|
|
|
|
অস্ত্র বোঝাই মার্কিন জাহাজ আটক |
সংবাদসংস্থা • তুতিকোরিন |
কোনও রকম অনুমতির তোয়াক্কা না করেই তিন দিন আগে ভারতের জলসীমায় ঢুকে পড়েছিল মার্কিন জাহাজ এমভি সিম্যান গার্ড ওহায়ো। জাহাজটিকে আটক করে সোমবার সেটির কর্মী ও সশস্ত্র প্রহরীদের জেরা করে স্থানীয় পুলিশ। এক বছর আগেই কেরল উপকূলে ইতালীয় মেরিনদের গুলিতে মারা যান দুই ভারতীয় মৎস্যজীবী। তার পরও যাবতীয় নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে জাহাজটি এত দূর ঢুকে পড়ল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের কাছে এ ব্যাপারে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত শনিবার চেন্নাই থেকে ছ’শো কিলোমিটার দক্ষিণে উপকূল রক্ষী বাহিনীর চোখে পড়ে এই বিদেশি জাহাজটি। তখন তাতে মজুত ছিল ৩১টি অ্যাসল্ট রাইফেল এবং পাঁচ হাজার রাউন্ডেরও বেশি গুলি। ভার্জিনিয়া শহরের এক নিরাপত্তা সংস্থা অ্যাডভানফোর্ট-এর হাতে রয়েছে এই সিম্যান গার্ডের মালিকানা। তবে রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ সিয়েরা লিওনের।
এশিয়া-ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগে ভারতের এই দক্ষিণ প্রান্তের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখানে প্রায়ই জলদস্যুদের মুখে পড়তে হয় নাবিকদের। তাই ঝামেলা এড়াতে আলাদা করে জাহাজে রক্ষী মোতায়েন করেন অনেকেই। এই অ্যাডভানফোর্টও বাণিজ্যিক জাহাজে নিরাপত্তা রক্ষী সরবরাহ করে থাকে। তবে সংস্থার তরফে এই ঘটনা নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সিম্যান গার্ডে দশ জন কর্মী ছাড়াও ছিলেন ভারত, ব্রিটেন, ইউক্রেনের আরও ২৫ জন সশস্ত্র রক্ষী। বেআইনি ভাবে অস্ত্র রাখার অভিযোগে এঁদের সকলের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।
উপকূল রক্ষী বাহিনীর অফিসার সন্তোষ কুমার সিংহ জানিয়েছেন, ধরা পড়ার পর জাহাজের নাবিকরা বলেছিলেন, অস্ত্র বহনের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে তাঁদের কাছে। কিন্তু দু’দিন পেরিয়ে গেলেও কোনও প্রমাণ জমা দিতে পারেননি তাঁরা। এ দিকে যে দিন জাহাজটি ধরা পড়ে তার দিন তিনেক আগে থেকেই সেটিকে সমুদ্র উপকূলে ভাসতে দেখেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, সিম্যান গার্ডের তেল ফুরিয়ে এসেছিল। ভারতীয়দের কাছ থেকেই দেড় হাজার লিটার ডিজেলও জোগাড় করে তারা। কারা তাদের সাহায্য করেছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। অবৈধ ভাবে তেল নিয়ে যাওয়ার মামলাও করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় জাহাজ এনরিকা লেক্সি থেকে জলদস্যু ভেবে গুলি চালানো হয় ভারতীয় মৎস্যজীবীদের উপর। এতে প্রাণ যায় দু’জনের। দীর্ঘ টালবাহানার পর অভিযুক্ত দুই মেরিনকে ভারতের হাতে তুলে দেয় ইতালি। এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। উপকূলের নিরাপত্তা জোরদার করার আশ্বাসও দেওয়া হয়। রক্ষীদের নজরদারি সত্ত্বেও যে ভাবে অস্ত্রভর্তি জাহাজ ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়ল, তাতে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। |
|
|
|
|
|