হিলকার্ট রোড থেকে রক্তাক্ত ও অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার হওয়া কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পরেও পুলিশ দোষীদের চিহ্নিত করতে না-পারায় শিলিগুড়ির নানা মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, তদন্তে গতি আনার চেয়েও নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন যাতে সংবাদ মাধ্যম কিংবা বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা না বলেন, তা নিশ্চিত করতেই পুলিশ বেশি তৎপর। শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন কিশোরীর পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কেউ কতা বলতে গেলে পুলিশকর্মীদের একাংশ বাধা দিচ্ছেন বলেও অনেকে ক্ষুব্ধ। ওই কিশোরীর মা জানিয়েছেন, কারও সঙ্গে কথা বলতে বারণ করেছে পুলিশ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “আমরা তদন্তের স্বার্থে ওই কিশোরীর পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলতে বারণ করেছি। তাতে তদন্তের অসুবিধা হবে।” তবে কি ধরণের অসুবিধা হবে তা তিনি বলেননি। মঙ্গলবার অবশ্য ধর্ষিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করল পুলিশ।
এদিন সকালে ওই কিশোরীর বাড়িতে যান স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও কিশোরীর বিদ্যালয়ে পড়ত সেই স্কুলের প্রতিনিধিরা। তাঁরা কিশোরীর মা ও বাবার সঙ্গে কথা বলেন। দ্রুত সমস্ত সংগঠন মিলে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারকে অপরাধীর দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে স্মারকলিপি দেবেন বলে ঠিক হয়েছে। রাজবংশি রিপ মিনিস্ট্রি, নর্থ বেঙ্গল হ্যান্ডিক্যাপ রিহ্যাবলিটেশন সোসাইটি, কনসার্ন, সিনি, ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম সহ আরও অন্যান্য সংগঠন। ব্লাড ডোনার্স ফোরামের পক্ষ থেকে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা অপরাধীর কঠোর শাস্তি চাই। তার জন্য বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে প্রস্তুত।” অন্যদিকে নর্থবেঙ্গল হ্যান্ডিক্যাপ রিহ্যাবলিটেশন সোসাইটির পক্ষ থেকে দীপ নারায়ণ তালুকদার বলেন, “আমরা কিশোরীর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। পুলিশের সঙ্গেও কথা বলব। আমাদের দাবি অপরাধীকে গ্রেফতার করতে হবে।”
তবে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কিশোরীটি ঘটনার দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ শেষবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাকার নদী পার হয়ে শিলিগুড়ি শহরে ঢুকেছিল। সঙ্গে দুজন স্থানীয় যুবক ছিল বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নদীর পাড় লাগোয়া এলাকায় রোজ মদ ও জুয়ার আসর বসে। বহুবার পুলিশকে জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলে বাসিন্দোদের অভিযোগ।
|