চা বাগানের একটি জলের চৌবাচ্চায় পড়ে যাওয়া হস্তি শাবককে উদ্ধার করে বন দফতরের হাতে তুলে দিলেন চা শ্রমিকরা। সোমবার সকালে কুমারগ্রাম ব্লকের রহিমাবাদ চা বাগানের খুসরু লাইনে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে টানা ৩-৪ ঘন্টা চেষ্টা করেও শাবকটিকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থ হন বন কর্মীরা। শাবকটিকে এদিনই জলদাপাড়া নিয়ে যান বন কর্মীরা। অন্যদিকে, রবিবার সকালে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব বিভাগের উত্তর রায়ডাক রেঞ্জের ভুটান সীমান্তের ময়নাবাড়ি এলাকা থেকে একটি বুনো হাতির দেহ উদ্ধার করেন বনকর্মীরা।
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে একদল হাতি হানা দেয় রহিমাবাদ চা বাগানের খুসরু লাইনে। চা শ্রমিকদের তাড়া খেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে হাতির দলটি জঙ্গলের দিকে রওনা হয়। সেই সময় শাবকটি জলের চৌবাচ্চায় পড়ে যায়। হাতির দলটি শাবকটিকে দীঘর্ক্ষণ তোলার চেষ্টা করে বিফল হয়। দলটির চিৎকার শুনে শ্রমিক মহল্লার বাসিন্দারা বিষয়টি টের পান। তবে দলটি দাঁড়িয়ে থাকায় শ্রমিকরা শাবকটির কাছে যেতে পারেননি। ভোরের আলো ফুটতেই হাতির দলটি জঙ্গলে ফিরে যায়। |
রহিমাবাদ চা বাগানে ছবিটি তুলছেন রাজু সাহা।
|
এর পরে শ্রমিকরা গিয়ে দেখেন ফুটফুটে হস্তিশাবকটি চৌবাচ্চায় পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। বন কর্মী, অফিসারেরাও আসেন। বাঁশ, দড়ি ব্যবহার করে দশজন শ্রমিক ও বন কর্মীরা শাবকটিকে ট্যাঙ্ক থেকে তোলেন। শাবকটিকে জঙ্গলের ধারে রেখে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু হাতির শাবকের গায়ে মানুষের ছোঁয়া লাগায় সেটিকে আর দলে ফেরানো হয়নি বলে বনকর্মীরা মনে করছেন। জলদাপাড়ার পিলখানায় নিয়ে গিয়ে সেটির চিকিৎসা শুরু করেছেন দুই পশু চিকিৎসক। পরে শাবটিকে কুনকি হাতি চম্পাকলির কাছে রাখা হয়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (পূর্ব) উপক্ষেত্র অধিকর্তা ভাস্কর জেভি বলেন, “শাবকটিকে কুনকি হাতির কাছে রেখে বড় করা হবে। শাবকটি সুস্থ রয়েছে।”
পাশাপাশি, রবিবার সকালে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ময়নাবাড়ি এলাকায় হাতির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বন দফতরে খবর দেন। মৃত হাতিটির আনুমানিক বয়স ১৬ বছর। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (পূর্ব) উপক্ষেত্র অধিকর্তা জানান, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, সঙ্গীদের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যু হয়েছে। জমির ফসল খেয়ে হাতিটির শরীরে কোনভাবে বিষক্রিয়া হয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চোরা শিকারিরা হাতিটিকে মেরেছে এমন কোন প্রমাণ মেলেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা সম্ভব হবে। |