লড়াইয়ের পরে ডাকাত ধরল পুলিশ, গণপ্রহারে হত যুবক
লাকায় এক বাড়িতে লুঠ করে আর এক বাড়িতে চড়াও হওয়ার সময় ধরা পড়েছে ডাকাত দল। পুলিশের সঙ্গে তাদের রীতিমতো বোমা-গুলির যুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। দুষ্কৃতীর শাবলের ঘায়ে হাত ভেঙেছে ওসি-র। সোমবার, দশমীর গভীর রাতে ওই ঘটনায় তেতে ছিল গোঘাট থানার সূর্যপুর গ্রাম। তার ঠিক পরেই অন্ধকারে অপরিচিত পাঁচ যুবককে এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহের বশে ঘিরে ফেলল জনতা। শুরু হল গণপিটুনি। মৃত্যু হল এক জনের। জখম দু’জন আরামবাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অসিতবরণ ঘোষের বাড়িতে তদন্তে পুলিশ। ছবি: মোহন দাস।
পুলিশ জানায়, নিহত ইসলাম খান (২৬) এবং দুই আহতআশাদুল খান এবং মেহফিল ভাঙ্গি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। এসডিপিও (আরামবাগ) শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “গণপিটুনিতে গড়বেতা থানা এলাকার এক সন্দেহভাজন যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ডাকাত দলের সদস্যদেরও বাড়ি গড়বেতারই বিভিন্ন এলাকায়। নিহতের সঙ্গে ডাকাতদের কোনও সম্পর্ক ছিল কি না, দেখা হচ্ছে। ধৃতদের কাছ থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি-সহ একটি পিস্তল, একটি পাইপগান, ১৫টি বোমা-সহ নানা অস্ত্র ও লুঠের জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ সূর্যপুরের সম্পন্ন কৃষক অসিতবরণ ঘোষের বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তারা জানলা ভেঙে ঢোকে। নিরাপত্তার জন্য তিন তলায় অসিতবাবু নিজের ঘরে বন্দুক রাখতেন। দুষ্কৃতীরা প্রথমে সেই ঘরে ঢুকে বন্দুক ও গুলি কেড়ে নেয়। অভিযোগ, তারা অসিতবাবুর স্ত্রীকে হুমকি দিয়ে আলমারি খুলিয়ে সোনার গয়না ও নগদ কয়েক হাজার টাকা হাতায়। প্রতিবাদ করায় মারধর করা হয় অসিতবাবুর ছেলে সৌগতকে।
ইতিমধ্যে ডাকাতির কথা টের পেয়ে যান পাশের বাড়ির বাসিন্দা, অসিতবাবুর ভাই অশোকবাবু। তিনি পুলিশকে এবং কিছু পড়শিকে ফোন করেন। দুষ্কৃতীরা অসিতবাবুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে অশোকবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। বাইরের একটি দরজা তারা ভেঙে ফেললেও মূল বাড়িতে ঢুকতে পারেনি। তারা বোমা ছোড়ে। অশোকবাবুর বাবা অজিতবাবু তাঁর রাইফেল থেকে গুলি ছোড়েন। দুষ্কৃতীরাও পাল্টা গুলি চালায়। এর মধ্যেই গ্রামবাসীরা দুষ্কৃতীদের ঘিরে ফেলেন। আসে পুলিশ। দুষ্কৃতীরা বোমা-গুলি ছুড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এক দুষ্কৃতীর শাবলের আঘাতে গোঘাট থানার ওসি প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের ডান হাত ভাঙে। শেষমেশ গ্রামবাসীদের সহায়তায় পুলিশ ১১ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। দুষ্কৃতীদের আনা পিক-আপ ভ্যানটি পুলিশ আটক করে।
পুলিশ দুষ্কৃতীদের নিয়ে চলে যাওয়ার পরে ওই এলাকায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে ইসলাম খান-সহ পাঁচ যুবককে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় মার। পুলিশ এসে গুরুতর আহত তিন যুবককে আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যায়। দু’জনকে আটক করে। হাসপাতালেই ইসলাম মারা যান। অসিতবাবু বলেন, “মনে হয় দুষ্কৃতীরা রীতিমতো পরিকল্পনা করেই আমার বাড়িতে চড়াও হয়। ওরা জানত আমার ঘরে বন্দুক থাকে।” তাঁর দাবি, দিন দশেক আগে কিছু সোনার গয়না কিনেছিলেন। সেই গয়নার জন্যই ওই হামলা হয়।
গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, “যাদের পরে মারধর করা হয়েছে, তারাও ওই ডাকাত দলেই ছিল। পুলিশের হাত থেকে পালিয়েছিল। পাঁচ জনকে আমরা ধরে ফেলি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.