পুজোর শহর
হাসপাতালে বইল ছুটির হাওয়া, ফিরলেন রোগী
ষ্টমীর দুপুরে ১০ বছরের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছুটতে হয়েছে হাওড়া শিবপুরের বাসিন্দা শিবকুমার রামকে। পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল মেয়ে দীপ্তির। মেডিক্যালে এসেছিলেন লিভার ফাংশন পরীক্ষার জন্য। এসে শোনেন, পুজোর চার দিন সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরিতে সব হরমোন পরীক্ষা, লিপিড প্রোফাইল, লিভার ফাংশন পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। টেকনিশিয়ান, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের অনেকেই ছুটিতে। তাই এই সব পরীক্ষা পুজোর পরে আবার শুরু হবে।
পুজোয় পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা নিয়ে ব্যাপক বিজ্ঞাপনী প্রচার চালিয়েছিল একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল। স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা জানিয়েছিলেন, সরকারি হাসপাতালের এমন কোনও প্রচার প্রয়োজন নেই। কারণ হাসপাতাল জরুরি অবস্থার মধ্যে পড়ে। প্রতি বছরই পুজোর ৪ দিন পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য চিকিৎসকদের আলাদা ডিউটি-রোস্টার থাকে। প্রত্যেক সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে মেডিক্যাল অফিসার, ইন্টার্ন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, হাউসস্টাফ মিলিয়ে ৯-১০ জন থাকা বাধ্যতামূলক। যদিও বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা সুবীর বসুর অভিজ্ঞতায়, ইমার্জেন্সিতে ডাক্তারেরা থাকা সত্ত্বেও অষ্টমীর রাতে হার্নিয়ার ব্যথা নিয়ে আর জি করে গেলে কেউ তাঁকে দেখার ব্যাপারে গা করেননি। বাধ্য হয়ে সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই অস্ত্রোপচার হয় পরের দিন। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ স্বীকার করেননি।
পুজোর সময় চিকিৎসক ও নার্সেরা ঠিকমতো পরিষেবা না দেওয়ায় অষ্টমীর দিন এক সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে মেডিক্যাল কলেজে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ দেখান আত্মীয়েরা। পরে পুলিশ অবস্থা সামলায়। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার কথায়, “ডিউটি রোস্টার থাকলেও ফাঁকি দেওয়ার একটা প্রবণতা এই ৪ দিন থেকেই যায়। খুব জরুরি ছাড়া কোনও অস্ত্রোপচারই ডাক্তারেরা করতে চান না।” আর এক কর্তার বক্তব্য, “পুজোর ডিউটি রোস্টার স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে পাঠাতে বলা হয়। তা-ও অভিযোগ এসেছে, যে সব কেসগুলি এক-দু’ঘণ্টা ফেলে রাখলে জটিল হয়ে যেতে পারে এমন কেস অধিকাংশ হাসপাতাল অন্য জায়গায় রেফার করে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চায়। বিশেষ করে সন্ধ্যের পরে অন কল-এ থাকা চিকিৎসকদের খুঁজে বার করতে অসম্ভব সমস্যায় পড়তে হয়েছে।”
এসএসকেএম আবার তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছে, পুজোয় তাদের পরিষেবায় কোনও ত্রুটি হয়নি। অষ্টমী-নবমী সব জায়গায় আউটডোর বন্ধ ছিল। সপ্তমীতে তাদের আউটডোরে ৭৪৭ জন, দশমীতে ৮৯৮ জন রোগী এসেছেন। পুজোর চারদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৮৫২ জন। ইমার্জেন্সিতে এসেছেন মোট ২৮০৪ জন রোগী, জরুরি অস্ত্রোপচার হয়েছে ১৪৬টি। এনআরএস-এ পুজো মোটামুটি গোলমাল-বিহীন ভাবে কাটলেও নবমীর রাতে লিনেন স্টোরে চোর এসেছিল বলে জানান কর্তৃপক্ষ। তবে দরজা ভাঙার চেষ্টা করে পারেনি। পুজোর সময় যথেষ্ট সংখ্যায় নিরাপত্তাকর্মী না-আসাতেই এই বিপত্তি বলে জানা গিয়েছে।
আর জি কর ও এনআরএস-এ পুজোর মধ্যে দেহ দান করতে গিয়ে চিকিৎসক ও ডোম না-থাকায় মৃতের আত্মীয়দের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এসএসকেএম ও ন্যাশনালের ব্লাডব্যাঙ্কে সন্ধ্যের পর রক্ত পেতেও অনেকে নাজেহাল হয়েছেন বলে অভিযোগ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.