|
|
|
|
খাদ্য সুরক্ষায় ভোট দিতে না পেরে
কেঁদে ফেলেন মা, বললেন রাহুল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আসন্ন লোকসভা ভোটে গ্রাম ও গরিবের ভোট পেতে খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পই যে কংগ্রেসের প্রধান হাতিয়ার, তা এখন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই সুরক্ষা প্রকল্পের খাবারের সঙ্গে আজ যেন কিছুটা আবেগও মিশিয়ে দিতে চাইলেন রাহুল গাঁধী। মধ্যপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা ভোটে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর প্রচার শুরুর মঞ্চ থেকে রাহুল আজ জানান, সংসদে খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ করানোর জন্য কী ভাবে নিজের অসুস্থতা উপেক্ষা করতে চেয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। অসুস্থতার কারণে শেষ পর্যন্ত বিলটির ভোটাভুটিতে অংশ নিতে না পারায় কী ভাবে তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন, সে কথাও আজ শ্রোতাদের সামনে বিশদে তুলে ধরেন রাহুল।
মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোট ২৫ নভেম্বর। তার আগে গ্বালিয়র থেকে সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দূরে আদিবাসী অধ্যুষিত শাদোলে আজ তাঁর প্রথম জনসভা করেন রাহুল। খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের প্রচারের জন্য এর থেকে অনুকূল জায়গা আর কী হতে পারে! বক্তৃতার গোড়াতেই তাই রাহুল টেনে আনেন সেই প্রসঙ্গ। বলেন, “খেতে না পাওয়া হতদরিদ্রদের যন্ত্রণা যে কতটা, তা আমার মা বোঝেন। সেই কারণেই খাদ্য সুরক্ষা আইন পাশের জন্য লড়াই করেছেন।” এ কথা বলেই লোকসভায় খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে ভোটাভুটির প্রসঙ্গ তোলেন রাহুল। সে দিনটিকে শ্রোতাদের সামনে নিখুঁত ভাবে তুলে ধরার কাজটি সারতে গিয়ে বলেন, “বিজেপি বিলটির বিরোধিতা করছিল। কিন্তু কংগ্রেস হাল ছাড়েনি। বিশেষ করে আমার মা। লোকসভায় বিলটি নিয়ে যে দিন ভোটাভুটি হয় সে দিন মায়ের শরীর খুবই খারাপ ছিল। আর পাঁচ জন সন্তানের মতো আমিও মায়ের শরীর নিয়ে উদ্বেগে ছিলাম। তাই প্রতি দশ মিনিট অন্তর গিয়ে ওঁর শরীরের খোঁজ নিচ্ছিলাম। মাকে শুরুতেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মা রাজি হননি। বরং বলেন, যে বিলের জন্য এতো লড়াই করেছি, তাতে ভোট না দিয়ে কোথাও যাব না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালে যেতেই হয়। তখন নিঃশ্বাস নিতেও ওঁর কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু ভোটাভুটিতে অংশ নিতে না পারার দুঃখে চোখে জল চলে এসেছিল মায়ের।” |
|
গ্বালিয়রের জনসভায় রাহুল গাঁধী। বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের ছবি। |
রাজনীতির কারবারিদের মতে, রাহুলের এই কৌশল যথেষ্টই সুচিন্তিত। এক সময় ‘গরিবি হঠাও’য়ের ডাক দিয়ে ইন্দিরা গাঁধী গ্রামেগঞ্জে যে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন, খাদ্য সুরক্ষা বিলকে হাতিয়ার করে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাইছেন রাহুল। সেই কারণেই এ ভাবে মায়ের প্রসঙ্গ তুলেছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই ছেড়ে কথা বলেনি বিজেপি। দলের মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “সনিয়ার অসুস্থতা নিয়ে হোর্ডিং ছাপানোর জন্য গত কাল কংগ্রেসের দুই নেতাকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। আজ রাহুলই আবার সনিয়ার অসুস্থতার কথা প্রকাশ্যে জানালেন! আসলে সনিয়ার অসুস্থতা নিয়েও কংগ্রেস রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে।
এ দিনের সভায় মধ্যপ্রদেশে দলিতদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ নিয়েও সরব হন রাহুল। তিনি বলেন, “আমি রাজনীতিতে নতুন ধারা আনতে চাইছি। মর্যাদার রাজনীতি। যাতে রাজনীতিকরা ভোটারদের মর্যাদা দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে দুর্ভোগের কথা শোনেন। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে গত দশ বছরে শিবরাজ শাসনে দলিত ও আদিবাসীদের কোনও মর্যাদাই দেওয়া হয়নি। তবে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দায়িত্ব নিয়ে আমি তা সুনিশ্চিত করব।”
রাহুলের এই মন্তব্য নিয়েও পাল্টা আক্রমণ করেছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান বলেন, “আগে প্রধানমন্ত্রীর পদকে মর্যাদা দেওয়া শিখুন রাহুল গাঁধী। পরে মর্যাদার রাজনীতি করবেন।”
|
পুরনো খবর: অসুস্থ সনিয়াই নেতা ‘ইতিহাস’ গড়ার লড়াইয়ে |
|
|
|
|
|