নাটকীয় ম্যাচ জিতে গদিতে ফের শ্রীনিই
হেন্দ্র সিংহ ধোনি যেমন নাটকীয় ভাবে শেষ ওভারে ভারতকে অনেক অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছেন, সে রকমই অপ্রত্যাশিত মোড় থেকে ম্যাচ জিতলেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।
শ্রীনি-ধোনি জুটি আবার সরকারি ভাবে ভারতীয় ক্রিকেটের মিনারে।
সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন বলে দিল, শ্রীনি সরকারি ভাবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন। তবে কোনও ভাবেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির কাজে তিনি হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। বিচারপতি মুকুল মুদগলের নেতৃত্বে এই কমিটিকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। যত দিন না সেই রিপোর্ট জমা পড়ছে, বোর্ড আইপিএল নিয়ে এক পা-ও এগোতে পারবে না। এমনকী নিলামও করতে পারবে না।
মঙ্গলবার রাতে বোর্ডের শীর্ষস্থানীয় লোকেদের কেউ কেউ বলছিলেন, শ্রীনির নৈতিক জয় হল। কিন্তু স্কোরলাইন আদতে ১-১। আদিত্য বর্মার একটা দাবি কোর্ট মঞ্জুর করল যে, স্বাধীন তদন্ত কমিটি করতে হবে। আর একটা দাবি মঞ্জুর করল না।
রাতের খবর, শেষ মুহূর্তের খাওয়া গোলে বিচলিত না হয়ে বিরোধী পক্ষ নতুন করে বম্বে হাইকোর্টে শ্রীনির বিরুদ্ধে রিট পিটিশন করার কথা ভাবছে। উচ্চতর আদালত এক বার রায় দিয়ে দিলে কি নিম্ন আদালতে রিট পিটিশন হয়?
জনৈক বোর্ড সদস্য বললেন, “আমরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। একটা জায়গা পাওয়া গিয়েছে।”
ক্ষমতা ফেরত পেয়ে উচ্ছ্বসিত শ্রীনিবাসন এ দিন নয়াদিল্লিতে সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, “আমি দারুণ খুশি। কারণ বিসিসিআই চালানোর জন্য মাথার ওপর এক জনের দরকার ছিল।” তাঁর মাথার ওপর বসানো তদন্ত কমিটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে শ্রীনি অস্বীকার করেন। বলেন, “ওদের নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। ওটা আদালত তৈরি করেছে। আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।” তিনি অবশ্য মেনে নিয়েছেন যে, কমিটি গুরুনাথ মইয়াপ্পন, চেন্নাই সুপার কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালস নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে।
গড়বড় দেখলে দু’টো ফ্র্যাঞ্চাইজিকেই এক বছর বহিষ্কারের সুপারিশ করার এক্তিয়ার রয়েছে কমিটির। পুণে ওয়ারিয়র্স এমনিতেই আইপিএল থেকে চলে গেল। এ বার ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যদি বাকি দুই ফ্র্যাঞ্চাইজিরও ভাগ্য ঝুলে থাকে, তা হলে এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় আইপিএল-ও আশঙ্কার মধ্যে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। শ্রীনি দায়িত্বে ফিরে আসায় এমনিতেই ভারতীয় ক্রিকেটের সরকারি স্পনসর সহারা চলে গেল।
ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ বিস্মিত শ্রীনিবাসন এ ভাবে রাজ্যপাটে পুনর্বহাল হওয়ায়। বলাবলি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট তো এত দিন নানা সময়ে শ্রীনির তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রশ্ন করেছে, বোর্ড কেন বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে? নির্বাচনের আগে শ্রীনিকে জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করেছে যে, “আবার এই পদে নির্বাচিত হতে আপনার কীসের এত উৎসাহ?” আজ সেই সুপ্রিম কোর্টেই কী ভাবে শ্রীনি রেহাই পেয়ে গেলেন, সেটাই তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না!
এমনিতে বিরোধী পক্ষের লোকজন ধরেই নিয়েছিলেন, মঙ্গলবার কোনও ভাবে শুনানি হবে না। কারণ মামলা ছিল লিস্টিংয়ে ৭০ নম্বরে। দুপুরের দিকে তাঁরা হঠাৎ করে আবিষ্কার করেন, দুমদাম করে মামলাগুলোর ফয়সালা হতে হতে ৬০ নম্বরে চলে এসেছে। সবাই দ্রুত ছোটেন কোর্টে। এর পরেই কিছুক্ষণের শুনানি শেষে কোর্ট নির্দেশ দিয়ে দেয় শ্রীনিবাসনের পক্ষে।
বিরোধীরা ভেবেছিলেন, তাঁদের আবেদন মতো সর্বোচ্চ আদালত নতুন তদন্ত কমিটি গড়ার কথা বলায় মঙ্গলবারের দ্বিতীয় রাউন্ড জেতা ছিল নিছক সময়ের অপেক্ষা। তাঁদের এ-ও মনে হয়েছিল, আদালত ফের অন্তর্বর্তিকালীন প্রেসিডেন্টের হাতে বোর্ড ছেড়ে দেবে। শেষ ওভারে শ্রীনি ম্যাচ ঘুরিয়ে দেবেন কেউ ভাবতেই পারেননি।
আকস্মিক এই ধাক্কার পর তাঁদের প্রথম লক্ষ্য এখন শারদোৎসব শুরুর আগেই সম্ভব হলে রিট পিটিশন করা। শ্রীনির এখন তাতে কিছু আসে-যায় না। দোসরা জুনের চার মাস এক সপ্তাহ পর আবার তিনি সসম্মানে ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে। ধরে নিচ্ছেন অন্তত ৮ ফেব্রুয়ারি অবধি তাঁকে জ্বালানোর কেউ নেই।
অর্থাৎ মিডিয়া যত পারে লিখুক না। শত্রুরা যত পারে একজোট হোক না। তিন মাস তো আরাম পাওয়া গেল।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.