জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পন আইপিএল গড়াপেটা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া সত্ত্বেও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সিংহাসন ছেড়ে দেননি তিনি। এ জন্য সারা দেশের ক্রিকেট মহল তাঁর দিকে আঙুল তুললেও নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন মনে করেন, যা করেছেন, ঠিকই করেছেন। এ জন্য কোনও আফসোস নেই তাঁর। এক টিভি চ্যানেলে বসে বুধবার সাফ জানিয়ে দিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। বললেন, “যদি অন্যায় করতাম, তা হলে আমার বিবেক আমাকে বাধা দিত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।”
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ শ্রীনি যে দিন নস্যাৎ করে দিলেন, সে দিনই মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন পেশ করলেন প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট শরদ পওয়ার। তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমসিএ প্রেসিডেন্টের চেয়ারে হয়তো বসা হচ্ছে না পওয়ারের। বিজেপি নেতা গোপীনাথ মুন্ডে ১৮ অক্টোবর পওয়ারের বিরুদ্ধে লড়তে পারেন। কিন্তু যে হেতু বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর সমর্থন পওয়ারের দিকে, তাই শেষ পর্যন্ত তাঁরই জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল, ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।
পওয়ার যখন ক্রিকেট বোর্ডে ফেরার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন টিভি-সাক্ষাৎকারে শ্রীনি বলছেন, “সবার বোঝা উচিত, আমি কিন্তু গুরুনাথ নিয়ে তদন্তে নাক গলাইনি। সরে দাঁড়িয়েছিলাম। তদন্ত কমিটিও আমি গড়িনি। তখন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ছিলাম না। কমিটিটা গড়েছে ওয়ার্কিং কমিটি। আমি সেখানে উপস্থিতও ছিলাম না।”
সাক্ষাৎকারে এক সময় মেজাজও হারিয়ে ফেলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট, যখন তাঁর কাছে শ্রীসন্তকে ‘পচা ডিম’ ও গুরুনাথকে ‘ক্রিকেট অনুরাগী’ আখ্যা দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। শ্রীনি বলেন, “আমার মনে হয় ব্যাপারটা নিয়ে বড্ড বাড়াবাড়ি হচ্ছে। দু’রকম কথা কিন্তু বলিনি আমি। ঠিক কী বলেছিলাম, মনে নেই। যা খুশি বলতে পারেন আপনারা। অনেক কিছুই তো আমার সম্পর্কে বলা হয়েছে এই ক’দিনে।”
এমনও বলা হয়েছিল যে, বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন শ্রীনিবাসন। তা কতটা সত্যি, জিজ্ঞাসা করা হলে শ্রীনি বলেন, “আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাই, রাতে আমার ভালই ঘুম হচ্ছে।” তবে ১৮ অক্টোবরের পরও তাঁর রাতে ভাল ঘুম হবে কি না, সেটাই প্রশ্ন। পরিস্থিতি যা, সে দিনই মুম্বইয়ের ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে ফিরতে পারেন পওয়ার। গোপীনাথ মুন্ডে ১৫ অক্টোবর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে পারেন, এমন সম্ভাবনার কথাও ভাসছে সচিনের শহরে। পওয়ারের মনোনয়নে প্রস্তাব দিয়েছেন বর্তমান যুগ্মসচিব ডা. পি ভি শেট্টি। প্রেসিডেন্ট রবি সবন্ত তাতে ‘সেকেন্ড’ করেছেন।
সব মিলিয়ে একটা সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতে না পেতেই আরও একটা সমস্যার মুখে পড়তে চলেছেন শ্রীনিবাসন। |