হঠাৎ জল ছাড়ল ডিভিসি, দুই জেলার ৩টি ব্লক প্লাবিত |
পুজোর আনন্দের রেশ মেলানোর আগেই হাওড়া ও হুগলি জেলার চারটি ব্লকের বাসিন্দাদের জন্য দুশ্চিন্তা বয়ে আনল ডিভিসি-র ছাড়া জল।
হুগলির খানাকুল-২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের ৫৩টি মৌজা ক্রমশ জলমগ্ন হচ্ছে। খানাকুল-১ ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েত এলাকার হালও কার্যত একই। অন্য দিকে, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের কিছু কিছু এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করে মঙ্গলবার রাতে। আমতা-২ ব্লকেরও বিভিন্ন এলাকায় দামোদরের বাঁধ উপচে প্লাবিত হতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রশাসন নদী তীরবর্তী দু’টি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৩৩টি ত্রাণশিবির খুলেছে। মজুত করা হয়েছে ত্রিপল, শুকনো খাবার, শিশুখাদ্য এবং পানীয় জল।
সোমবার দুপুর থেকে দফায় দফায় জল ছাড়তে শুরু করে ডিভিসি। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কথা ছিল জল ছাড়ার আগে ডিভিসি রাজ্য সরকারকে আগাম জানাবে। কিন্তু ডিভিসি তা করেনি। জল ছাড়ার পরিমাণ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে। ডিভিসির আচরণে মুখ্যমন্ত্রীও ক্ষুব্ধ।” |
পরিদর্শনে মন্ত্রী-সাংসদ। — নিজস্ব চিত্র। |
ডিভিসি-র ছাড়া জল দামোদরের চরম বিপদসীমা পেরোয় মঙ্গলবার দুপুরেই। আরামবাগ মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইকে সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। বেশ কিছু মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরাতে হতে পারে, এই আশঙ্কায় উঁচু স্কুলগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেচ দফতরের বাস্তুকারেরা বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির বহু মানুষকে ত্রিপল দেওয়ার কাজ চলছে। বাঁধ মেরামতে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।
আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “এখনও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি হয়নি। তবে, ডিভিসি-র ছাড়া জল ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।”
খানাকুল-২ ব্লকের জগৎপুর, ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা ও রাজহাটি-১ পঞ্চায়েত এলাকায় ইতিমধ্যেই বহু মাঠ, চাষজমি জলের তলায়। খানাকুল ১ ব্লকের পোল-১ ও ২, অরুন্ডা, বালিপুর, ঠাকুরানিচক, ঘোষপুর প্রভৃতি পঞ্চায়েত এলাকায় গ্রামগুলির প্রায় জলবন্দি অবস্থা। মঙ্গলবার দু’টি ব্লকের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান জেলা সভাধিপতি শেখ মেহবুব রহমান। মুণ্ডেশ্বরী সেচ দফতরের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রঘুনাথ মাজি বলেন, “দামোদরের জল চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। মুণ্ডেশ্বরীর জল বিপদসীমা ছুঁয়েছে।” উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা-২ ব্লক দামোদরের পশ্চিম পাড়ে। সে দিকের বাঁধ যথেষ্ট নিচু। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মঙ্গলবার দুপুরেই উদয়নারায়ণপুরে আসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদ প্রমুখ। আপৎকালীন ভিত্তিতে উদয়নারায়ণপুরের ডিহিভুরসুট, কানুপাট-মনসুখা প্রভৃতি এলাকায় বাঁধ মেরামতি এবং বালির বস্তা ফেলে উঁচু করার কাজ শুরু হয়েছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেচমন্ত্রী বলেন, “ডিভিসি যে হারে জল ছাড়ছে, তাতে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য বিভিন্ন এলাকায় বালির বস্তা ফেলে বাঁধ উঁচু করা হচ্ছে।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে দু’টি স্পিডবোট আনতে বলা হয়েছে।
|
চন্দননগরে উদ্ধার দুই বোনের দেহ
নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দননগর |
খাটের উপরে পড়ে বছর পাঁচেকের শিশুকন্যার দেহ। মেঝেতে পড়ে তার দিদির প্রাণহীন শরীর। অনেক ক্ষণ থেকে বাড়ির দরজা খোলা দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় মানুষের। তাঁরা খোলা দরজা দিয়ে উঁকিঝুঁকি দিয়ে দেখেন এই দৃশ্য। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ চন্দননগরের নাড়ুয়ায় ষষ্ঠীপুকুর এলাকার এই ঘটনার পর থেকে নয়না (৫) এবং মামনি মেটের (১৭) বাবা গৌরকে খুঁজছে পুলিশ। দুই মেয়ের মা সরস্বতীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দেহ দু’টি পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মেয়ে দু’টিকে। দিন পনেরো আগে এই বাড়িতে ভাড়া এসেছিল পরিবারটি। মেয়ে দু’টি সরস্বতীর আগের পক্ষের সন্তান। পেশায় রাজমিস্ত্রি গৌরের সঙ্গে কাজের সূত্রের আলাপ সরস্বতীর। কী কারণে দুই বোনকে খুন করা হল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। |