অটো বন্ধ অমিল বাস, ষষ্ঠীতেই নাকাল মানুষ
রকারি ঘোষণা মেনে বিকেল পাঁচটার পর থেকে কলকাতার বড় রাস্তায় অটো চলাচল বন্ধ। ভরসার সরকারি-বেসরকারি বাসও মুখ লুকিয়ে থাকায় ষষ্ঠীর দিন থেকেই চরম নাকাল হতে হল মানুষকে।
পুজোর ক’টা দিন গোটা দিনের বেলা তো বটেই, সারা রাত সরকারি বাস চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। আর পাঁচটা দিনের চেয়ে বাসের সংখ্যা বেশি থাকবে বলেও জানিয়েছেন পরিবহণ কর্তারা। কিন্তু বোধনের শুরুতে, ষষ্ঠীর দিনেই শহর ও শহরতলির রাস্তায় বাস পেতে হয়রান হতে হয়েছে যাত্রীদের। বিকালের পরে রাজপথে অটো চলাচল বন্ধ থাকায় মণ্ডপমুখী হাজার হাজার দর্শনার্থীর জন্য ‘বিকল্প’ হিসাবে বেশি সংখ্যায় বাস থাকবে বলে সরকারি প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু ভিড়ের রাস্তায় দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাসের দেখা মেলেনি। বহু মানুষ এ দিন অভিযোগ করেছেন, হাওড়া বা ধর্মতলার সরকারি বাসস্ট্যান্ড ছিল খাঁ-খাঁ।
রাজ্যের পরিবহণ কর্তারা অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের পাল্টা দাবি, অন্যান্য দিন রাস্তায় যত বাস চলে, পুজো উপলক্ষে তার চেয়ে বেশি সংখ্যায় রাস্তায় বাস থাকছে। তা হলে সে সব যাচ্ছে কোথায়? পরিবহণ দফতরের এক কর্তার দাবি, “আসলে বড় রাস্তায় অটো চলাচল বন্ধ থাকলেও যানজট কমেনি। কারণ দর্শণার্থীদের চলাচলের জায়গা করে দিতে রাস্তার অনেকখানিই দখল হয়ে গিয়েছে। ফলে ডিপো থেকে বেরোলেও বাস বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছতে অনেক বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছে। ফিরছেও অনেক দেরি করে।” ওই কর্তার কথায়, “রাজ্যে কয়েক লক্ষ অটো চলে। সরকারি, বেসরকারি বাস কখনই তার বিকল্প হতে পারে না।”
সরকারি বাসের অপেক্ষায় লাইন ধর্মতলা বাস স্ট্যান্ডে। বৃহস্পতিবার। — নিজস্ব চিত্র।
বেসরকারি বাস মালিকেরা অবশ্য বাস কম থাকার জন্য সরকারি নীতিকেই দায়ী করেছেন। কয়েক দফায় জ্বালানির দাম বাড়লেও বাসের ভাড়া বাড়ায়নি সরকার। এই ক্ষতি সামাল দিতে না পেরে অনেক বেসরকারি মালিকই বসিয়ে দিয়েছেন তাঁদের বাস। পাশাপাশি সংরক্ষণের অভাবে কমেছে সরকারি বাসও। গত এক বছরে তাই বেসরকারি এবং সরকারি দু’ধরনের বাসের সংখ্যাই কমেছে। তার প্রভাব পড়েছে পুজোর সময়ে।
বেসরকারি বাসমালিক সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটস-এর নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জ্বালানির খরচ যে হারে বেড়েছে, সেই হারে বাসের ভাড়া বাড়েনি। অর্থনীতির সাধারণ নিয়মেই তাই বাস কমেছে। সরকার ভাড়া না-বাড়ানোর গোঁ ধরে রয়েছে। খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।” মালিকদের বক্তব্য, “পুজোর দিনগুলোয় রাস্তায় লোক বেশি থাকে। অথচ বাসের সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। সরকার বেশি বাস চালানোর দাবি করলেও, অঙ্কের নিয়মেই তা সত্যি হতে পারে না।”
এই যুক্তি মানছেন পরিবহণ কর্তারাও। তাঁরা বলেছেন, পুজোয় বেশি বাস চলে, এটাই নিয়ম। কিন্তু সাধারণ ভাবেই বাসের সংখ্যা কমেছে। তাই রাস্তায় বাস কম। উদাহরণ হিসেবে এই কর্তা জানান, অন্য বছর পুজোর সময় সিএসটিসি-র অন্তত সাড়ে পাঁচশো বাস রাস্তায় নামে। এ বারে সেই সংখ্যা কমে চারশোয় গিয়ে ঠেকেছে। রাত বাড়লে সেই সংখ্যাটা আরও কমে যায়।
পুজোর কলকাতায় বাস কম থাকার জন্য পুলিশের বাস তুলে নেওয়াকেও দায়ী করছেন বেসরকারি বাস মালিকেরা। তপনবাবু বলেন, “পুজোর সময়ে বাড়তি রোজগারের সুযোগ থাকে। কিন্তু পুলিশ জোর করে অনেক জায়গায় বাস তুলে নিচ্ছে। এতে আখেরে অসুবিধেয় পড়বেন সাধারণ মানুষই।” কলকাতা পুলিশ সূত্রে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রতি বারই পুজোর সময়ে অতিরিক্ত বাহিনীকে এ দিক ও দিক নিয়ে যেতে কিছু বাস লাগে। এ বারও লাগবে। সেই মতো বাস তোলা হয়েছে। বেশি বাস তোলার প্রশ্নই নেই।”
বাস কমেছে দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটেও। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, গঙ্গারামপুর, বালুরঘাট, মালদহ-সহ অধিকাংশ রুটেই বাস চলছে হাতে গোনা। শিলিগুড়ি রুটে দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ নিগমের কোনও বাসই চলছে না বলে জানিয়েছেন এক পরিবহণ-কর্তা। রায়গঞ্জ যাওয়ার জন্য কলকাতা থেকে চলছে একটি মাত্রই বাস।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.