পদ্ম নয়, মোদীকেই চেনে জনতা, ফাঁপরে বিজেপি
মন অদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত কয়েক বছরের মধ্যে পড়েছেন কি না, মনে করতে পারছেন না বিজেপি ও সঙ্ঘের শীর্ষ নেতারা।
সম্প্রতি সঙ্ঘ ও বিজেপি একটি সমীক্ষা করেছে। আর তার ফল সামনে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ নেতাদের। তাঁদের দাবি, সমীক্ষা অনুযায়ী দেশের যুব মন এখন ‘মোদী-মোদী’ করলেও তাঁদের সিংহভাগই জানেন না বিজেপির প্রতীক চিহ্নটি কী!
আর এতেই ঘুম উড়েছে নেতাদের। দলের এক নেতা আজ বলেন, “সমস্যাটি এখন মোদী বনাম পদ্ম হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মোদীকে ঘিরে যুবকদের মনে যে প্রবল আগ্রহ ও উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, তাতে বিজেপি বা তার প্রতীক চিহ্নের থেকেও ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদী অনেক বেশি বড় হয়ে গিয়েছেন।” ওই নেতার ব্যাখ্যা, যে ভাবে ‘ব্র্যান্ড মোদী’ তৈরি হয়েছে, মোদীর নামে টি-শার্ট, টুপি, মুখোশ বিকোচ্ছে হু হু করে তা দলের কাছে নিঃসন্দেহে আনন্দের। কিন্তু সেখানে দলের প্রতীকটাই সে ভাবে গুরুত্ব না পাওয়াটা ভাবাচ্ছে নেতৃত্বকে। এই অবস্থায় মোদীকে তুলে ধরার পাশাপাশি বিজেপির প্রতীক চিহ্নকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করার উপরে জোর দিতে চান বিজেপি ও সঙ্ঘ নেতারা। বিজেপির মুখপাত্র নির্মলা সীতারামণ বলেন, “এই সমস্যা মোকাবিলার জন্য আমরা ভোটারদের আরও বেশি শিক্ষিত করতে চাইছি। যাতে তাঁরা মোদীর পাশাপাশি বিজেপির প্রতীক চিহ্ন সম্পর্কেও অবহিত হন।”
বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণার আগে থেকেই মোদী যুব সমাজকে কাছে টানতে সক্রিয়। বিভিন্ন সভায় এবং দলীয় বৈঠকে তিনি বারবার বলছেন, দেশের জনসংখ্যার ষাট ভাগই ৩৫ বছরের নীচে। এই অংশকে বুথে আসার জন্য নিরন্তর অনুপ্রেরণাও দিচ্ছেন। আর তার কিছুটা প্রভাব মোদীর সাম্প্রতিক কালের একাধিক সভায় চোখে পড়ছে। মোদীকে ঘিরে যুব সমাজের একাংশের উন্মাদনায় খুশি দলীয় নেতৃত্বও। কিন্তু এ বারের সমীক্ষা রিপোর্টে তাঁদেরও কপালে ভাঁজ! কারণ, মুখে ‘মোদী-মোদী’ করলেও এই যুবকরা যদি না-ই জানলেন, আসলে কোন বোতাম টিপে ভোট দিতে হবে, তা হলে এই উন্মাদনায় কী লাভ?
বিষয়টি সামাল দিতে সঙ্ঘ নেতৃত্বও উদ্যোগী হয়েছেন। সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত এ ব্যাপারে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন মনমোহন বৈদ্যকে। ঠিক হয়েছে, বিজেপি যেমন প্রচার করার করুক। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমান্তরাল সম্মেলনের আয়োজন করবেন বৈদ্য। ইতিমধ্যেই পটনা, গুয়াহাটি, হরিয়ানায় সম্মেলন করেছেন তিনি। এ মাসে যাবেন ভোপাল, ভুবনেশ্বরে। সঙ্ঘের তরফে বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট গোষ্ঠী করে মোদী মানে যে আসলে বিজেপি এবং পদ্মফুল, সেটা বোঝানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। যুবদের মন জয়ের জন্য বেশ কিছু গান তৈরি করে সেটিকে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। পাশাপাশি মোদীর সভায় পদ্মফুলের ব্যাপক প্রচারের জন্য বিজেপিকে পরামর্শ দিচ্ছে সঙ্ঘ।
একটা সময় অনুগ্রাহীদের অনুরোধে হোক বা প্রকাশ্য মঞ্চে, অটলবিহারী বাজপেয়ীর গলায় শোনা যেত, “সূরয নিকলেগা, অন্ধেরা ছটেগা অউর কমল খিলেগা...।” যার অর্থ, সূর্য উঠবে, অন্ধকার দূর হবে এবং পদ্মফুল ফুটবে। বাজপেয়ী তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতেই প্রচার করতেন দলীয় প্রতীকের। কিন্তু মোদীকে তেমন ভাবে পদ্মফুল চিহ্নে বোতাম টিপে ভোট দেওয়ার কথা বলতে শোনা যায়নি বলে মানছেন নেতাদের অনেকেই। অগত্যা তাঁকেও বোঝানো হচ্ছে, বিজেপির প্রতীক যে পদ্মফুল, সেটা বোঝানোর ব্যাপারে যাতে কোনও খামতি না থাকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.