পথে দুর্গা, প্রাসাদেও..
ভাঙলেও ফের গজায় উইঢিপি
ভেঙে দেওয়া হলেও গজিয়ে উঠত উইঢিবি। সেখানেই পুজো পান দুর্গা। জামুড়িয়ার হিজলগড়ায় মণ্ডল পরিবারের এই পুজো এ বার সুবর্ণজয়ন্তীতে পড়ল। বাড়ির সদস্য নিরঞ্জন মণ্ডল জানান, এই ঢিপি বারবার ভেঙে দেওয়া হলেও আবার একই অবস্থায় ফিরে আসে। পরিবারে কথিত রয়েছে, নিরঞ্জনবাবুর মায়ের মামাতো দাদার মেয়ে তমসা অসুস্থ হয়ে সাত দিন বাড়ির পাশে ওই ঢিপির কাছে বসে থাকতেন। চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ করা যায়নি তাঁকে। হঠাৎ এক রাতে তমসা স্বপ্ন দেখেন, ঢিপি থেকে দুর্গা বেরিয়ে এসে উইঢিপি ভাঙতে বারণ করছেন ও তাঁর পুজো করতে বলছেন। এর পরেই সেখানে অষ্টমীর দিন থেকে পুজো শুরু হয়। পরবর্তী কালে মন্দির তৈরি হয়েছে। মন্দিরে গেলে দেখা যায়, ঢিপি দেখতে সপরিবার দুর্গার আদলে। কেন অষ্টমীর দিন পুজো শুরু? নিরঞ্জনবাবু বলেন, “পরিবারের সদস্যেরা মনে করেছিলেন, চার দিন পুজো তাঁদের পক্ষে চালানো সম্ভব নয়। তাই এই সিদ্ধান্ত।” ওই গ্রামের বাসিন্দা, জেলা পরিষদ সদস্য তাপস চক্রবর্তী জানান, এই পুজোকে ঘিরে মানুষের উৎসাহ প্রবল।

আঁধারেও আরাধনা
উৎপাদন শূন্য কারখানা। বাসিন্দাদের আয় কমেছে। পুজোর আয়োজনে তবু পিছিয়ে যায়নি কুলটি ইস্কো কারখানার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা সেন্ট্রাল দুর্গাপুজো। টানা পাঁচ বছর কারখানার ঝাঁপ বন্ধ। তবু পুজোর কয়েকটা দিন হেসেখেলে কাটানোর চেষ্টা করেন বাসিন্দারা। প্রবীণ নাগরিকদের দাবি, পুজোর বয়স দেড়শো বছর পেরিয়েছে। পুজোর অন্যতম মূল আকর্ষণ মিলনমেলা। এখনও কারখানার সরাসরি পরিচালনায় এই মেলা বসে। কুলটির ওয়েস্টটাউন কর্মী আবাসনের পুজোতেও এ বার আড়ম্বরের ছোঁয়া। কারণ, এ বার পঞ্চাশে পা দিয়েছে পুজো। গড়া হয়েছে কাল্পনিক মন্দির।

মণ্ডপে টুকরো গ্রাম
রানিগঞ্জের শিশুবাগান মাঠের পুজোয় এ বার আস্ত একটি গ্রাম। খড়ের মরাই, ঢেঁকিশাল, মাটিতে গর্ত করা উনুনের সামনে মুড়ি ভাজছেনমডেলের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এমনই নানা ছবি। থাকবে গরু সমেত গোয়ালঘর, জলভর্তি একটি ছোট পুকুরে জ্যান্ত হাঁস ও মুরগি। পুজো কমিটির সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রতি বছরই নতুন নতুন থিম ভেবে বের করেন তাঁরা। সিহারসোল রাজবাড়ি মাঠে খারশুলি ইউনাইটেড ক্লাব পুজো মণ্ডপে গিয়ে দর্শনার্থীর ফিরে যেতে পারেন শৈশবের স্মৃতিতে। কুমোরপাড়ার গরুর গাড়ি থেকে চালক বংশীবদন, ভাগ্নে মদন, শীতের র্যাপার, কলসি হাঁড়ি সবই মণ্ডপ প্রাঙ্গণে তুলে এনেছেন উদ্যোক্তারা। ৬৪ বছরের পুরনো এই পুজো কমিটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় জানান, পরিখা কেটে বালি দিয়ে পদ্মা নদীর আদল তৈরি করা হয়েছে।

মন্দিরে ছয়লাপ
বার্নপুরে এবি টাইপ ইস্কো আবাসন এলাকার সর্বজনীন পুজোর ৩৪তম বর্ষে থিম দক্ষিণ ভারতের গোকুলনাথেশ্বর মন্দির। কাঠের টুকরো ও থার্মোকল দিয়ে গড়া হয়েছে এ বারের মণ্ডপ। মেদিনীপুরের শিল্পীরা মণ্ডপসজ্জার কাজ করেছেন। বারাবনি পানুড়িয়া বাজার সর্বজনীনের মণ্ডপে কাল্পনিক মন্দিরে উত্তরাখণ্ডে দেবী। আসানসোলে এসবি গড়াই রোডের পুজোতেও এ বার মণ্ডপ কেদারনাথের মন্দিরের আদলে। রামবাঁধ সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি ৬০ বছর পূর্তির উৎসবে মেতেছে। বহু পুরনো রাজপ্রাসাদের আদলে মণ্ডপ গড়েছেন তাঁরা। অনেক তারকা পুজোকে টেক্কা দেবে বলে দাবি করেছেন পুজো উদ্যোক্তারা। চমক রয়েছে প্রতিমাতেও। আমবাগান সর্বজনীনে প্রতি বারের মতো ভিড় জমছে প্রতিমা দেখার জন্যই।

স্টেডিয়ামে দুর্গা
চিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামের রেপ্লিকা নিয়ে হাজির আসানসোলের গোপালপুর ইউনাইটেড ক্লাব পরিচালিত সর্বজনীন পুজো। জি টি রোড লাগোয়া ক্লাবের মাঠেই এ বার মণ্ডপ গড়েছে তারা। আয়োজকেরা জানান, বাঁশ, কাঠের টুকরো ও এক ধরনের বিশেষ ফ্রেম দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। তাঁরা জানান, মণ্ডপের ভিতরে সামঞ্জস্য রেখে গড়া হয়েছে প্রতিমাও। কোর্টমোড় এলাকার অগ্রণী সর্বজনীন পুজোর মণ্ডপ এ বার রাজপ্রাসাদের আদলে। গড়েছেন কলকাতার শিল্পী। সামঞ্জস্য রাখতে প্রতিমাও রাজপোশাকে ভূষিত।

খরচ বাঁচিয়ে
সামনের বার হীরকজয়ন্তী। আসানসোলের আপকার গার্ডেন সর্বজনীন তাই এ বছর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। এ বার আড়ম্বর কিছুটা কম সেখানে। মণ্ডপ ও আলোকসজ্জায় খরচ কিছুটা কমিয়ে সামনের বছরের জন্য বাঁচিয়ে রাখার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এখানকার পুজোর মূল আকর্ষণ চার দিনের সাংস্কৃতিক উৎসব। পুজোর চারদিন স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গে কলকাতার শিল্পীরাও অনুষ্ঠান করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.