|
|
|
|
বৃষ্টিতে মাটি হল দশেরার আনন্দ, হতাশ রেলশহর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
রেলশহরের ঐতিহ্যবাহী দশেরা উত্সবের আনন্দও মাটি করল বৃষ্টি। সোমবার সন্ধ্যায় খড়্গপুরের রাবণ ময়দানে পুড়ল না রাবণের ন’টি মাথাই। এমনকী বৃষ্টিভেজা কাদাভরা মাঠে অনুষ্ঠিত হল না রাম-রাবণের যুদ্ধও। ফলে হতাশ খড়্গপুরের রাবণ ময়দানে ভিড় জমানো দর্শনার্থীরা। যদিও এর জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগকেই দায়ী করেছে আয়োজক সংস্থা।
অশুভ শক্তির বিনাশের ভাবনায় ১৯২৫ সাল থেকে বহুভাষাভাষির খড়্গপুর শহরে দশেরা উত্সব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দশেরা উত্সবে শহরের গেটবাজার সংলগ্ন রাবণ ময়দানে বধ করা হয় বোমা-আতসবাজি মোড়া রাবণের দীর্ঘকায় মূর্তি। জ্বলে ওঠে গোটা রাবণের দেহ। তার আগে অনুষ্ঠিত হয় রাম-রাবণের যুদ্ধ। ৮৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই উত্সবে মাতেন গুজরাতি, মারোয়াড়ি, তেলেগু, বিহারী, বাঙালী-সহ রেলনগরীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। শুধু শহর নয়, দিল্লির রামলীলা ময়দানের ঘরানায় এই উত্সবে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও হাজির হন অসংখ্য দর্শনার্থী। |
|
খড়্গপুরে রাবণপোড়া উত্সব।—নিজস্ব চিত্র। |
এ বছরও একইভাবে রাবণ পোড়ানোর উত্সবের আনন্দে সামিল হতে ময়দানে ভিড় জমিয়েছিল অগণিত মানুষ। অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে করতে কড়া পুলিশি বন্দোবস্তও করা হয়। তবে পুজোর প্রথম দিন থেকেই আকাশের মুখ ভার হওয়ায় উত্সব সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা নিয়ে প্রথম থেকেই চিন্তা ছিল উত্সব কমিটির কর্মকর্তাদের। এ দিন সকাল থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টিভেজা আলগা মাটিতে অনেক কষ্টে দাঁড় করানো হয় ৫৫ ফুটের বিশালকার রাবণের মূর্তিটি। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই ভিড় হয় লক্ষাধিক মানুষের। তবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পরে রাবণ পোড়ানো শুরু হয়।
রাবণের মূর্তির সলতেতে আগুন লাগিয়ে উদ্বোধন করেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। অবশ্য আগুনে রাবণের মাঝের মাথাটিই শুধুমাত্র আতসবাজির বিস্ফোরণে ফেটে যায়। কিন্তু রাবণের অবয়বের অন্য মাথাগুলি অবিকৃতই থেকে যায়। রাবণ পোড়ানো দেখতে আসা দর্শনার্থী শ্রীনু রাও, সবুজ মাইতিদের কথায়, “আমাদের পুরোনো স্মৃতিগুলি তুলে ধরতেই বাচ্চাদের নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু কিছুই হল না। রাবণের একটা মাথা জ্বলে রয়ে গেল। বাচ্চাগুলো তো আসল মজাই পেল না।” এ দিন বহু চেষ্টা করেও জ্বালানো যায়নি রাবণের মূর্তির বাকি অংশ। দশেরা উত্সব কমিটির সহ-সভাপতি রাজা রায় জানান, আসলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করেও আমরা হেরে গেলাম। সব এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় আমরা খুব দুঃখিত। এসপি ঝাড়গ্রামের অনুষ্ঠান সেরে এখানে আসায় অনুষ্ঠান শুরু করতে সামান্য দেরি হয়েছে। তবে এই দুর্যোগ উপেক্ষা করেও যে জনসমাগম হয়েছিল তাতে আমরা আপ্লুত। আগামী বছর অন্য ভাবে রাবণ মূর্তিটি গড়ার ব্যবস্থা করব। এ দিন অনুষ্ঠানে ছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ প্রবোধ পান্ডা, খড়্গপুরের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, দশেরা উত্সব কমিটির কার্যকরী সভাপতি তথা জেলা চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আলো সিংহ প্রমুখ। |
|
|
|
|
|