শুরু করে সুব্রতবাবু, শুভেন্দু দিল্লির সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। রাজ্যকে আর্থিক দিক থেকে বঞ্চনা করা হচ্ছে এবং বাম আমলের ঋণের বোঝা রাজ্যের উপর চাপিয়ে কেন্দ্র প্রতি বছর মোটা টাকা কেটে নিচ্ছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। সুদীপবাবু বলেন, “কেন্দ্র ওড়িশা, বিহারকে বিশেষ আর্থিক সুবিধা দিলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলাকে কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে? কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইব।” অবশ্য রাজ্যকে বঞ্চনার প্রতিবাদ যে দিল্লির কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাঁদের লোকসভা ভোটের আগে লড়াইয়ের হাতিয়ার তা স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল নেতাদের বক্তৃতায়। কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার একের পর এক জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত কার্যকর করার চেষ্টা করলে তৃণমূল পথে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। লোকসভা ভোটে দিল্লিতে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল যে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবে এ দিন ফের বলেন সুদীপবাবু।
মেট্রো ও রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে তৃণমূলের আন্দোলনকে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য পাল্টা অভিযোগ করেন, “ওঁরা সে দিন রেলকে না ডোবালে এখন ভাড়া বাড়াতে হত না। ভাড়া কমলে খুশি হব। কিন্তু যেটুকু বাড়ছে, তা রেলকে বাঁচানোর জন্য জরুরি। সাধারণ শ্রেণি ও স্লিপারে ভাড়া বাড়েনি।” তৃণমূলের এ ইআন্দোলনকে কটাক্ষ করে প্রদীপবাবু বলেন, “রাজ্য সরকারের হাসপাতালে রোগীরা যে প্রাপ্য ওষুধ পাচ্ছে না, বিদ্যুৎ, দুধের দাম, সবই যে বাড়ছে, এ সবের প্রতিবাদে রাস্তায় নামছে না কেন?”
|