কমিটি গড়ল সরকার, কিছুটা স্বস্তিতে
রিষড়া সেবাসদনের চিকিৎসক-কর্মী
বশেষে রিষড়া সেবাসদন হাসপাতালের অচলাবস্থা কাটাতে হস্তক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। হাসপাতালের কাজকর্ম দেখার জন্য প্রশাসনিক স্তরে একটি তদারকি কমিটি (অ্যাডহক কমিটি) গড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রশাসনিক জটিলতার আবর্তে পড়ে গত পাঁচ মাস মাইনে বন্ধ ওই হাসপাতালে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সেখানকার চিকিৎসক-কর্মীরা। যদিও পুজোর মুখে এখনও বকেয়া বেতন না পাওয়ায় কিছুটা আশাহত তাঁরা।
দিন কয়েক আগে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকায় ওই তদারকি কমিটি গড়ার কথা জানানো হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক। সহ-সভাপতি স্থানীয় বিধায়ক। দুই সদস্য হিসেবে থাকবেন রিষড়ার পুরপ্রধান এবং জেলাশাসকের প্রতিনিধি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরেরও প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি কমিটির সদস্য-আহ্বায়ক। মহকুমাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, “অ্যাড হক কমিটির বৈঠক সোমবার হয়েছে। কাগজপত্র খতিয়ে দেখে স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট পাঠানো হবে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার ওই প্রতিষ্ঠানে যে অনুদান পাঠাবে, সেই টাকার দেখভাল করবে সংশ্লিষ্ট কমিটি। কয়েক দিন আগে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার হাসপাতালটির বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার ওই প্রতিষ্ঠানে ২৭ লক্ষ টাকা করে অনুদান দিত। গত বছরের নভেম্বর মাসে অনুদানের প্রথম খাতের ১৪ লক্ষ দেয় রাজ্য সরকার। এর পরে অনিয়মের অভিযোগে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় তারা। এর জেরেই হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্মীদের বেতন বাকি পড়ে যায়। কর্মীরা আন্দোলন শুরু করেন।
পরিস্থিতির চাপে কিছুদিন আগে দিলীপবাবু-সহ পরিচালন কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করেন। চেকে সই করাও বন্ধ করে দেন দিলীপবাবু। এর ফলে সমস্যা আরও বাড়ে। এত কিছু সত্ত্বেও কর্মী, চিকিৎসক এবং নার্সেরা অবশ্য পরিষেবা চালিয়ে গিয়েছেন। রোগী ভর্তি হয়েছেন। কর্মীরা চাইছেন, পুরপ্রধানের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কমিটি গঠন করে হাসপাতালটি চালানো হোক। পুরপ্রধান, তৃণমূলের শঙ্কর সাউও সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, দায়িত্ব পেলে হাসপাতাল চালানোয় পুরসভার আপত্তি নেই। তবে, আপাতত সরকার তদারকি কমিটি গঠন করে দেওয়ায় সব পক্ষই সাধুবাদ জানিয়েছে। হাসপাতালের কর্মী ভবেশ ঘোষ বলেন, “কঠি পরিস্থিতিতে আমাদের হাসি উবে গিয়েছিল। তবে সে সময়েও এখানে রোগীর পরিচর্যায় কোনও আঁচ পড়েনি। এই পরিষেবা আমরা চালিয়ে যাব। সরকার পাশে থাকলে ফের আগের জায়গায় ফিরব আমরা।”
দীর্ঘদিন ধরে ওই হাসপাতাল পরিচালনা করে পুরপ্রধানের নেতৃত্বে গঠিত প্রশাসনিক কমিটি। পদাধিকারবলে রিষড়ার তৎকালীন পুরপ্রধান, সিপিএমের দিলীপ সরকার ছিলেন ওই কমিটির সভাপতি।
রাজ্য সরকার প্রতি বছর ২৭ লক্ষ টাকা করে অনুদান দিত। ২০১০ সালে পুরভোটের পর থেকে হাসপাতাল চালানো নিয়ে গোল বাধে। ওই ভোটে হেরে রিষড়া পুরসভার ক্ষমতা বামফ্রন্টের হাত থেকে চলে যায়। হাসপাতাল-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এর পরেই কৌশলে ওই কমিটি ভেঙে পরিচালন কমিটি তৈরি করা হয়। তার সম্পাদক হন দিলীপবাবু। হাসপাতালের অচলাবস্থার জন্য দিলীপবাবুর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন কর্মীদের একাংশ।
দিলীপবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে ওই কর্মীদের বিরুদ্ধেই যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.