চার্চিল ব্রাদার্সে পুরো তিন মাসও টিঁকতে পারলেন না সুখবিন্দর সিংহ। তাঁর জায়গায় ফের গোয়ার পারিবারিক ক্লাবটির টিডি-র দায়িত্বে ফিরছেন সুভাষ ভৌমিক। সেই সুভাষ, যিনি মনের মতো দল না পাওয়ায় কয়েক মাস আগেই ছেড়ে এসেছিলেন চার্চিলেরই দায়িত্ব।
বিজয়া দশমীর দুপুরেই বর্তমান টিডি সুখবিন্দরের বিসর্জন হয়েছিল। তীব্র চাপের মুখে পদত্যাগ করে সুখী চলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চার্চিলের তরফে আবাহন হল সুভাষের। পুরনো ক্লাবের ডাক পেয়ে সোমবার রাতেই গোয়ায় পৌঁছে যান সুভাষ।
গোয়ার ক্লাবটির প্রধান কর্তা চার্চিল আলেমাও বিদেশে। তাঁর মেয়ে ক্লাবের সিইও ভালাঙ্কার সঙ্গে মঙ্গলবার দিনভর আলোচনার পর সুভাষ অবশ্য ফোনে বললেন, “মানসিক ভাবে চার্চিলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেও এখনও কোনও কাগজপত্রে সই করিনি। আমি এখন সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার টিডি। সেখানেও একটা দায়বদ্ধতা আছে। আইএফএ সচিবের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। উনি ছুটিতে বাইরে রয়েছেন। ফিরলে আলোচনা করব।”
কিন্তু আই লিগে চার্চিলের দায়িত্ব এবং সন্তোষে বাংলার দায়িত্ব, কোনটাকে অগ্রাধিকার দেবেন সুভাষ? “দু’টো যদি করতে পারি তা হলে সবচেয়ে ভাল হয়। জানি না সেটা সম্ভব হবে কি না? বাংলার কথা ভাবছি বলেই তো ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় চেয়েছি চার্চিলের কাছে,” গোয়া থেকে ফোনে বলে দিলেন তিন বারের আই লিগ জয়ী কোচ।
সন্তোষ ট্রফির অনুশীলনের জন্য ৬ নভেম্বর পর্যন্ত কলকাতা লিগ বন্ধ রেখেছে আইএফএ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী হবে? সুভাষ যদি চার্চিলের দায়িত্ব নেন তা হলে কি নতুন কেউ টিডি হবেন বাংলার? আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় রায়পুর থেকে ফোনে বললেন, “শনিবার আমি কলকাতায় ফিরছি। তারপর সিদ্ধান্ত নেব। কোচ শিশির ঘোষ তো আছেই। সুভাষ চার্চিলের দায়িত্ব নিলে নতুন কাউকে বাছতে তো হবেই।” |
গত বার চার্চিল ব্রাদার্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পরও গোয়া ছেড়ে কলকাতায় চলে এসেছিলেন ‘ক্ষুব্ধ’ সুভাষ। চুক্তিপত্রের কিছু অংশ পছন্দ হয়নি তাঁর। সবথেকে বড় কথা যে দল চেয়েছিলেন ক্লাব কর্তাদের কাছে তা-ও দিতে চাননি চার্চিলরা। সেই দলের দায়িত্বও আবার নিচ্ছেন দেশের অন্যতম সফল ক্লাব কোচ? সুভাষ যুক্তি দিলেন, “চার্চিল পারিবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক এত ভাল যে ওদের অনুরোধ ফেরানো আমার পক্ষে কঠিন ব্যাপার। চার্চিলের ফল খারাপ (৪ ম্যাচে ২ জয়, ২ হার) হচ্ছে দেখে শিলং ম্যাচের পর ওরা আমার কলকাতার বাড়িতে এসেছিল। ফেরার অনুরোধ নিয়ে। ওদের ডাক পেয়ে তাই গোয়া চলে আসতে হল। চার্চিল আলেমাও এখন দুবাইতে। ওর ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কথা হয়ে গেছে। দায়িত্ব নেওয়ার আগে ওর সঙ্গেও আলোচনা করা দরকার।”
জানা গিয়েছে, চার্চিলের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুত হয়ে গেলেও দু’টো ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছেন সুভাষ। এক) সন্তোষে বাংলার দায়িত্ব ছাড়লেও, সেটা যেন আলোচনা করে সম্মানজনক ভাবে হয়। দুই) চার্চিলের সঙ্গে বসে এমন চুক্তিপত্র তৈরি করতে চান সুভাষ, যাতে পরে সমস্যায় না পড়তে হয়। টিম নিয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চান তিনি।
সুভাষ অবশ্য এ ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ। বলে দিলেন, “২০ অক্টোবরের আগে কিছু বলব না। সে জন্যই তো ১৯ অক্টোবর চার্চিল-পুণে ম্যাচ রিজার্ভ বেঞ্চে না বসে গ্যালারিতে বসে দেখব।” |